
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট দিয়েছিলেন দেশের প্রথম অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। একই সঙ্গে তিনি দুই অর্থবছরের বাজেট দিয়েছিলেন। এর আগে মুজিবনগর সরকার ১৯৭১ সালের ১৯ জুলাই দৈনন্দিন ও অপরিহার্য ব্যয় নির্বাহে একটি পেশ করেছিল। সব মিলিয়ে ১৩ জন অর্থমন্ত্রী বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা এই বাজেট দিয়েছেন। ২ জুন নতুন বাজেট দিচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি হবেন বাজেট দেওয়া ১৪ তম ব্যক্তি।
দেশের প্রথম বাজেট ছিল ছোট আকারের। আর ৫৪ বছর পর সেই বাজেটের কলেবর বড় হয়েছে, বেড়েছে প্রবৃদ্ধি। যত বাজেট দেওয়া হয়েছে, তার আকার কত ছিল, কে আর কবে তা উপস্থাপন করেছিলেন, পেশ করার সময় কী বলেছিলেন, তারই একটি বিবরণ দেওয়া হলো এখানে। বলে রাখা ভালো, বাজেট উপস্থাপন পদ্ধতির অনেক বদল হয়েছে। বাজেট পরিসংখ্যান প্রকাশের পদ্ধতিরও পরিবর্তন আনা হয়েছে। সরকারের আয় ও ব্যয়ের খাতে নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হয়েছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপির বাইরে নতুন নতুন উন্নয়ন ব্যয়ের খাত যুক্ত হয়েছে। ফলে এডিপির তুলনায় উন্নয়ন বাজেট আরও বড় হয়েছে।
১. মুজিবনগর সরকার, ১৯ জুলাই ১৯৭১
রাজস্ব আয় ৭,৭৪, ১৮,৯৯৮ টাকা, ব্যয় ৮,৬২, ৪৮,২০৪ টাকা। বাজেট ঘাটতি ৮৮,২৯, ২০৬ টাকা।
প্রথম বাজেটটি দিয়েছিল মুজিবনগর সরকার। তখন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন এম মনসুর আলী। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এর অনুমোদন দিয়েছিলেন। সেই বাজেটের ব্যাখ্যামূলক টিকায় বলা ছিল, ‘আমাদের এখন স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য দরকারি, অপরিহার্য ব্যয় মেটাতে বাজেট তৈরি করতে হচ্ছে। যেটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুদ্ধ প্রক্রিয়ায় সাহায্য করবে। বাজেট জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর, ১৯৭১- এই তিন মাস সময়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই আশায় এটা করা হয়েছে যে আমরা এই সময়ের মধ্যেই দেশকে স্বাধীন করতে পারব।’
২. তাজউদ্দীন আহমদ, ১৯৭২ / ১৯৭১-৭২ ও ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর, শনিবার, ৩০ জুন, ১৯৭২
একই সঙ্গে দুই অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হয়েছিল। ১৯৭১-৭২ অর্থবছরের বাজেটের মেয়াদকাল ছিল ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে ৩০ জুন, ১৯৭২।
ক.১৯৭১-৭২ অর্থবছর: রাজস্ব আয় ৪৮.৫২ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৯৯.১৩ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ৫১.৪৬ কোটি টাকা
খ.১৯৭২-৭৩ অর্থবছর: রাজস্ব আয় ২৯১.৫৮ কোটি, রাজস্ব ব্যয় ২১৮.৪৩ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৭৩.১৫ কোটি, উন্নয়ন, পুনর্নির্মাণ ও পুনর্বাসন ব্যয় ৫০১ কোটি টাকা, এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ৩১৮.৩০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৭১৯.৪৩ কোটি, মোট আয় ২৮৫.৩৮ কোটি, মোট ঘাটতি ৪২৭.৮৫ কোটি টাকা।
সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট দিয়েছিলেন দেশের প্রথম অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ। প্রথম বাজেট বক্তৃতা তেমন দীর্ঘ ছিল না। পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের পরিকল্পনার কথাই বেশি বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘বেতার ও টেলিভিশনের মাধ্যমে এই বাজেট প্রচার না করে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের সামনে উপস্থাপন করতে পারলে আমি সুখী হতাম। তবে আমি আশা করি যে এর পরে আর কোনো দিন এইভাবে আমাদের বাজেট প্রচার করতে হবে না।’

৩. তাজউদ্দীন আহমদ, ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১৪ জুন, ১৯৭৩
রাজস্ব আয় ৪১১.৩১ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ২৯৫.৩০ কোটি টাকা, রাজস্ব উদ্বৃত্ত ১১৬.০১ কোটি টাকা, উন্নয়ন ও পুনর্নির্মাণ ব্যয় ৫২৫.৩৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে এডিপি ৪৪৯.৯৭ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৮২০.৬৫ কোটি টাকা, মোট আয় ৩৭৪.৩২ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৪০৯.৩৪ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ দেশের দ্বিতীয় বাজেটটি দিয়েছিলেন সংসদে বসেই। এবার আর তিনি করমুক্ত বাজেট দিতে পারেননি। অর্থনীতির নানা সমস্যা তখন দৃশ্যমান হতে শুরু করেছিল। দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। বাজেট বক্তৃতায় সমস্যাগুলোর কথা উল্লেখ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
