
অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের আড়ালে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের কর্পোরেট গ্যারান্টেড সহযোগী প্রতিষ্ঠান Autumn Loop Apparels Limited–এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার ওয়াসিউর রহমানকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের তত্ত্বাবধানে পুলিশ পরিদর্শক মো. ছায়েদুর রহমান ও তার নেতৃত্বাধীন টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার মধ্যবাড্ডা ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস শাখা (১, দিলকুশা, মতিঝিল, ঢাকা) থেকে Autumn Loop Apparels Ltd. তিনটি এলসি/সেলস কন্ট্রাক্ট গ্রহণ করে। প্রতিষ্ঠানটি ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সময়কালে আমদানির নামে পণ্য রপ্তানি করে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন (FE 1/77-BB, ১৬ এপ্রিল ১৯৭৭, Appendix 3/5) অনুযায়ী, রপ্তানির চার মাসের মধ্যে রপ্তানিমূল্য দেশে ফেরত আনার বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি তা ফেরত আনেনি।
তদন্তে আরও উঠে আসে, Autumn Loop Apparels Ltd. ইচ্ছাকৃতভাবে রপ্তানিমূল্য দেশে ফেরত না এনে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ধারা ২(ক)(২) অনুযায়ী অর্থ পাচারে লিপ্ত হয়েছে। ওয়াসিউর রহমান (৫০), পিতা এম.এ. ওয়াহিদ, মাতা বেগম নুরুন্নাহার, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। জানা গেছে, তিনি ও অন্যান্য এজাহারনামীয় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ৪(২)/৪ ধারায় মতিঝিল (ডিএমপি) থানায় মামলা নং: ১২, তারিখ: ১৭/০৯/২০২৪ খ্রিস্টাব্দে একটি মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে যা সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটে তদন্তাধীন রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ওয়াসিউর রহমানকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে তার বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। একইসঙ্গে, তিনি ও তার সহযোগীদের বিদেশে কোনো অবৈধ সম্পদ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো গ্রুপ)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চলছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি আত্মীয়স্বজনদের নামে একাধিক প্রতিষ্ঠান খুলে বিদেশে অর্থ পাচারের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন।