Image description
বলসোনারোর বিচার নিয়ে ক্ষোভ

ব্রাজিলের রফতানি পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুল্ক বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও কট্টর ডানপন্থি নেতা জাইর বলসোনারোর ফৌজদারি বিচারের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, ট্রাম্প বিদেশি বাণিজ্য অংশীদারদের জন্য শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে চিঠি প্রকাশ করা শুরু করেছেন। এরই মধ্যে প্রায় দুই ডজন দেশের নাম ঘোষণা করেছেন তিনি। কিন্তু বুধবার (৯ জুলাই) ঘোষিত চিঠিগুলোর মধ্যে একটি ছিল বাকিগুলোর থেকে আলাদা। বেশিরভাগ চিঠিই কার্যত একই রকম হলেও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাকে লেখা ট্রাম্পের চিঠিটির দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টতই বেশি ‘ব্যক্তিগত এবং আরও সংঘাতমূলক’। ট্রাম্প লিখেছেন, ‘অবাধ নির্বাচন ও আমেরিকানদের মৌলিক বাক স্বাধীনতার অধিকারের উপর ব্রাজিলের চরম আক্রমণের কারণে, তিনি ব্রাজিলকে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা যেকোনো পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ কর আরোপ করবেন, যা বিদ্যমান শুল্ক থেকে আলাদা।’

লুলার সাথে ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান বিরোধের মধ্যে এই চিঠিটি ব্রাজিলের প্রতি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আক্রমণ হিসাবে দেখা হচ্ছে। এর মধ্যদিয়ে ট্রাম্প মূলত ব্রাজিল সরকারকে তার রাজনৈতিক মিত্র জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে আনা ফৌজদারি অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। ট্রাম্প তার সবশেষ ‘ট্যারিফ লেটার’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে বলেন, ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ‘আক্রমণ’ চালাচ্ছে এবং বলসোনারোর বিরুদ্ধে যে বিচার চলছে, তা ‘উইচ হান্ট’ বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।

চিঠিতে ট্রাম্প বলেন, বর্তমান ব্রাজিল সরকারের ‘ভয়ানক অবিচার’ সংশোধনের জন্যই এই শুল্ক জরুরি। তিনি আরও বলেন, তিনি মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়কে ব্রাজিলের ডিজিটাল বাণিজ্য চর্চার বিরুদ্ধে তদন্ত (সেকশন ৩০১) শুরুর নির্দেশ দেবেন। এটি একটি আইনগত প্রক্রিয়া, যার আওতায় অতীতে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক বসানো হয়েছে। ট্রাম্পের ভাষায়, ‘বলসোনারোর বিরুদ্ধে চলমান বিচার ‘আন্তর্জাতিক লজ্জা’। তিনি আরও বলেন, আমি তাকে (বলসোনারোকে) অত্যন্ত সম্মান করি।’ ‘ব্রাজিলের ট্রাম্প’ খ্যাত সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলসোনারো ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এক মেয়াদের জন্য ব্রাজিল শাসন করেন।

ট্রাম্পের মতো বলসোনারোও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী লুলার কাছে পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। ট্রাম্পের মতো তিনিও ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ব্রাজিলে ২০২৩ সালের জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লুলা জয়ী হলেও বলসোনারো তা মেনে নিতে অস্বীকার করায় দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, বলসোনারো সেই সহিংসতার পেছনে মদত দিয়ে ভোটের ফলাফল উল্পে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এসব অভিযোগে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হয় যা এখনও চলমান রয়েছে। বলসোনারো এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।