
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কক্সবাজারে বিএনপি নেতা রহিম উদ্দিন সিকদারের নিহত ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ড. জাহেদ আরমানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) গভীর রাতে সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নের মশরফ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এই ভাঙচুর-লুটপাটে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান সিকদার। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ড. জাহেদ আরমান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ড. জাহেদ আরমানের বাবা ৭৯ বছর বয়সী মাহফুজুর রহমান, যিনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি অপারেশন শেষে দেশে ফিরেছেন। এ ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন। এসময় তিনিসহ পরিবারের বাকি সদস্যরা কোনোরকম প্রাণ নিয়ে বাড়ি ছাড়েন। পরে অভিযুক্ত বিএনপির ৮-১০ জন নেতা-কর্মী ঘরে ঢুকে বাড়ি ভাঙচুর করে এবং ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ, এয়ার ফ্রায়ার, ল্যাপটপ এবং নগদ ১০ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ঘটনার দুই দিন আগে পার্শ্ববর্তী এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ড ঘটে। তবে ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, তারা এই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। তবুও শফিকুর রহমান সিকদার ওই মিথ্যা মামলায় তাদের ফাঁসানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
ড. জাহেদ আরমান বলেন, আমার পরিবার কোনো অপরাধে জড়িত নই। আমাদের ওপর হামলা হয়েছে, এখন আবার মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে ড. জাহেদ আরমান বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের সূত্র ধরে যে একজন নিহত হয়েছে তাতে আমার পরিবারের কেউ জড়িত নয়। আমি মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আমার আব্বু দীর্ঘ এক মাস ধরে অসুস্থ। আমেরিকাতে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে তিনি কয়েকদিন আগে দেশে যান। উনার পিত্তনালীতে স্টেন্ট বসানো হয়েছে। ঠিকভাবে কথাও বলতে পারেন না। এমতাবস্থায় কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়া পূর্ব শত্রুতার জের ধরে যদি আমার পরিবারের কাউকে এতে জড়ানো হয়। আমি আগেই বলেছিলাম, ভারুয়াখালীতে এই তৃণমূল বিএনপির নামে যারা আছে তারা কেউ উপরের আদেশ মানে না, নেতাদের আদেশ মানে না।
আরেক স্ট্যাটাসে ড. জাহেদ আরমান বলেন, সন্ত্রাসী শফিক রহমানের ভাড়া করা গুন্ডারা রাতে হামলা চালিয়েছে। তারা আমার পৈত্রিক বাড়িতে হামলা চালিয়ে জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে, জমির দলিলাদি ছিঁড়ে ফেলেছে, দামি আসবাবপত্র গাড়িতে (টমটম) উঠিয়ে নিয়ে গেছে। রাত আনুমানিক ২টা থেকে ৪টার মধ্যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। হামলাকারীরা মুখোশ পরিহিত ছিল। তাদেরকে আরেক সন্ত্রাসীর মাধ্যমে শফিক ভাড়া করে নিয়ে এসেছে বলে জানা গেছে।