শুরুতেই অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বিগত বছরটি ছিল আমাদের জাতীয় জীবনের এক সুকঠিন পরীক্ষা ও সুমহান আশার কাল। তা ছিল মুক্তিসংগ্রামের অব্যবহিত পরবর্তী সময়। যে বহুবিধ সমস্যা আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে লাভ করেছিলাম, তার প্রকৃতি তখন আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারেনি মুক্তির আনন্দে ও উচ্ছ্বাসে। তারপর একটি বছর কেটে গেছে। আজ আমরা সমস্যার নানাবিধ মাত্রা সম্পর্কে সজাগ আমাদের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন; আমাদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে স্পষ্টতর ধারণার অধিকারী।’
৪. তাজউদ্দীন আহমদ, ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছর, বুধবার, ১৯ জুন ১৯৭৪
রাজস্ব আয় ৪৭০.২৩ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৪৭০.২৩ কোটি টাকা, এডিপি ৫২৫ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৯৯৫.২৩ কোটি টাকা, মোট আয় ৪৭০.২৩ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৫২৫ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী হিসাবে তাজউদ্দীন আহমদের শেষ বাজেট। তাজউদ্দীন আহমদ এখন পর্যন্ত দেশের একমাত্র অর্থমন্ত্রী, যিনি মূলত রাজনীতিবিদ ছিলেন। শেষ বাজেটটি দিতে হয়েছিল চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে। জ্বালানি তেল ও ডলারকে কেন্দ্র করে ১৯৭৩ সালে বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছিল, দেশের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়েছিল তীব্র ভাবে। আসন্ন ছিল দুর্ভিক্ষ। এ সবকিছুরই প্রতিফলন ছিল বাজেট বক্তৃতায়।
শুরুতেই অর্থমন্ত্রী সমাজতান্ত্রিক রূপান্তরের নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে চেষ্টার ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘সর্বাত্মক প্রচেষ্টা যত ব্যাপক ও বিস্তৃত হওয়া প্রয়োজনীয় ছিল, তা ততটা হতে পারেনি। দেশ গড়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় সর্ব পর্যায়ে অগ্রণী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা যাতে সকলে সহজে উপলব্ধি করতে পারেন, সে জন্য জনগণকে দেশের প্রকৃত অবস্থা জ্ঞাপন করা আমার পবিত্র দায়িত্ব।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেছিলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি না ঘটলেও ১৯৭৩-৭৪ অর্থবৎসর জাতির জন্য বাস্তবানুগ অভিজ্ঞতার কাল। উন্নয়নের উদ্দেশ্যে সর্বাত্মক প্রয়াসে জাতি সর্ব পর্যায়ে অগ্রণী হয়েছিল কি না, তা তলিয়ে দেখা দরকার। সততা, নিয়মানুবর্তিতা, বাস্তবানুগ উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন ও কঠোর পরিশ্রমের আজ বড় প্রয়োজন। এ কথা মনে রাখা দরকার যে স্লোগান দিয়ে সমাজতন্ত্র কায়েম হয় না, দুর্নীতি দূর হয় না, বুলি আউড়িয়ে প্রবৃদ্ধি আনা যায় না, জনসাধারণকে সর্বকালের জন্য ধোঁকা দেওয়া চলে না।’
৫. এ আর মল্লিক, ১৯৭৫-৭৬ অর্থবছর, সোমবার, ২৩ জুন, ১৯৭৫
রাজস্ব আয় ৭৫৫.৩৮ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৫৯৯.১৯ কোটি টাকা। রাজস্ব উদ্বৃত্ত ১৫৬.১৯ কোটি টাকা, এডিপি ৯৫০.২৯ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ১৫৪৯.৪৮ কোটি টাকা, মোট আয় ৭৫৫.৩৮ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৭৯৪.১০ কোটি টাকা।
অর্থনীতির জন্য কঠিনতম সময় অতিক্রম করেছে তখন বাংলাদেশ। এর মধ্যে অর্থমন্ত্রীর বদল হয়েছে। পার করতে হয়েছে দুর্ভিক্ষের বছর। সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী গৃহীত হয়েছে। গঠিত হয়েছে বাকশাল। যাকে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘শাসনতন্ত্রের পরিবর্তন ও বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব’। অর্থনীতিতেও কিছু পরিবর্তন আনা শুরু হয়েছে। বেসরকারি পুঁজি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা ২৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ কোটি করা হয়। এক ধাক্কায় টাকার মান কমানো হয় ৫৮ শতাংশ। এ সবকিছুরই উল্লেখ ছিল বাজেট বক্তৃতায়। অর্থমন্ত্রী এ আর মল্লিক সম্পূর্ণ সাধু ভাষায় বাজেট বক্তৃতা দিয়েছিলেন। আর কখনো সাধু ভাষায় বক্তৃতা দেওয়া হয়নি।
