
ইয়েমেনের রাজধানী সানায় ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন ভারতের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবুবকর আহমদ।
কেরালার ৩৭ বছর বয়সী এই নার্স ইয়েমেনে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হন। তবে তার আইনজীবীরা দাবি করছেন, ঘটনার পেছনে ছিল শারীরিক নির্যাতন ও চরম মানসিক চাপ, এবং এটি ছিল একটি দুর্ঘটনা।
এই প্রেক্ষাপটে ভারতের প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবুবকর আহমদ ইয়েমেনের প্রভাবশালী আলেম শেখ ওমর বিন হাফিজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি নিহত ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দুল মেহদির পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় মধ্যস্থতা করার অনুরোধ জানান।
পরে শেখ ওমর তার ছাত্রদের পাঠিয়ে নিহতের পরিবারের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেন। আলোচনার ফলস্বরূপ, পরিবারটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় চার ঘণ্টার জন্য স্থগিত রাখতে সম্মত হয়, যাতে আইনজীবীরা নতুনভাবে চেষ্টা চালাতে পারেন।
কে এই ভারতের গ্র্যান্ড মুফতি?
‘গ্র্যান্ড মুফতি অব ইন্ডিয়া’ উপাধিটি ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইসলামি ফিকহ বিশেষজ্ঞদের একজনকে দেওয়া হয়। যদিও অনেক মুসলিম প্রধান দেশে এ পদটি সরকারি স্বীকৃতিসম্পন্ন, ভারতে এটি মূলত অনানুষ্ঠানিক এবং ধর্মীয় মহলে সম্মানজনক অবস্থান হিসেবে বিবেচিত।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির রামলিলা ময়দানে অল ইন্ডিয়া তানজিম উলামায়ে ইসলাম-এর এক সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ আবুবকর আহমদকে গ্র্যান্ড মুফতি ঘোষণা করা হয়। তিনি ভারতের সুন্নি (ব্রেলভি) মুসলিম সম্প্রদায়ের দশম গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে পরিচিত।
কে এই শেখ আবুবকর আহমদ?
শেখ আবুবকর আহমদ, যিনি কান্থাপুরম এপি আবুবকর মুসালিয়ার নামেও পরিচিত, কেরালার কোঝিকোড জেলার বাসিন্দা। দক্ষিণ এশিয়া ও আরব বিশ্বে তিনি একজন সুপরিচিত ইসলামি চিন্তাবিদ।
তিনি কেরালায় অবস্থিত ‘মারকাজ নলেজ সিটি’র প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। সেখানে চিকিৎসা, আইন ও ধর্মীয় শিক্ষার জন্য আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একইসাথে তিনি দেশি-বিদেশি বহু ইসলামি পরিষদের সদস্য এবং প্রবাসী মুসলিমদের বিভিন্ন আয়োজনে নিয়মিত বক্তৃতা দিতে যান।
ধর্মীয় ও সামাজিক বিষয়ে বিশেষত ব্রেলভি মতাদর্শের মুসলমানদের মাঝে ফতোয়া প্রদানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তবে বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বিতর্কিত মন্তব্যের জন্যও আলোচনায় এসেছেন তিনি। ২০১৯-২০ সালের নাগরিকত্ব আইনবিরোধী (CAA) আন্দোলনের সময় তিনি নারীদের রাস্তার বিক্ষোভে অংশ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘এই দায়িত্ব পুরুষরাই পালন করবে।’
সূত্র: এনডিটিভি।