Image description

মাহমুদুর রহমান

 

১৯৯১ সালের কথা। জেনারেল এরশাদের স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য জাতি উন্মুখ হয়ে আছে। আওয়ামী শিবিরে নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই বিজয়ের উল্লাস চলছে। এমনকি মন্ত্রিসভা পর্যন্ত গঠন করা হয়ে গেছে।

আজন্ম আত্মম্ভরি ও বেজায় মুখরা শেখ হাসিনা ভারতের এক পত্রিকার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নিজেকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দাবি করে বললেন, নির্বাচনে বিএনপি সর্বোচ্চ ১০টি আসন পেতে পারে এবং এরশাদের জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দল হতে যাচ্ছে। ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই দিল্লিতে সংবাদ জানিয়ে বসে আছে যে, আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করবে। সব রাজনৈতিক পণ্ডিতকে ভুল প্রমাণিত করে সেই সময় ‘ভারতবিরোধী’ ও ‘ইসলামপন্থি’ তকমা লাগানো শহীদ জিয়ার বিএনপি ১৪৭ আসন পেয়ে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে সরকার গঠন করলে বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম এবং মুসলিম বিশ্বে দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী হলেন।

বিপরীতে আওয়ামী লীগ ৮৯টি আসনে জয়লাভ করে। শেখ হাসিনার গালে রাজনৈতিক চপেটাঘাত শুধু তার দলের পরাজয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, তিনি নিজে ঢাকার দুই আসন থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে সাদেক হোসেন খোকা এবং মেজর (অব.) মান্নানের কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ধরাশায়ী হলেন। ঢাকার রাজনীতিতে সাদেক হোসেন খোকা পরিচিত মুখ হলেও গার্মেন্ট ব্যবসায়ী মেজর মান্নানকে তখন তেমন কেউ চিনত না। শেখ পরিবারের জমিদারি গোপালগঞ্জের একটি আসন থেকে জিততে না পারলে শেখ হাসিনা সেবার সংসদেই যেতে পারতেন না। হয়তো তার রাজনৈতিক জীবনেরও ইতি হয়ে যেত। নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত ফলাফল দেখে ভারতের তৎকালীন হাইকমিশনার কৃষ্ণন শ্রীনিবাসন নিজেই স্বীকার করলেন, ভারতের মুখে পচা ডিম পড়েছে।

এরপর শুরু হলো সব পণ্ডিতের মাথা চুলকানো। তারা থিউরি দিতে লাগলেন, ভোটারদের মধ্যে ‘আওয়ামী লীগ ঠেকাও’ প্রবণতা ছড়িয়ে পড়াতেই নাকি নির্বাচনের ওই হাল হয়েছিল। এ ছাড়া নির্বাচনের ঠিক প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে শেখ হাসিনার অত্যন্ত অহমিকাপূর্ণ ও অশালীন বক্তৃতা তার প্রতি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারদের বিমুখ করে তুলেছিল। বিশেষ করে বক্তৃতায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘অখ্যাত মেজর’ বলে শেখ হাসিনা বেজায় তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিলেন।

১৯৯১ সালের পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে হিজাব মাথায় দিয়ে শেখ হাসিনা বকধার্মিক সেজে এবং বিনয়ী চেহারা নিয়ে ভোটারের সামনে হাজির হয়েছিলেন। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালে ভারতে পলায়নের সময় পর্যন্ত হাসিনা আবার তার আদি ভয়ংকরী রূপে ফিরে গিয়েছিলেন। ইদানীং বিএনপির কিছু জ্যেষ্ঠ নেতার আচরণে এবং বক্তব্যে একই ধরনের অহমিকা ও অশালীনতা দেখে মনে হচ্ছে, তারা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন থেকে কোনো শিক্ষাই গ্রহণ করেননি। তারা রাজনৈতিক মতভেদকে বিপজ্জনকভাবে হাসিনা বনাম ড. ইউনূসের মতো ব্যক্তিগত রেষারেষির পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা ড. ইউনূসকে সুদখোর বলতেন। তাকে প্রাণে না মেরে পদ্মা নদীতে দুবার চুবাতেও চেয়েছিলেন।

