Image description
 

ভবিষ্যতের আকাশযুদ্ধের দৃশ্যপট বদলে দিতে পারে একটি বিশেষ ড্রোন—নাম তার XQ-58 ভ্যালকিরি। এটি এমন এক স্মার্ট কমব্যাট ড্রোন, যা ফাইটার জেটের সঙ্গে উড়ে মিশন সম্পন্ন করতে পারে। কম খরচে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন এই ড্রোন হয়তো ৫ বছরের মধ্যেই মানবচালিত যুদ্ধবিমানের বিকল্প হয়ে উঠবে।

XQ-58 ভ্যালকিরি কী?
Kratos Defence দ্বারা তৈরি এই ড্রোনটি সম্পূর্ণভাবে মানববিহীন। এর মূল উদ্দেশ্য হল ফাইটার জেটের "সহচর" হিসেবে কাজ করা, বিশেষ করে F-35 বা F-16-এর পাশে উড়ে সমর্থন জোগানো। বোমা, মিসাইল কিংবা নজরদারির যন্ত্র বহন করতে সক্ষম এই ড্রোনটিকে এখন পরীক্ষা করছে মার্কিন বিমানবাহিনী ও মেরিন কর্পস।

গতি ও পাল্লা
ভ্যালকিরি একটানা প্রায় ৪,৮০০ কিমি (৩,০০০ মাইল) উড়তে পারে রিফুয়েল ছাড়াই। গতি প্রায় ১,০৪৬ কিমি/ঘণ্টা (মাচ ০.৭২)—যা এটিকে দীর্ঘ দূরত্বের মিশনের জন্য আদর্শ করে তোলে।

 

মূল্য ও উৎপাদন
প্রতি ভ্যালকিরির দাম এখন ৪ থেকে ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে বছরে ১০০টির বেশি তৈরি হলে, দাম কমে দাঁড়াতে পারে মাত্র ২ মিলিয়নে। তুলনায় এটি একটি প্রচলিত ফাইটার জেটের খরচের অনেকটাই কম।

 

কীভাবে কাজ করে?
ভ্যালকিরি ট্রেলারের উপর থেকে রকেট দিয়ে উৎক্ষেপণ করা যায়, আবার বিশেষ ট্রলির সাহায্যে রানওয়ে থেকেও উড়তে পারে। এটি প্যারাস্যুটে নেমে আসে, অর্থাৎ এটি ল্যান্ডিং গিয়ারের প্রয়োজন পড়ে না। AI প্রযুক্তির সাহায্যে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিশন অনুসরণ করতে পারে কিংবা পাইলটের কমান্ডেও পরিচালিত হতে পারে।

এর ক্ষমতা কতটা?
ড্রোনটি তার ভেতরের বগি ও ডানায় বোমা, মিসাইল বা সেন্সর বহন করতে পারে। এটি শত্রুর অবস্থান চিহ্নিত করা, সিগন্যাল জ্যাম করা কিংবা সরাসরি আক্রমণ চালানোর ক্ষমতা রাখে। এটি "অ্যাট্রিটেবল" ডিজাইনের—মানে, যদি নষ্টও হয়, তবুও সেটিকে হারানোর আর্থিক বোঝা অনেক কম।

ফাইটার জেটের বিকল্প?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ড্রোন ভবিষ্যতে অনেক মানবচালিত যুদ্ধবিমানের দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে, যার ফলে পাইলটদের ঝুঁকি কমবে। F-35 ও F-16 ইতিমধ্যে সফলভাবে ভ্যালকিরিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে আকাশে, যা ম্যানড ও আনম্যানড প্ল্যাটফর্মের যৌথ সক্ষমতা প্রমাণ করে।

আকাশযুদ্ধের ভবিষ্যৎ
কম খরচ, দূরপাল্লার ক্ষমতা এবং AI দ্বারা চালিত হয়ে, XQ-58 ভ্যালকিরি ভবিষ্যতের যুদ্ধবিমানের সংজ্ঞাই বদলে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই এ ধরনের প্রযুক্তিতে বড় বিনিয়োগ করছে, যা আগামী দিনের যুদ্ধকে আরও কৌশলী ও প্রযুক্তিনির্ভর করে তুলবে।

চোখ রাখুন, কারণ ভবিষ্যতের আকাশে হয়তো মানুষের বদলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ডানাই হয়ে উঠবে সবচেয়ে বড় শক্তি।