Image description
যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চান পলাতক নেতারা, নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারও

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশ ছেড়েছিলেন নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কয়েক শ নেতা-কর্মী। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে তারা প্রথমে পাড়ি জমান ভারতে। এরপর কেউ চলে গেছেন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। যারা সুযোগ পাননি তারা রয়ে গেছেন ভারতেই। এর মধ্যে পলাতক প্রায় অর্ধশত নেতা বর্তমানে অবস্থান করছেন যুক্তরাজ্যে। কেউ কেউ পরিবারও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। দেশে ফেরা অনিশ্চিত ভেবে বেশির ভাগ নেতা যুক্তরাজ্যে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ চেয়ে আবেদন করেছেন।

সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার দিন বিকালে সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা ভারতে পাড়ি জমান। পরে বৈধ পথে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় কয়েক শ নেতা-কর্মী গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে চলে যান। প্রথমে তারা আশ্রয় নেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে। এরপর কেউ কেউ চলে যান কলকাতায়। কিছুদিন ভারতে অবস্থান করে অনেকে বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিতে থাকেন। এর মধ্যে বেশির ভাগ নেতার ভিসা থাকায় পছন্দের গন্তব্য হয়ে ওঠে যুক্তরাজ্য। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত সিলেট আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতা অবস্থান করছেন।

যারা ভারত হয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিসিকের অপসারিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি রণজিৎ সরকার, মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক সালেহ আহমদ সেলিম, সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা শাখার তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোবাশ্বির আলী, আওয়ামী লীগ নেতা আফছর আহমদ, জাহিদ সারওয়ার সবুজ, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ হান্নান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিরণ মাহমুদ নিপু, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাহির, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাব্বির আহমদ, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার অপসারিত মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের অপসারিত ভাইস চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা সামস উদ্দীন ও এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব। এর মধ্যে ৫ আগস্ট শফিকুর রহমান চৌধুরী, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, আজাদুর রহমান আজাদ, বিধান কুমার সাহা, অ্যাডভোকেট রণজিৎ সরকার, অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ সেলিম, মোবাশ্বির আলী, দেবাংশু দাস মিঠুসহ কয়েকজনের বাসা ও অফিসে কয়েক দফা হামলা, ভাঙচুর, লুট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। হামলা ও অগ্নিসংযোগের পর বাসাবাড়ি তালা দিয়ে এসব নেতার পরিবারের সদস্যরাও নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।

যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত এক নেতা জানান, ৫ আগস্টের পর যারা যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন তাদের প্রায় সবার অবস্থানকালীন সময় ছয় মাসের বেশি হয়েছে। যেহেতু এখনই দেশে ফেরার মতো কোনো পরিবেশ নেই, তাই প্রায় সবাই যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। তবে কিছু কিছু নেতা আগে থেকেই যুক্তরাজ্যের নাগরিক হওয়ায় তাদের ‘অ্যাসাইলাম’ আবেদনের প্রয়োজন পড়ছে না।