আদালতের লিফট বন্ধ রেখে ৮৪ বছরের একজন অশক্ত প্রবীণ মানুষকে সিঁড়ি দিয়ে ছয়তলায় ওঠানামা করতে বাধ্য করেছেন। জেলে নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সম্ভবত বিদেশের চাপে সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি। আজ ড. ইউনূসের অসুস্থ স্ত্রীকে পর্যন্ত অপমান করতে হাসিনার ভাবাদর্শের বিএনপির যেসব অভব্য নেতাদের বাধছে না। তারা ক্ষমতা হাতে পেলে যে বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলবিজয়ীকে এবার যমুনা নদীতে চুবাতে কিংবা জেলে নিতে চাইবেন না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আওয়ামী লীগের তুলনায় বিএনপিকে জনগণ সব সময় ভদ্র সংস্কৃতির দল হিসেবে বিবেচনা করতেন। কিন্তু কিছুদিন ধরে বিএনপির একাধিক মধ্যম সারির নেতার বক্তব্যে অশ্লীলতার মাত্রা আওয়ামী লীগের অসভ্যদের সীমাও অতিক্রম করেছে। মনে পড়ছে, দুই দশক আগে সরকারে দায়িত্ব পালনকালে বেগম খালেদা জিয়া আমাকে একাধিকবার বলেছিলেন, ‘হাসিনা যত অভদ্র ভাষায় কথা বলবে, আমরা তত শালীনতা বজায় রাখব।’ সর্বজনশ্রদ্ধেয় বেগম খালেদা জিয়ার সেই বিএনপির বর্তমান নেতাদের আচরণ বুদ্ধির অগম্য।

বিএনপির পরিবর্তন শুধু নেতাদের আচরণেই সীমাবদ্ধ নেই, তাদের রাজনৈতিক আদর্শের পরিবর্তনও বিশেষভাবে লক্ষণীয়। শেখ মুজিবের একদলীয় বাকশালী সংবিধান পাল্টে শহীদ জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি সেখানে বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মুসলমানের ধর্মীয় মূল্যবোধ, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটিয়েছিলেন। তিনিই সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ এবং ‘মহান আল্লাহ তায়ালার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ প্রবিষ্ট করিয়েছিলেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। প্রচণ্ড দেশপ্রেমিক জিয়াউর রহমান ভারত প্রশ্নেও সব পরিস্থিতিতে অবিচলিত দৃঢ়তার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি পদ্মা নদীর উজানে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নালিশ নিয়ে পৌঁছেছিলেন। সেখানে ভোটাভুটিতে আমরা জিতেছিলাম। আন্তর্জাতিক চাপের ফলে ভারত প্রথমবারের মতো গঙ্গা পানিচুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিল।

ফারাক্কা বাঁধে ১৯৭২ সালে ভারতকে একতরফা পানি প্রত্যাহারের সুযোগ করে দিয়ে দিল্লির কাছে নতজানু শেখ মুজিব বাংলাদেশের যে সর্বনাশ করেছিলেন, সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান অনেকটাই আমাদের স্বার্থরক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সেই বিএনপির শীর্ষ নেতারা এখন দিল্লির হিন্দুত্ববাদী বয়ানে বাংলাদেশের মুসলমানদের মৌলবাদী ও জঙ্গি তকমা লাগিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছেন। দলের নীতি পরিবর্তনের এই সুযোগ নিয়েই পতিত ফ্যাসিবাদের সহযোগী তথাকথিত বাম দল ও মিডিয়া এখন দলবেঁধে বিএনপির ঘাড়ে সওয়ার হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে, বাংলাদেশের বাম রাজনীতির প্রকৃতিজাত ইসলামবিদ্বেষের কারণে তারা কখনো এ দেশে জনসমর্থন পায়নি। সেক্যুলারিত্বের আবরণে এরা সব ধর্ম বিশ্বাসের প্রতি সম্মান জানালেও সব সময় তাদের যত বিদ্বেষ শুধু ইসলামের প্রতি। ভারতপন্থি মিডিয়ার কল্যাণে এই জনবিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী বাংলাদেশে এক ধরনের পরজীবী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে টিকে আছে।

