
উত্তর-পূর্ব ভারতের ভয়াবহ বন্যা ও টানা ভারী বৃষ্টিপাত বাংলাদেশের জন্য শঙ্কার বার্তা নিয়ে এসেছে। দেশটির বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে। আসাম, অরুণাচল, মিজোরাম, সিকিম ও ত্রিপুরা রাজ্যে বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত প্রাণহানি ঘটেছে ৩০ জনের বেশি মানুষের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আসাম, যেখানে আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রতিবেশী অরুণাচল প্রদেশে মারা গেছেন আরও নয়জন।
গত এক সপ্তাহের অতিভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলে সড়কপথ ও ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। ভূমিধসে বহু এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আগামী কয়েকদিন আরও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
এরই মধ্যে ভারতের পানি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। রোববার খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট, যাতে উজানের পানি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এতে করে বাংলাদেশের তিস্তা পাড়ের চরাঞ্চলগুলোতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তিস্তা নদীর তীরে রয়েছে অন্তত ৭৬টি চর, যেখানে হাজারো পরিবার কৃষিজমি ও বসতবাড়ি নিয়ে বসবাস করে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব চরাঞ্চলই প্রথম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় থাকে।
ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা বলছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল বাংলাদেশের নদ-নদীতে সরাসরি প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উজান ভারতে অবস্থিত হওয়ায় অতিরিক্ত পানি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
এই চিত্র নতুন নয়—১৯৮৮ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা, ২০০৪ ও ২০২২ সালের মেঘালয় থেকে আগত ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা সহ দেশের বিশাল অংশ ডুবে গিয়েছিল। এবারও এমন বিপর্যয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনগণের প্রতি জরুরি প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।