
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের উত্তর আমখোলা গ্রামে অর্ধশতাধিক বাবুই পাখির বাসা ও ২০টির মত ডিম বিনষ্টের ঘটনা ঘটেছে। ধানক্ষেত রক্ষার অজুহাতে বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে জৈনপুরি খানকা সংলগ্ন একটি মাদ্রাসা ও মাহাবুব মাস্টারের বাড়ির পাশে থাকা দুটি তালগাছ থেকে বাবুই পাখির বাসাগুলো ভেঙে ফেলেন স্থানীয় সিদ্দিক মোল্লা। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা চানু মোল্লার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, নিজের জমির ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় সিদ্দিক মোল্লা গাছ থেকে বাবুই পাখির ঝুলন্ত বাসাগুলো নিচে ফেলে দেন। এতে ডিম ও ছানাসহ বাসাগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাদ্রাসা ছাত্র হাবিবুর রহমান বলেন, সিদ্দিক মোল্লাকে বারবার নিষেধ করার পরও তিনি বাসাগুলো ভেঙে ফেলেছেন। বহু বছর ধরে এই গাছগুলো বাবুই পাখির নিরাপদ আশ্রয় ও প্রজননস্থল হিসেবে পরিচিত ছিল।
এদিকে প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাবুই পাখির এই নিধন ও বাসা ধ্বংসের ঘটনাকে পরিবেশবিরোধী ও দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন সচেতনত নাগরিকরা।
স্বেচ্ছাসেবী প্রাণিকল্যাণ ও পরিবেশবাদী সংগঠন Animal Lovers Of Patuakhali-ALP ও Voice For Voiceless এক যৌথ বিবৃতিতে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। সংগঠন দুটি আরও বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু একটি নিরীহ পাখির জীবন নয়, পুরো পরিবেশ ব্যবস্থার উপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই প্রশাসনের উচিত দ্রুত হস্তক্ষেপ করা।
বাবুই পাখির বাসা ভাঙর সাথে জড়িত সিদ্দিক মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গলাচিপা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাস বলেন, বন্যপ্রাণী ও পাখি নিধন একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এমন ঘটনায় পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুর রহমান জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।