Image description

বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর চিন্তা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। পাইপলাইনে থাকা বিভিন্ন সময়ে প্রতিশ্রুত ছয় বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটি। ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ শুরু করা দেশটি শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ বিনিয়োগ করেছে ছোট ছোট প্রকল্পে। তবে বর্তমানে তারা মেগা প্রকল্পগুলোয় বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ইআরডি সূত্র বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করে। ইআরডির সঙ্গে আলোচনায় তারা পাইপলাইনে থাকা ছয় বিলিয়ন ডলারের চুক্তি দ্রুত শেষ করার ব্যাপারে আলোচনা করে।

নাম প্রকাশের অনুমতি না থাকায় পরিচয় গোপন করে ইআরডির এক কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, কোরিয়ার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইআরডির বৈঠক হয়েছে। কোরিয়ায়ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। আমাদেরও একই পরিস্থিতি। বিশ্বব্যাপী ডলারের দামও বেড়ে গেছে। কোরিয়ার সঙ্গে ২০২২ সালের ফ্রেমওয়ার্কে ডলারের রেট ধরেছি ১ শতাংশ। এখন বিশ্বে কোথাও এ হার নেই।

তিনি বলেন, এখনই প্রকল্প অনুমোদন করিয়ে দিলে তারও এ অর্থ জোগান দেওয়া কঠিন। কিছু প্রকল্পে কোরিয়ান বিনিয়োগ, কিছু প্রকল্পে কোরিয়ান পদ্ধতিতে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। যেগুলোর সম্ভাব্যতা যাচাই প্রায় শেষ হয়ে আসছে, সেগুলো ম্যাচিউর অবস্থায় আছে। সেগুলো নিয়ে আমরা দ্রুত চুক্তি করব। তারা পাইপলাইনে থাকা ছয় বিলিয়ন ডলার নিয়ে আলোচনা করেছে।

কোরিয়া এখন দেশের মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা জানান, মেট্রোরেল ৪, মেট্রোরেল-৫-এ তারা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। কালুরঘাট প্রকল্পের কাজ তো ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। এছাড়া উত্তরা, মতলব, গজারিয়াসহ অনেক প্রকল্পে তারা কাজ করছে।

কোরিয়া সরকার কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করে আসছে। কোরিয়ার বেশিরভাগ ঋণই নমনীয়। শুরু থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশকে এ পর্যন্ত ২৪৮ কোটি ৯০ লাখ ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কোরিয়া। এর মধ্যে ১২৭ কোটি ডলার অর্থছাড় করেছে তারা।

বর্তমানে ২৯টি প্রকল্পে ৪৩ কোটি ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার। এর মধ্যে ৩৪ কোটি ডলারের বেশি অর্থছাড় করা সম্ভব হয়েছে। উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল, যেটি বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন। এ হাসপাতাল নির্মাণে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগ এক লাখ ৪৫ হাজার ৮৭৪ ডলার। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের বেশিরভাগ ঋণের অর্থছাড় হয়েছে। এটিও নমনীয় ঋণের আওতায়। এ প্রকল্পের ঋণের সুদের হার শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। ১৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২৫ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধের সীমা রয়েছে।

তাছাড়া সদ্য উন্নয়নকাজ চালু হওয়া কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাটে রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণ প্রকল্পে দেশটির বিনিয়োগ ১০ লাখ ছয় হাজার ডলারের বেশি। এটিও নমনীয় ঋণের প্রকল্প। এছাড়া চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি সরবরাহের একটি প্রকল্পে বিনিয়োগ এক লাখ ১৬ হাজার ডলার।