Image description

ওষুধের নির্ধারিত মূল্যের (এমআরপি) চেয়ে বেশি দাম নিলে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সংস্থাটি জানিয়েছে, বাজার তদারকিতে ওষুধের দাম নিয়ে অসঙ্গতি ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট ফার্মেসির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক জরিমানা এবং প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (২১ জুলাই) রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনার পর দগ্ধদের স্বজনদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট বিক্রেতা চড়া দামে ওষুধ বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। শুধু ওষুধ নয়, মেয়াদোত্তীর্ণ সার্জিক্যাল পণ্যও বিক্রি করা হচ্ছে অতিরিক্ত মূল্যে। গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পর দ্রুত পদক্ষেপ নেয় ভোক্তা অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ফার্মেসিতে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল ও সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর আলম।

অভিযানে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনের ৩ ফার্মেসিকে মোট ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযানে দেখা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি, বিক্রির ক্ষেত্রে ভোক্তাদের যথাযথ ক্যাশ ম্যামো প্রদান করছে না কোনো ফার্মেসিই। যেসব ওষুধের দাম বেশি নিচ্ছে, সেগুলো ক্রয়ের কোনো ক্যাশ ম্যামো নেই। যেসব ওষুধে এমআরপি লেখা নেই, সেগুলোতে নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম নেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া ক্রয় করা ওষুধ ফেরত দিতে এলে ভোক্তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণসহ নামমাত্র মূল্য ফেরত দেওয়া হয়। ওষুধের দাম লিখে গোপনে কমিশনের টাকা আত্মসাতের মতো ভোক্তা স্বার্থবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়।

এসব অপরাধে উপশম মেডিকেল হলকে ৫ হাজার টাকা, ফাতেমা ফার্মেসিকে ১০ হাজার টাকা, মেডিসিন কর্নারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ভোক্তা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, যদি কেউ এমআরপির চেয়ে বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ১৬১২১ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানান। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।

অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ‘ওষুধ মানুষের জীবন রক্ষার সঙ্গে জড়িত। এখানে এক টাকার অনিয়মও মেনে নেওয়ার মতো নয়। অনেক ফার্মেসি রোগীদের স্বজনদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করে। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। ভোক্তাদের ঠকানো কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।’

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনের ৩ ফার্মেসিকে জরিমানা করা হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান পুনরায় অনিয়মে জড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ফার্মেসি মালিকদের সতর্ক করে বলা হয়, দোকানে বিক্রি করা প্রতিটি ওষুধের প্যাকেটে ছাপানো এমআরপি অনুযায়ী দাম রাখতে হবে। এ ছাড়া পণ্যের মেয়াদ, সংরক্ষণ ও লাইসেন্স সংক্রান্ত কাগজপত্রও সঠিকভাবে রাখতে হবে।

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী, নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধের জন্য জরিমানা, পণ্য জব্দ এবং ব্যবসায়িক লাইসেন্স বাতিলের মতো ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।