
বিতর্কিত নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়েছে সিলেট জালালাবাদ নারী ঐক্য ফোরামের নেতারা।
রোববার (১ জুন) সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে ফোরামের নেতাদের নিয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এ দাবি জানান তারা।
সংগঠনটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এসময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আটটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ড. আমিনা খাতুন।
প্রস্তাবনাগুলো হলো— বিদ্যমান কমিশনে বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক বিষয় না থাকা এবং তাদের কোনো বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি না থাকায় তা বাতিল করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কমিশন গঠন করতে হবে, নারী ও পুরুষের তারতম্য ও অসমতার জন্য ধর্মকে দায়ী করা হয়েছে তাই রিপোর্টে ধর্মবিদ্বেষমূলক এই বক্তব্যগুলো পরিহার করতে হবে, পতিতাবৃত্তি নারীর জন্য শুধু অবমাননাকরই নয় বরং নারী সুষ্ঠু সামাজিক জীবন এক সুস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ তাই এই সুপারিশ বাতিল করতে হবে, সর্বক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমতা বিধানের সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনে, যেখানে নারীর জৈবিক বিষয়কে মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই এটি বাতিল করে ইসলামের দিক নির্দেশিত ন্যায্যতা ও অধিকারসমূহ দিতে হবে, সম্পদ বণ্টনে ইসলামি উত্তর অধিকার আইন বলবৎ থাকতে হবে, অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রবর্তনের সুপারিশ বাতিল করতে হবে, কমিশনে বহুবিবাহ বিলোপ করার প্রস্তাব দিয়েছে কিন্তু ইসলামে শর্তসাপেক্ষে এর অনুমতি আছে ফলে তা বহাল রাখতে হবে, কমিশনে তালাকের পর স্ত্রীর মোহরানা আদায়ের সুপারিশ করা হয়েছে কিন্তু ইসলামে বিয়ের পরেই দেওয়ার বিধান রয়েছে তাই সেটিই থাকা দরকার। বৈঠকে সংগঠনটির সদস্য সোহেলী তামান্না বলেন, ‘নারী কমিশনের প্রস্তাবনাগুলো আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। পাশ্চাত্য সভ্যতাকে পুঁজি করে এ দেশে একদল মানুষ আমাদের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে নারীর ডাকে ঐক্য মৈত্রীর নামে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, অশালীন পোষাকে নারীর অধিকার আদায়ের নামে নারীর ভূষণকে খর্ব করা হয়েছে, ধর্মীয় শিষ্টাচারকে উগ্রবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে যা ধর্মীয় অবমাননা, ট্রান্স মুক্তিকে নারীমুক্তি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। যেখানে অধিকাংশ কার্যক্রম নারীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা এলজিবিটিজিকে প্রমোট করছে। যা আমাদের মানবসম্প্রদায় জন্য একটা বিধ্বংসী মতবাদ। অথচ ট্রান্সজেন্ডার ধারণা বিকৃত মস্তিষ্ক থেকেই উদ্ভূত,।’
জালালাবাদ নারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি সুলতানা চৌধুরী বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের পেশকৃত প্রস্তাবনার অধিকাংশই ইসলাম ধর্ম-জাতিসত্তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা নারীদের মর্যাদা খর্ব করে। স্বাধীনতার নামে কমিশন যে প্রস্তাবনা দিয়েছেন তা পারিবারিক কলহ আরও বাড়িয়ে তুলবে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্মতির অভাবকে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে শাস্তির বিধান দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা দাম্পত্য সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে এবং পারিবারিক অস্থিরতা বাড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দিয়ে যৌনকর্মীদের শ্রমজীবী হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়ার সুপারিশ প্রকৃতপক্ষে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের একটি ভয়ংকর ব্যবস্থা। ইসলাম ও সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে মানে না বরং তা নির্মূল করে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাই অবিলম্বে এসব প্রস্তাবনা বাতিল করতে হবে।’