বাজেটের উপসংহারে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এই বাজেট সর্বপ্রকার জাতীয় সমস্যার সমাধান করিবে এই প্রতিশ্রুতি আমি দিতেছি না, তবে এই কথা আমি দৃঢ়প্রত্যয়ের সহিত বলিতে পারি যে আমরা উন্নয়ন কার্যক্রমের সর্বাঙ্গীণ সফলতার জন্য যে পদক্ষেপ গ্রহণে সচেষ্ট হইয়াছি, তাহা জাতিকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাইতে সাহায্য করিবে।’
৬. মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছর, শনিবার, ২৬ জুন ১৯৭৬
রাজস্ব আয় ৯৬৬.৩৮ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৭৬৭.৮৭ কোটি টাকা, রাজস্ব উদ্বৃত্ত ১৯৮.৫১ কোটি টাকা, এডিপি ১১০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ১৮৬৭.৮৭ কোটি টাকা, মোট আয় ৯৬৬.৩৮ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৯০১.৪৯ কোটি টাকা।
স্বাধীনতার পরে দ্বিতীয়বারের মতো বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছিল জাতীয় সংসদের বাইরে, রেডিও-টেলিভিশনের মাধ্যমে, বঙ্গভবন থেকে। জিয়াউর রহমান তখন সেনাবাহিনীর প্রধান উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপদেষ্টা। বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি বেসরকারি খাতের বৃহত্তর ভূমিকাকে শিল্পায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করা হয়েছিল। সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক কাঠামো থেকে বের হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই। আর এরই প্রতিফলন ছিল বাজেট বক্তৃতায়।
বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার ন্যূনতম আয়করের সীমা ৮ হাজার ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়। দেশের ইতিহাসে কালো টাকা সাদা করার ঘোষণা প্রথমবার দেওয়া হয়েছিল এই বাজেটেই।
৭. মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ১৯৭৭-৭৮ অর্থবছর, শনিবার, ২৫ জুন, ১৯৭৭
রাজস্ব আয় ১,১৫৬. ৬১ কোটি টাকা, ব্যয় ৯৩৬.৩১ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ২৫০.৩০ কোটি, এডিপি ১১৫০.৬৫ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ২,০৮৬. ৯৬ কোটি টাকা, মোট আয় ১,১৫৬ কোটি টাকা, ঘাটতি ৯৩০.৩৫ কোটি টাকা।
প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জিয়াউর রহমান তখনো অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। আগের অর্থবছরের বাজেটে ইতিহাসে প্রথমবারের কালোটাকা সাদা করার সুযোগের কথা বলা ছিল। এই সুযোগ আরও বাড়ানো হয়। এ নিয়ে জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, ‘আপনারা অবগত আছেন যে সরকার ৬ নং সামরিক আইনের অধীনে করদাতাদের তাঁদের কর-অনারোপিত আয়ের ঘোষণার জন্য ১৯৭৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু নানা কারণে অনেকে এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারেননি বলে আবেদন-নিবেদন বিবেচনা করে সরকার তাঁদের কর-অনারোপিত প্রকৃত আয়ের ঘোষণার জন্য এ বছর ৩০ জুন পর্যন্ত আর একবার সুযোগ দিয়েছেন। এতে কোনো রেয়াতি হারের সুযোগ দেওয়া হয়নি, কিন্তু দণ্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায় যে করদাতারা তাঁদের এখনো অপ্রকাশিত আয় ঘোষণার এই শেষ সুযোগ হারাবেন না, কেননা, এর পরে কর ফাঁকির কেসসমূহের ব্যাপারে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
৮. মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, ১৯৭৮-৭৯ অর্থবছর, শনিবার, ৩০ জুন, ১৯৭৮
রাজস্ব আয় ১,৩৭৬. ৫০ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ১,০৫৩. ০৯ কোটি টাকা, রাজস্ব উদ্বৃত্ত ৩২৩.৪১ কোটি টাকা, এডিপি ১৩৯০.৮৭ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ২,৪৪৩. ৯৬ কোটি টাকা, মোট আয় ১,৩৭৬ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১,০৬৭. ৪৬ কোটি টাকা।
জিয়াউর রহমান তখনো রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। অর্থ মন্ত্রণালয় তাঁরই দায়িত্বে। এটি তাঁর তৃতীয় বাজেট। নীতির ধারাবাহিকতা রেখে বাজেটটি তৈরি করা হয়েছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বাজেট ব্যয় ছিল বেশি। বাজেটে জানানো হয়, আগের অর্থবছরে নতুন বেতন স্কেল কার্যকর করার কারণে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন দেখা দেয়। আর এ কারণেই বাজেটে ব্যয় বেড়ে যায়। ১৯৭৮-৭৯ অর্থবছর ছিল দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনার প্রথম বছর।