সিপিবির কথাই ধরা যাক। দলটি শেখ মুজিবের সঙ্গে মিলে ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের জনগণের সব অধিকার হরণ করে স্বৈরাচারী একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিল। আবার ২০১৩ সালে শাহবাগে ভারতের ইন্ধনে যে ইসলামবিদ্বেষী চেতনার উত্থান ঘটেছিল, আওয়ামী লীগের কাছে তার দায়িত্ব হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত আন্দোলনের ভ্যানগার্ডের ভূমিকায় ছিল একই সিপিবি এবং সমগোত্রীয়রা। শেখ হাসিনার পুরোটা সময় ধরে সিপিবির একজন সোভিয়েতপন্থি তাত্ত্বিক অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ ফ্যাসিবাদের তাবৎ জুলুমের পক্ষে নির্লজ্জভাবে সাফাই গেয়েছেন। তিনি প্রকারান্তরে ইসলামপন্থিদের ওপর গণহত্যা চালানোর প্রেসক্রিপশন পর্যন্ত দিয়েছেন।

২০১৫ সালে ওই ব্যক্তি লিখেছিলেন, ‘তবে ঘটনা যাই ঘটুক, প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির এক্ষেত্রে যা করণীয়, সেটা হচ্ছেÑ১৯৭১ সালের পরাজিত প্রতিক্রিয়াশীল সন্ত্রাসী শক্তিকে যদি আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় বলপ্রয়োগ করেও দুর্বল ও নিঃশেষিত করতে পারে, তাতে বাগড়া না দেওয়া।’ অর্থাৎ সিপিবির তাত্ত্বিকের মতে, বাংলাদেশে মুসলমানদের প্রতিক্রিয়াশীল তকমা দিয়ে তাদের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং আয়নাঘরে নিয়ে নির্যাতন করা জায়েজ! সেই ভয়াবহ ইসলামবিদ্বেষী দলটি এখন বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির সহযোগী হওয়ার চেষ্টা করছে। ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে সেক্যুলার ও ইসলামপন্থি দ্বৈতে (Binary) বিভক্ত করে বিশ্বব্যাপী ইসলামোফোবিয়ার ফায়দা নিতে চেয়েছে। সিপিবি, জাসদ (ইনু), বাসদ, গণফোরামের মতো দল সেই দ্বৈত রাজনীতিতে সর্বদা আদর্শগতভাবে বর্বর ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পক্ষেই ছিল।

জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ হারিয়ে যাওয়ার পর উপরোক্ত আশ্রয়হীন ও প্রচণ্ড ইসলামবিদ্বেষী দলগুলো এখন নিজেদের রক্ষা করতে একে একে বিএনপির অনুগামী হচ্ছে। অথচ গত ১৫ বছর এরা শহীদ জিয়া এবং বিএনপিকে মৌলবাদ ও ইসলামি জঙ্গিবাদের আশ্রয়দাতা অভিহিত করে অবিরত গালমন্দ করেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে এক বিস্ময়কর রাজনৈতিক মেরূকরণ ঘটছে।

এ মেরূকরণে বিএনপি ক্রমেই আওয়ামী লীগের পরিবর্তে সেক্যুলার ফ্রন্টের নতুন নেতা রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। বিএনপিপন্থি গণমাধ্যমের ‘ইকো সিস্টেম’ এখন একজন আজন্ম সুশীল ড. ইউনূসকেও কথিত মৌলবাদকে আশকারা দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত করছে। উপরোক্ত ‘ইকো সিস্টেমে’ শাহবাগের অ্যাকটিভিস্ট ও সমর্থকরা দলে দলে যোগদান করছে। এদিকে বিএনপির কোনো কোনো নেতা কথিত ‘ইসলামি মৌলবাদের আশ্রয়দাতা’ ড. ইউনূসের ঈমান ও আকিদা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে দ্বিধা করছেন না।

