
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের সঙ্গে এক নারীর কথোপকথন ফাঁস নিয়ে মুখ খুলেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক সদস্য শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ নিয়ে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন।
ওই পোস্টে জুলাই অভ্যুত্থানের সহযোদ্ধা সারোয়ার তুষার সম্পর্কে ইমি তিনটি নোট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সারোয়ার তুষারের ফোনালাপে একটা কথা স্পষ্ট যে তাদের ঘনিষ্ঠতা একপাক্ষিক ছিল না।
১. সমস্যা অসততায়। রাজনীতি বুদ্ধিবৃত্তিক জায়গা বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। যোগ্যতার মাপকাঠিকে খাটে নিয়ে যাওয়া আমাদের বদ্ধমূল অপসংস্কৃতি।
২. অ্যাপ্রোচে। রাজনৈতিক অঙ্গনের নারীদেরকে এভেইলএবল মনে করা এবং নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে আলফা মেলদের ‘ফেভারিট’ হওয়ার জন্য জানপ্রাণ দিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি নারীদের রাজনৈতিক অবস্থানকে নিজের দলেই অসম্মানিত করে। এই কারণেই কোনো পুরুষ সহযোদ্ধা ‘লাগাইতে’ চাইলে এমনকি চরম অপ্রস্তুত এবং অসম্মানিত হয়ে পড়তে হয়।
৩) দলীয়ভাবে এনসিপির সমস্যা হচ্ছে, নারীঘটিত ঘটনাগুলো ডিল না করে প্রত্যেকবার তারা এড়িয়ে গেছে কোনো না কোনোভাবে। সম্পত্তির অধিকার এবং ফোনালাপ ইস্যুতে সামান্তা শারমিন যে উত্তর দিয়েছে সেই সামান্তা শারমিন মোটেও আওয়ামী আমলে লড়াই করা সামান্তা শারমিন নয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতি যদি মোরাল গ্রাউন্ড আর মেরুদন্ড দুর্বল করে দেয় তাহলে সার্বিক পরিস্থিতিকে কখনো ভালো বলা যায় না।
আমি এই ব্যাপারে কথা বলসি কারণ রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীদেরকে যেভাবে ট্রিট করা হয় তা চরম অসম্মানজনক এবং অবমাননাকর। নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতার চাইতে ফ্লার্টিং স্কিল আর অপরচুনিস্ট হওয়াটা যদি যোগ্যতার মানদণ্ড হয় তাহলে কখনোই পরিবর্তন আসবে না। শুধু মানুষ বদলাবে, শোষণের চরিত্র বদলাবে না। নিষ্পেষণ বন্ধ হবে না।
এই পোস্ট দেওয়ার কিছু পর তিনি ৩ নম্বর পয়েন্টটি প্রত্যাহার করে নিয়ে আরেকটি পোস্ট দেন। সেই পোস্টে ইমি লেখেন, ‘সারোয়ার তুষারের স্ক্রিনশট সম্পর্কিত যে সর্বশেষ স্ট্যাটাস তার ৩ নাম্বার পয়েন্টটা আমি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আমাকে ভিক্টিম সরাসরি জানালেন যে, তিনি এই ঘটনার পরে নানানভাবে মানুষজনকে রিচ আউট করে বিষয়টি জানিয়েছেন, কিন্ত কেউই সেই মুহূর্তে তাকে হেল্প করেনাই। ঘটনাটা এড়ায়ে যাওয়ার চেষ্টা করসে সকলেই। ঘটনা যে আজকে লিক হইসে, তার দায়ও আসলে এই কথা সত্যি হইলে ভিক্টিমকে দেওয়ার সুযোগ নাই। আর তিনি যদি রিচ আউট করেই থাকেন, অন্তত আমার জায়গা থেকে আমি শক্তভাবে তার পাশে থাকব অন্য আর একটা বান্দা না থাকলেও। আমার উক্ত বক্তব্যের জন্য আমি ভিক্টিমের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।’