
বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক পর্যায়ে শুল্ক নির্ধারণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
সোমবার (১৪ জুলাই) মার্কিন শুল্ক নিয়ে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্কহার শূন্য করার বিষয়ে আলোচনা চলছে, এখনো সরকার আশাবাদী। পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তৃতীয় পর্যায়ের নেগোসিয়েশনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই আবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি যুক্তরাষ্ট্র একটি যৌক্তিক শুল্কহার নির্ধারণ করবে। বাংলাদেশও তার সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতা বজায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে বলে আমরা আশাবাদী।
উপদেষ্টা আরও জানান, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এ বিষয়ে একটি নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট (গোপনীয়তা চুক্তি) রয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্র কী দাবি করেছে বা আলোচনায় কী বিষয় উঠে এসেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানানো সম্ভব নয়।
শুল্ক আলোচনাবিষয়ক দ্বিতীয় দফার শেষ দিন ছিল ১১ জুলাই। আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে।
এ সময় বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, শুল্ক আরোপ বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের অভিঘাত হতে পারে। এ কারণে সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকে বিষয়টি মোকাবিলায় কাজ করছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং তাদের মতামত গ্রহণ করেছি। আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। ভবিষ্যতে যে কোনো ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাব।
ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিকেএমইএর সভাপতি মো. হাতেম বলেন, সরকার অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্যারিফ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত যে আলোচনা হয়েছে এবং যেভাবে সরকার আমাদের অবহিত করেছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট।
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর পারস্পরিক (রিসিপ্রোকাল) শুল্ক আরোপ করে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ববাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিলে, ৭ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ওই শুল্ক কার্যকারিতা ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রাখে। পরে ৮ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এ নতুন শুল্কহার ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।