
লালনগীতির জনপ্রিয় শিল্পী ফরিদা পারভীন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। তার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ভুয়া খবর না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে তার পরিবার। মঙ্গলবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ এই শিল্পীর মৃত্যুর খবর দিয়েছেন। তা সত্য নয় বলে জানিয়েছেন ফরিদা পারভীনের স্বামী বাঁশিবাদক গাজী আবদুল হাকিম।
তিনি বলেন, এ ধরনের বিভ্রান্তিকর খবর কারা ছড়াচ্ছে জানি না। ফরিদা পারভীন অসুস্থ, এটা ঠিক আছে। কিন্তু মারা যাননি। তিনি বলেন, তার (ফরিদা পারভীন) অবস্থা গতকালের চেয়ে একটু ভালো। তবে তা হিসেবে ধরার মতো নয়। বেশ কিছুদিন তিনি কথাবার্তা বলতে পারছেন না। গতকাল তার ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে।
ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে একটু ভালো বলে জানিয়েছেন নজরুলসংগীতশিল্পী বিজন মিস্ত্রী। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, সবাইকে বিনীত অনুরোধ, কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন আপা এখন একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। তার শরীরের অবস্থা আগের চেয়ে একটু ভালো। আমি হাসপাতালের সামনে আছি। সবাই আপার জন্য প্রার্থনা করবেন যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেন। কেউ ফেক নিউজ দেবেন না প্লিজ।
৭১ বছর বয়সী ফরিদা পারভীন শুধু কিডনি সমস্যা নয়, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে। মাঝেমাধ্যেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয় তাকে। সোমবার তার স্বামী বাঁশিবাদক গাজী আবদুল হাকিম গণমাধ্যমকে বলেছেন, ফরিদা পারভীনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পর রবিবার থেকে তাকে সাধারণ কেবিনে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে লালনের গানের এই শিল্পীর চিকিৎসায় সরকারের তরফ থেকে আর্থিক সহযোগিতার প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তার পরিবার জানিয়েছে টাকা-পয়সা নয়, শিল্পীর চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা প্রয়োজন আছে তাদের। নজরুল সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান শুরুর পর লালনসংগীত দিয়ে শ্রোতাদের কাছে পরিচিতি পান ফরিদা পারভীন।
সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে তিনি লালনসংগীতের তালিম নেন। সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন। ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার পান তিনি।