
সব রাজনৈতিক দলের সম্মতি মিললে আগামী ৫ আগস্ট ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করতে চায় সরকার। এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া। শুক্রবার (১১ জুলাই) কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দিনি এ কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রস্তাবনা চাওয়া হয়েছিল। তারা নিজেদের মতো করে কপি দিয়েছে। এখন সেই খসড়াগুলো নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনার চেষ্টা চলছে। আমরা চাই ৫ আগস্টের মধ্যে এটি প্রকাশ করা হোক, তবে তার আগে দরকার সর্বদলীয় ঐক্যমত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘোষণাপত্র শুধু সরকারের একতরফা কোনো বক্তব্য নয়। বরং এটা একটি ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক চিন্তার প্রতিফলন হবে—এমনটাই চায় সবাই।’
এর আগে বিকেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত মঞ্চে ‘গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার প্রথম প্রতিরোধ দিবস—১১ জুলাই’ উপলক্ষে স্মৃতিমিনার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আসিফ মাহমুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১১ জুলাই যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, তা সারাদেশের আন্দোলনকারীদের সাহস যুগিয়েছিল। আজকের এই দিনে (১১ জুলাই) আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেয় স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার। সেই সহিংসতার সূচনা হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। বিকেল তিনটার দিকে শাহবাগে আমাদের কর্মসূচি ছিল এবং একই সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি চলছিল। আমরা যখন শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করি, তখনই খবর আসে-কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা হয়েছে। এই খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং কেউ বিচলিত না হয়ে বরং আরও ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। সারাদেশের আরও বেশি মানুষ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা সেদিন শুধু ব্লকেড কর্মসূচি সফল করেননি, রাত ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন। আপনাদের সেই সাহসিকতা ও প্রতিরোধ কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারা দেশে নতুন আশা ও সাহস সৃষ্টি করেছিল। আমরা যে বলতাম-‘বাঁধা দিলে বাধবে লড়াই’, আপনারাই তার প্রমাণ দিয়েছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আন্দোলন আরও বেগবান হয় এবং স্বৈরাচারী হাসিনার শাসন থেকে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি পায়।’