Image description
♦ মিনিকেট ও জিরাশাইল নামে চাল বিক্রি করলে ব্যবস্থা ♦ ভিন্ন নামে চাল বিক্রি করলে কারাদণ্ড ও জরিমানা ♦ ১৬ আগস্ট থেকে চালবাজিতে ব্যবস্থা

দেশের বাজারে মিনিকেট এবং নাজিরশাইল বলে কোনো ধান নেই। তবে মিনিকেট ও নাজিরশাইল নামে হরেকরকম চাল রয়েছে। প্রযুক্তিগুণে ‘ব্রি-২৮’ ও ‘ব্রি-২৯’ ধানের চালই বাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব নামে। স্থান-কাল-পাত্রভেদে একই চাল ভিন্ন ভিন্ন নামে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী বস্তাবন্দি হচ্ছে আড়তগুলোয়। নামে-বেনামে এসব চালবাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন একশ্রেণির প্রতারক ব্যবসায়ী। তবে এখন থেকে আর মিনিকেট ও জিরাশাইল নামে চাল বিক্রি করা যাবে না। এসব নামে চাল বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেবে সরকার। ধানের নামহীন এসব বেনামি চাল বাজার থেকে প্রত্যাহারে তিন ধাপের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। প্রথম ধাপে জুলাইয়ের ভিতরে মিনিকেট, জিরাশাইলসহ সব অননুমোদিত চাল বাজার থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। দ্বিতীয় ধাপে ১ থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাজার থেকে প্রত্যাহার বা পরিবর্তিত প্যাকেট বা বস্তা সম্পর্কে বাজার মনিটরিং করা হবে। এরপর ১৬ আগস্ট থেকে মিনিকেট ও জিরাশাইল নামে কোনো চাল বিক্রি করলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

খাদ্য মন্ত্রণালয় গত বছর মিনিকেট নামে চাল বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পরিপত্র জারি করে। এর আগে ২০২৩ সালে সরকার একটি বিধিমালা প্রণয়ন করে। আইনে চালের বস্তার গায়ে মিনিকেটের মতো ভিন্ন নাম লিখলে দুই বছরের কারাদ ও ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদে র বিধান রাখা হয়।

বিধিমালায় বলা হয়, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যদ্রব্য থেকে উপজাত হিসেবে প্রাপ্ত খাদ্যদ্রব্যকে ওই জাতের উপজাত হিসেবে নামকরণ (যেমন বিআর-২৮ ধান থেকে মিলিংয়ের পর প্রাপ্ত চালের নাম বিআর-২৮ চাল) করতে হবে। অন্য কোনো নামে যেমন মিনিকেট, কাজললতা, আশালতা, রাঁধুনি বা এরূপ নামে নামকরণ করে বাজারজাত করা যাবে না।

বাজারে দেখা যায়, পালকি, মান্নান, শাহরিয়ার, কাটারি রয়েল ক্রাউন, মজুমদার, সেভেন স্টার, জারা, উৎসব হাসকি, নাজির সুপার প্রিমিয়াম, নাজির প্রিমিয়াম, সম্পা কাটারি, নাজিরশাইল গ্রেড এ, নাজিরশাইল প্রিমিয়াম, নাজিরশাইল ডায়মন্ড, নাজিরশাইল মুন্সীসহ বিভিন্ন নামে নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সিরাজ, দাদা, রাজ্জাক, শামীম, মজুমদার, কাকলি, স্পেশাল, ইউনুস, ডাব, বনফুল বাঁশরি, সিয়াম, ওসমান, সায়েম, জায়েদা, শাকিল, রানা, আকিজ, তীর, নূর রহমান, এসিআই, রশিদ প্রমুখ নামে বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে ধানের প্রকৃত নামেই চাল বাজারজাত করতে হবে। এটা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা। ধান না থাকলেও মিনিকেট নামে চাল বিক্রি হচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান প্যাকেটের গায়ে মিনিকেট লেখে। এটা অপরাধ। সরকারি নীতিমালা মানছে না। প্রতিটি জেলায় ডিসিদের অননুমোদিত চাল সরবরাহ ঠেকাতে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।’