
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের নতুন হাকিমউদ্দিন বাজারে দীর্ঘদিন ধরে ‘খাজনার’ নামে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে আসছিল একটি প্রভাবশালী মহল। সম্প্রতি এ অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সাহসী অবস্থান নেন টঙ্গীর তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম (২২)। তার এই উদ্যোগ প্রশাসনের নজরে এলে চাঁদাবাজি বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ১৪ জুন মুজাহিদুল ইসলাম নিজ গ্রামে অবস্থানকালে বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে চাঁদা না দেওয়ার আহবান জানান। এ সময় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা তার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তিনি মারধরের শিকার হন এবং তার মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
ঘটনার পর তিনি সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান। ‘চাঁদাবাজির প্রতিবাদে তা’মীরুল মিল্লাতের শিক্ষার্থীকে মারধর, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ’ শিরোনামে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, টবগী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুহিন (২৬) ফোনে শতাধিক নেতা-কর্মী জড়ো করেন।
পরদিন ১৫ জুন বিকেলে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান সরেজমিনে বাজার পরিদর্শনে যান। স্থানীয় দোকানি ও বাসিন্দাদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তিনি নিশ্চিত হন যে, বাজারটি এখনো সরকারিভাবে ইজারাভুক্ত হয়নি। ফলে খাজনার নামে অর্থ আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ। পরিস্থিতি বিবেচনায়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারে চাঁদা আদায় বন্ধে মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয় এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হাওলাদারের মাধ্যমে অভিযুক্তদের তলব করা হলেও তারা কেউ উপস্থিত হননি।
এ বিষয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি দানেশ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক তানজিল হাওলাদার এক যৌথ বিবৃতিতে হামলার ঘটনায় জড়িত টবগী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রাকিব বেপারী ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুহিন ফরাজিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। স্থানীয় লোকজন বলছেন, একজন শিক্ষার্থীর সাহসিকতায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে।