
দেশের টেলিকম নেটওয়ার্কের মান বাড়াতে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে টাওয়ারকো বিল্ড ফরোয়ার্ড ফোরাম।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘টাওয়ারকো বিল্ড ফরোয়ার্ড ফোরাম ২০২৫’-এ দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ভবিষ্যতের ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণে সম্মিলিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া গেলে টাওয়ারকো খাতে কৌশলগত পুঁজি এবং দেশের টেলিকম নেটওয়ার্কের মান বাড়বে।
টাওয়ারকো বিল্ড ফরোয়ার্ড ফোরামের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, ‘ইউনিফায়িং টাওয়ারকো ফর অ্যা স্মার্টার বাংলাদেশ। ’ এ ফোরামে টাওয়ার খাতে নিবন্ধিত চারটি প্রতিষ্ঠান—ইডটকো বাংলাদেশ, সামিট টাওয়ারস, ফ্রন্টিয়ার টাওয়ারস এবং এটিসি টাওয়ার অংশ নেয়। ফোরাম থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে নতুন সংগঠন ‘বাংলাদেশ টাওয়ারকো অ্যাসোসিয়েশন'।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন টাওয়ারকো লাইসেন্স পাওয়া চার প্রতিষ্ঠান— ইডটকো বাংলাদেশ, সামিট টাওয়ারস, ফ্রন্টিয়ার টাওয়ারস এবং এটিসি টাওয়ারের শীর্ষ নির্বাহীরা। আলোচনায় তারা এ খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ অগ্রাধিকারের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতির মূল চালক টেলিযোগাযোগ শিল্প। সম্মিলিত ও খাতগুলোর মধ্যে সহযোগিতা এ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যায়, তাই এক্ষেত্রে প্রয়োজন সমন্বয় ও সহযোগিতা।
তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড কানেকটিভিটি সার্ভিস প্রোভাইডার (এনআইসিএসপি) নীতিমালার মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে আমরা ব্যবসার নতুন সম্ভাবনা দরজা খুলছি। বিদ্যমান শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মদক্ষতার সূচক নির্ধারণ ও পর্যবেক্ষণকেই আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।
বিটিআরসির নতুন লাইসেন্সিং প্রকল্প ও প্রস্তাবিত এনআইসিএসপি কাঠামোকে সময়োপযোগী ও অগ্রগামী উদ্যোগ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন টেলিকম খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা। তারা বলেন, এটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দক্ষ অবকাঠামো গঠনে সহায়ক হবে। তবে নীতির স্বচ্ছতা ও বাস্তবায়নে এখনও জটিলতা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সাইট অধিগ্রহণে জটিলতা, টেকসই জ্বালানি ব্যবহার, ডিএএস ও আইবিএস সল্যুশনের বৈষম্য, ইনডোর কভারেজের ঘাটতি এবং ব্যাটারি চুরির মতো দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জগুলো দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান বক্তারা। তারা একীভূত মানদণ্ড, সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় এবং টেকসই সল্যুশনে বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইডটকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল আইজ্যাক বলেন, এখন বিনিয়োগকারীরা বাজারের নিশ্চয়তা, পলিসি প্রেডিক্টিবিলিটি, সর্বোপরি ইকোসিস্টেমের সামঞ্জস্যতার দিকে নজর দিচ্ছেন। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া গেলে টাওয়ারকো খাতে কৌশলগত পুঁজি এবং দেশের টেলিকম নেটওয়ার্কের মান বাড়বে। একইসাথে সার্বিক ডিজিটাল সুবিধাপ্রাপ্তি বা সেবা ব্যবহারের খরচ কমবে।
ফ্রন্টিয়ার টাওয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সিরাজুস সালেহীন বলেন, টাওয়ার অধিগ্রহণ ও নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহসহ এ খাতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ক্ষেত্রে টাওয়ারকো অ্যাসোসিয়েশন একটি সময়োপযোগী প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে।
বাংলাদেশের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার উদ্দেশ্যে সংস্কারমুখী, বিনিয়োগবান্ধব ও উদ্ভাবনী টাওয়ার ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে ‘টাওয়ারকো বিল্ড ফোরাম ২০২৫’-এ যৌথ অঙ্গীকার ঘোষণা করেন খাতসংশ্লিষ্টরা।