Image description
ডিসি-এসপির কমিটি ও ইভিএম বাদ, রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম ও প্রভাবাধীন প্রতিষ্ঠানে ভোট কেন্দ্র নয়

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোট কেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালার গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। নতুন ভোট কেন্দ্র স্থাপন নীতিমালায় ডিসি-এসপির কর্তৃত্ব বাদ দিয়ে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গড়ে ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্র ও গড়ে ৫০০ জন পুরুষ ভোটার এবং ৪০০ জন নারী ভোটারের জন্য একটি কক্ষ নির্ধারণের বিধান রাখা হয়েছে। কোনো এলাকায় ভোটার সংখ্যা বেশি হলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি/রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে নতুনভাবে কেন্দ্র স্থাপনের বিধানও রয়েছে এ নীতিমালায়। গত ২৬ জুন নতুন এই নীতিমালার গেজেট প্রকাশ করেছে ইসি। ভোট কেন্দ্র স্থাপনে নির্বাচন কর্মকর্তাদের একক ক্ষমতা রাখা হয়েছে। এবারের নীতিমালায় মহানগর, জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ের প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ভোট কেন্দ্র স্থাপন কমিটি রাখা হয়নি। পাশাপাশি বাদ দেওয়া হয়েছে ইভিএমে ভোট দেওয়ার জন্য কক্ষ নির্ধারণের বিষয়টি। ২০২৩ সালের ভোট কেন্দ্র নীতিমালায় ভোট কেন্দ্র নির্ধারণের ক্ষেত্রে ডিসি ও এসপিদের সমন্বয়ে একটি জেলা কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন। এ কমিটির মাধ্যমেই ভোট কেন্দ্র স্থান নির্ধারণ ও পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। তবে এই কমিটিগুলোর নিরপেক্ষতা ও রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বর্তমান ইসি ভোট কেন্দ্র স্থাপন নীতিমালায় ডিসি-এসপির কর্তৃত্ব বাদ দিয়ে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রেখেছে।

অন্যদিকে কোনো প্রার্থীর প্রভাবাধীন স্থানে ভোট কেন্দ্র স্থাপন না করার নির্দেশনা রয়েছে নীতিমালায়। একইভাবে রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানেও ভোট কেন্দ্র স্থাপন না করার বিধান রাখা হয়েছে। তবে বিকল্প কোনো প্রতিষ্ঠান না থাকলে এই শর্ত শিখিল করা যাবে। ভোট কেন্দ্রে যাতায়াতের সুবিধা ও অবস্থানের বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভোটার এলাকাগুলো যেন ভোট কেন্দ্রের সংলগ্ন ও সুনিবিড় হয় এবং দুটি কেন্দ্রের মধ্যে দূরত্ব ৩ কিলোমিটারের বেশি না হয়।

এর আগে গত ২১ মে ইসির পঞ্চম কমিশন সভায় এ নীতিমালা অনুমোদন করে নির্বাচন কমিশন। ওইদিন সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা, ২০২৫; সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র স্থাপন এবং ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৫ এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র স্থাপন এবং ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৫ এ নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এ সভায়। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় যে কমিটি ছিল আমরা তা বিলুপ্ত করেছি। এটা কমিশনের অধীনে আনা হয়েছে। দ্বিতীয়ত ইভিএম সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আমরা বাতিল করেছি। যেহেতু ইভিএম নেই।

এবার সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো এগিয়ে রাখছে ইসি। ইতোমধ্যে খসড়া আচরণবিধিও প্রকাশ করেছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৪২ হাজারের বেশি ভোট কেন্দ্র ছিল। ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি। এবার সাড়ে ১২ কোটি ভোটারের জন্য আরও বেশি ভোট কেন্দ্র ও ভোটকক্ষ দরকার হবে। ভোট কেন্দ্র নিয়ে দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে সব ভোট কেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।