এই নেতাদের মধ্যে অনেকেই আমার সঙ্গে কিছু সময় জেলখানায় কাটিয়েছেন। ফ্যালাসি হলো, যারা আজ ইউনূসের ঈমান ও আকিদা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তাদের মধ্যে অনেককে আমি কখনো নামাজ পড়তে দেখিনি। বন্দি জীবনে আমরা যখন পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে নামাজ পড়তাম, এই বিএনপি নেতারা তখন যার যার সেলে শুয়ে-বসে সময় কাটাতেন। কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করার আগে সবারই অন্তত আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখা উচিত। নামাজ পড়া অথবা না পড়া যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু নিজে ধর্ম পালন না করে অন্যের ঈমান ও আকিদা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা রাজনৈতিক ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছু নয়। মোদ্দাকথা, সেক্যুলার ও ইসলামপন্থির যে লড়াইয়ের মধ্যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নিক্ষেপ করেছিলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সেখান থেকে এ দেশের জনগণের সহসা মুক্তি মিলছে না।

বাংলাদেশে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। তিনটি নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যথাক্রমে মোটা দাগে ভারতপন্থি সেক্যুলার ও বাম সমন্বয়ে মোর্চা এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদপন্থি ও ইসলামিক মোর্চার নেতৃত্ব দিয়েছে। তিন নির্বাচনের মধ্যে দুটিতে বিএনপি এবং একটিতে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছিল। আগামী নির্বাচনে আমরা এক অজানা অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। এখানে বিএনপির রাজনৈতিক অবয়বের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটতে চলেছে বলেই এখন পর্যন্ত প্রতীয়মান হচ্ছে।

বিএনপি এতদিনের ভারতবিরোধী ও ইসলামপন্থি চেহারা পাল্টে সেক্যুলার এবং ভারতের প্রতি নমনীয় রূপে আবির্ভূত হয়েছে। ‘দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়’ স্লোগান ভারতকে সন্তুষ্ট করবে বলেই আমার ধারণা। দিল্লি থেকে নির্দেশনা এলে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা সম্ভবত বিএনপিকেই ভোট দেবে। তবে দলটির জন্য সমস্যা হলো, মহান জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করেছে। তারা দেখেছে, ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং হাসিনার ফ্যাসিবাদের যৌথ অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেই আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ইয়ামিন, নাফিজ, ওয়াসিমরা শহীদ হয়েছেন।

সেই এক-এগারো থেকে ওই মিলিত অপশক্তি বাংলাদেশের জনগণের ওপর ভয়াবহ জুলুম চালিয়েছে। সুতরাং, বিএনপিকে জনমতের বিপরীতে অবস্থান নিতে হচ্ছে। তবে দলটির জন্য সুবিধার দিক হলো, ইসলামপন্থিরা বহুধাবিভক্ত। বিএনপির সেক্যুলার ক্যাম্পের দিকে ঝুঁকে পড়ায় জাতীয়তাবাদী ও ইসলামপন্থিদের ঐক্যবদ্ধ করে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কোনো দল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ সুযোগে আগামী নির্বাচনে বিএনপির জিততে তেমন কোনো বেগ পাওয়ার কথা নয়, যদি না সেই ১৯৯১ সালের ‘আওয়ামী লীগ ঠেকাও’-এর মতো কোনো ঢেউ ওঠে। শেষ কথা, জনচৈতন্যে (Public perception) ভারতপন্থি ভাবমূর্তি নিয়ে আবির্ভূত দলটি কতদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে, সেটা অবশ্য দেখার বিষয়।