
আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচনি উপকরণ কেনাকাটা শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। এ ছাড়া পরিবর্তন আসছে ভোটার তালিকা আইনে। যে কোনো সময় কাউকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়সহ এ সংক্রান্ত আইনের সংশোধনী প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ইসি। গতকাল নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনি সামগ্রী কেনার প্রকিউরমেন্ট সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এজন্য একটি টেন্ডারে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে। সে কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২১ ধরনের ফরম, ১৭ ধরনের প্যাকেট, পাঁচ ধরনের পরিচয়পত্র, আচরণবিধি, প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল, নির্দেশিকা ইত্যাদি ছাপানোর কার্যক্রম শুরু করা প্রয়োজন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক সংবলিত থাকে। ফলে নির্বাচন কমিশন সময়সূচি ঘোষণার পর প্রার্থীদের তালিকা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল পরিমাণ ব্যালট পেপার অল্প সময়ে মুদ্রণ করে মাঠপর্যায়ের কার্যালয়গুলোতে পাঠাতে হবে। অন্যান্য ফরম, প্যাকেট, পরিচয়পত্র, আচরণবিধি, প্রতীকের পোস্টার, ম্যানুয়েল ও নির্দেশিকা সম্ভাব্য সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই মুদ্রণ করে সংরক্ষণ করতে হবে।
যে কোনো সময় ভোটার তালিকাভুক্তির ক্ষমতা চায় ইসি : বছরের যে কোনো সময় যাতে ভোটার তালিকায় কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, আইনে সে পরিবর্তন চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ভোটার তালিকা, কোন পর্যন্ত সময়সীমা নিয়ে ভোটার করা হবে, যারা নির্বাচনে ভোট দেবেন- এই সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনের পরিবর্তন আনার জন্য আমরা একটি প্রস্তাব করেছি। সেখানে আমরা বলেছি যে কমিশন যৌক্তিক বিবেচনায় যে সময়টা মনে করবেন, যে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সেই যৌক্তিক বিবেচনাটা কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই তারিখ ঠিক করবেন। ইসি সচিব বলেন, এই যৌক্তিক বিবেচনাটা কীসের ভিত্তিতে হবে, এটা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এটা স্বাভাবিকভাবে আসতে পারে- কবে ভোট হবে এবং ভোটের আগে তফসিল, তফসিলের আগে প্রতীক বরাদ্দ ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে কাট-অব পয়েন্ট নির্ধারণ করবেন। এ সংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাব আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। গত ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপর দাবি-আপত্তি আহ্বান করে তা নিষ্পত্তির পর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয় ২ মার্চ। অর্থাৎ ১ জানুয়ারির পর কেউ ভোটার হলে তাকে নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। আইনে সংশোধন হলে কমিশন যে কোনো সময় ভোটার তালিকায় কাউকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। ইসি সচিব বলেন, ৭৬টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ চেয়ে আবেদন এসেছে। এসব নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, নিবন্ধনের জন্য ১৪৭টি আবেদন পাওয়া গেছে। তিন দলের একাধিক আবেদন থাকায় ১৪৪টি দল আবেদন করেছে। ২০ জন কর্মকর্তা দায়িত্ব পেয়েছেন এসব আবেদনের প্রাথমিক পর্যালোচনার জন্য। তিনি বলেন, নির্বাচনি প্রতীকের সংখ্যা বাড়বে। এজন্য তফসিল সংশোধন করতে হবে। তবে সেখানে যোগ করার আগেই দাঁড়িপাল্লা প্রতীকটি আদালতের আদেশে জামায়াতকে দেওয়া হয়েছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি চলমান প্রক্রিয়া। সব কার্যক্রম চলছে।