Image description

ভোলা সদর উপজেলার দিঘলদী ইউনিয়নে সুমা আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত সুমা আক্তার উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পান ব্যবসায়ী মো. কামালের স্ত্রী। 

 

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকালে ওই এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, কামাল তার সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করে স্বর্ণালংকার নিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যাওয়ায় সুমা আক্তার ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে ১০ বছর বয়সি ছেলে তাহসিনকে স্কুলে দিয়ে বাসায় চলে আসেন তিনি। এর পর থেকে তিনি ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘরের মধ্যেই ছিলেন। পরে দুপুরের দিকে ছেলে তাহসিন স্কুল থেকে বাসায় এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে তার মাকে অনেক ডাকাডাকি করে। কিন্তু ঘরের দরজা না খোলায় সে পার্শ্ববর্তী চাচার বাসায় গিয়ে বিষয়টি জানালে তারা এসে জানালার ফাঁক দিয়ে দেখতে পান সুমা আক্তার ওড়না দিয়ে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

নিহতের বড় বোন সেলিনা আক্তার জানান, গত ১৪-১৫ বছর আগে ঢাকায় প্রেমের সম্পর্ক করে তার বোন সুমা আক্তারকে বিয়ে করেন মো. কামাল। তাদের সংসারে তাহসিন নামের ১০ বছর বয়সি একটা ছেলে আছে। প্রেম করে বিয়ে করার বিষয়টি প্রথমে তারা মেনে না নিলেও বোনের সুখের কথা চিন্তা করে তারা বিষয়টি মেনে নিয়েছে। বিয়ের পর থেকেই কামাল তার বোনকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি। সামান্য বিষয় নিয়েও তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতো। এমনকি বিভিন্ন সময় মারধরও করতো। গত ৬ মাস আগ থেকে তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব কঠিন আকার ধারন করে। সামান্য বিষয় নিয়েই সুমাকে তালাক দেওয়ার কথা বলতো কামাল। স্বামীর খারাপ আচরণ ও মারধরের কথা সুমা আক্তার প্রায়ই বড় বোনকে বলতো।  

সর্বশেষ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সুমা আক্তার বড় বোনকে মোবাইলে জানায়, তার স্বামী কামাল সকালে ঘরে থাকা টাকা ও তার তিন ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে তাকে না জানিয়ে চলে গেছে। 

বিষয়টি তার ছোট ভাই বিল্লাল ও বিল্লালের স্ত্রীকে জানালে তারা বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো তার সঙ্গে উপহাস করেছে। পরে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বড় বোন সেলিনা কামালকে ফোন দেয়। কামাল প্রথমে বিষয়টি স্বীকার না করলেও এক পর্যায়ে স্বীকার করে যে, তিনি স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়েছেন। কথার এক পর্যায়ে কামাল তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। বিকাল ৪টার দিকে কামাল মোবাইল করে জানায়, সুমা আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। 

সেলিনা আরও জানায়, তার বোন জামাই কামাল এর আগেও কয়েক বার তার বোনকে বাসায় রেখে অনেক দিন ধরে পালিয়ে ছিলেন। বিষয়টি তারা সে সময় এতোটা গুরুত্ব দেয়নি। কামাল তার বোনকে স্ত্রী হিসেবে কখনো শান্তি দেয়নি। এ সকল ক্ষোভ থেকেই তার বোন আত্মহত্যা করেছে।  এর জন্য কামাল ও তার ছোট ভাই বিল্লাল দায়ী। তাদের কারণেই তার বোন আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

ভোলা সদর মডেল থানার ওসি মো. হাচনাইন পারভেজ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছ। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।