
কক্সবাজারের হিমছড়িতে সাগরে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হলেও সন্ধান মেলেনি একজনের। অরিত্র হাসানের লাশ এখনো পাওয়া যায়নি।
গতকাল সকাল সাতটার দিকে কক্সবাজার শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরের হিমছড়ি সৈকত এলাকায় সাগরে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিন শিক্ষার্থী। পরে সকালে সাড়ে নয়টার দিকে কে এম সাদমান রহমানের লাশ ভেসে আসে। আরেক নিখোঁজ শিক্ষার্থী আসিফ আহমদের লাশ আজ সাড়ে ৮ টার দিকে কক্সবাজার পৌরসভার নাজিরারটেক সৈকত থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে প্রায় একদিন পার হলেও নিখোঁজ রয়েছেন অরিত্র হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থী।
নিহত সাদমান ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা কে এম আনিছুর রহমানের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলে থাকতেন। নিহত আসিফ বগুড়া সদরের নারুলি দক্ষিণের বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের ছেলে। দুজনই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগ ও আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ছিলেন। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ বগুড়ার দক্ষিণ সনসনিয়া গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে অরিত্র হাসান (২২)। তাকে উদ্ধারে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সি সেফ লাইফ গার্ড, জেলা প্রশাসনের সৈকতকর্মী, ফায়ার সার্ভিস ও পর্যটন পুলিশের সদস্যরা।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) গাজী আতাউর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১জনের লাশ আজ সকালে পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সমিতিপাড়াস্থ সৈকতে পাশে বেসে উঠেছে। বাকি ১ জনের লাশ এখনও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। সাগরে বর্তমানে লঘুচাপের প্রভাবে স্রোত অস্বাভাবিকভাবে প্রবল। তাই ডুবুরি দল সাগরে নামতে পারেনি। কিন্তু আমাদের উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার্থীর খোঁজে পুলিশের পাশাপাশি, ডুবুরি, ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগে থেকেই লাল পতাকা টানিয়ে সমুদ্রে নামার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক পর্যটকরা নির্দেশনা উপেক্ষা করে সাগরে নামছেন।
পর্যটন পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আপেল মাহমুদ বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ যেন গোসলে নামতে না পারে, সে বিষয়ে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে এবং নিখোঁজ আরও এক শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
সাগরে গোসলে নেমে মৃত্যুর ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত মাসেও ছয়জনের মৃত্যু হয়। সি সেফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার সিফাত সাইফুল্লাহ বলেন, কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সৈকতে গোসলে নেমে কেউ নিখোঁজ হলে উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য ২৬ জন লাইফ গার্ড রয়েছেন। তবে হিমছড়ি, দরিয়ানগর, ইনানীসহ বাকি ১১৫ কিলোমিটার সৈকতে গোসলে নেমে কেউ নিখোঁজ হলে উদ্ধার তৎপরতা চালানোর মতো সেখানে কেউ নেই।