Image description

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিনজন আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) কর্মস্থল থেকে তাদের গ্রেপ্তারে সহায়তা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কয়েকজন শিক্ষার্থী।

সাবেক শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তারা এজাহারভুক্ত আসামি বলেও দাবি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক।

গ্রেপ্তার হওয়া কর্মকর্তারা হলেন: রাবির সেকশন অফিসার পঙ্কজ কুমার,  অর্থ ও হিসাব শাখার উপপরিচালক আমিনুল হক ও সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাসুদ। 

সাবেক শিক্ষার্থী ও ২০১৬-১৭ সেশনের আইন বিভাগের ছাত্র আল আমিন বলেন, “আমরা রেজিস্ট্রারের কাছে এজাহারভুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানাই। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা আজ তাদের লিগ্যাল সেলে আসতে বলি। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হলে, পুলিশ এসে তাদের গ্রেপ্তার করে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, “এই তিনজন আওয়ামী লীগের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। ২০১৮ ও ২০২৩ সালের হামলার সঙ্গেও তারা জড়িত। এক বছর পার হলেও প্রশাসন ও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, তাই আমরা নিজেরাই পুলিশে সোপর্দ করেছি।”

অন্যদিকে, গ্রেপ্তার হওয়া কর্মকর্তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সেকশন অফিসার পঙ্কজ কুমার বলেন, “আমি ৫ আগস্ট বাসা থেকেই বের হইনি। কখনো শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করিনি। হঠাৎ আমাকে ধরে আনা হয়েছে, বুঝতে পারছি না কেন।”

সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, “আমি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করলেও চাকরিজীবনে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলাম না। আমি নিজেই একসময় ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম। যারা আজ আমাদের ধরেছেন, মনে হচ্ছে তারা জামায়াত-শিবিরের লোক।”

সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘জুলাই বিপ্লব চেতনা বাস্তবায়ন কমিটি’র আহ্বায়ক ও ইতিহাস বিভাগের ২০০৮-০৯ সেশনের শিক্ষার্থী মো. মুস্তফিজুর রহমান বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে মামলা থাকা সত্ত্বেও তারা জামিন না নিয়ে প্রশাসনে বহাল আছেন। আওয়ামী লীগের কোনো দোসর প্রশাসনে থাকতে পারবে না। আমরা সবখানে প্রতিবাদ করব।”

মতিহার থানার ওসি আবদুল মালেক বলেন, “তারা এজাহারভুক্ত আসামি। তাই আইনগত প্রক্রিয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “পুলিশ মামলার সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। তাই আমি পুলিশকে তাদের নিয়ে যেতে দিয়েছি। তবে সাবেক শিক্ষার্থীরা এভাবে কাউকে ধরে নিয়ে যেতে পারেন না, এটা পুলিশের দায়িত্ব।”