
রাজধানীর মিটফোর্ডে সোহাগ নামে এক যুবককে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় গোটা দেশ যখন শোক ও ক্ষোভে উত্তাল, ঠিক তখন রাজধানীর ওয়ারীতে একই রকম আরেকটি হত্যাচেষ্টা রুখে দিল সচেতন জনতা ও এক দায়িত্বশীল ট্রাফিক সার্জেন্ট।
রোববার (১৩ জুলাই) রাত ৯টার দিকে ওয়ারীর হাটখোলা রোডের ইলিশিয়াল ভবনের পেছনের গলিতে এক কিশোরের ওপর হামলা চালায় ৬-৭ জনের একটি দল। তারা ১৭ বছর বয়সী সৈয়দ রেদোয়ান মাওলানাকে হেলমেট ও ইট দিয়ে মারধর করতে থাকে।
সোহাগ হত্যাকাণ্ডের হৃদয়বিদারক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। জনাকীর্ণ এলাকায় প্রকাশ্যে পাথর নিক্ষেপ করে এক যুবককে হত্যা করলেও কেউ এগিয়ে না আসার বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে ১৭ বছর বয়সী কিশোর সৈয়দ রেদোয়ান মাওলানাকে ঘিরে ধরে মারধর করতে থাকে ৬ থেকে ৭ জনের একটি দল।
হামলাকারীরা রেদোয়ানের মাথায় মোটরসাইকেলের হেলমেট দিয়ে একের পর এক আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করতে উদ্যত হলে সেখানে উপস্থিত স্থানীয় অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জন সাধারণ মানুষ এবং দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট দ্রুত এগিয়ে এসে এ বর্বরতা প্রতিহত করেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, আটক দুই যুবককে লক্ষ্য করে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছে, তোদের মতো লোকদের কারণেই দেশটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তোদের আর ছাড় নেই।
ঘটনাস্থলেই দুই হামলাকারী আব্দুর রহিম মাহি (১৯) ও সাব্বির হোসেন রাতুলকে (১৯) আটক করে পুলিশ, বাকি হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
ওয়ারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জাকারিয়া খান জানান, আটক দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তাদের দাবি, তারা শিক্ষার্থী এবং যাত্রাবাড়ী এলাকায় বসবাস করেন।
এ বিষয়ে ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল আহমেদ জানান, হামলাকারী শিক্ষার্থী বলছে, আহত ছেলেটিও শিক্ষার্থী। তারা পূর্বপরিচিত ছিল কি না কিংবা ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা ছিল কি না—সবকিছু তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এবার জনতা আর নীরব ছিল না। সবাই মিলে প্রতিরোধ করেছে।
শীর্ষনিউজ