কর প্রস্তাব অংশে জিয়াউর রহমান অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়াতে কর-ব্যবস্থায় বেশ কিছু পরিবর্তনের কথা জানান। ১৯৭৬ সালে তাঁর সরকার একটি ট্যাক্সেশন এনকোয়ারী কমিশন গঠন করেছিল। এই কমিশনের বিভিন্ন সুপারিশ পরীক্ষা করে দেখার জন্য কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, নূতন অর্থ বৎসরের শুরুতে তাঁরা কাজ শুরু করবেন।
৯. মীর্জা নুরুল হুদা, ১৯৭৯-৮০ অর্থবছর, শনিবার, ২ জুন ১৯৭৯
রাজস্ব আয় ১,৮১২. ০২ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ১,১৯৩. ৯৬ কোটি টাকা, রাজস্ব উদ্বৃত্ত ৬০৮.০৬ কোটি, এডিপি ২০৭০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৩,২৬৩. ৯৬ কোটি টাকা, মোট আয় ১,৮১২. ০২ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১,৪৫১. ৯৪ কোটি টাকা।
তিন বছর পরে আবারও বাজেট উপস্থাপন করা হয় জাতীয় সংসদে। নতুন অর্থমন্ত্রী মীর্জা নুরুল হুদা এই একটি বাজেটই দিয়েছিলেন। সময়টা অর্থনীতির জন্য ভালো ছিল না। মূল্যস্ফীতির চাপ তো ছিলই, প্রবৃদ্ধিও কমে যায়। আর্থিক সংকটের কারণে বাজেটের আগেই বেশ কিছু পণ্যের শুল্ক ও দাম বাড়ানো হয়েছিল। এ নিয়েও সমালোচনা ছিল প্রচুর। এ সময় কর তদন্ত কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্ট অনুযায়ী বাজেটের মাধ্যমেই তা কার্যকর করার প্রস্তাব করা হয়। গুরুত্ব দেওয়া হয় প্রত্যক্ষ করকে।
১০. মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, ১৯৮০-৮১, শনিবার, ৭ জুন, ১৯৮০
রাজস্ব আয় ২,১৯৩. ৩৮ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ১,৪০৮. ০৩ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৭৮৫.৩৫ কোটি, এডিপি ২৭০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৪,১০৮. ০৩ কোটি টাকা, মোট আয় ২,১৯৩ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১,৯১৪. ৬৫ কোটি টাকা।
আবারও অর্থমন্ত্রীর পরিবর্তন। নতুন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। এর আগে ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। প্রথম বাজেটে এম সাইফুর রহমান শুরুতেই উল্লেখ করেছিলেন জিয়াউর রহমানের খাল কাটা কর্মসূচির কথা। দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি তখনো অর্থনীতিতে বড় সংকটের নাম। প্রকৃতপক্ষে পুরো সত্তর দশক এবং আশির দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পুরো বিশ্বই ছিল উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট। এর প্রভাব ছিল বাংলাদেশেও। পাশাপাশি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু নীতিও উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য দায়ী ছিল। বাজেটে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এ বছরের আরেকটি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ হলো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। কিছুকাল যাবৎ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও এই সমস্যার চাপ অনুভব করছে।’
১১. মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, ১৯৮১-৮২ অর্থবছর, শনিবার, ৬ জুন, ১৯৮১
রাজস্ব আয় ২,৭৬৭ কোটি টাকা, ব্যয় ১,৬৬২ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ১১০৫ কোটি টাকা, এডিপি ৩০১৫ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৪,৬৭৭ কোটি টাকা, মোট আয় ২,৭৬৭ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১,৯১০ কোটি টাকা।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর ঠিক পাঁচ দিন পরে বাজেট দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। যদিও এই বাজেট পুরোপুরি বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি তিনি। ১৯৮২ সালের মার্চে জেনারেল এরশাদ সামরিক শাসন জারি করেন। ফলে মন্ত্রিত্বও হারান সাইফুর রহমান।
বিশ্ব অর্থনীতি তখন মন্দায় আক্রান্ত। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ আরও বেড়েছে। এ প্রসঙ্গটি এনে এম সাইফুর রহমান বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিবেশের প্রভাব কখনো প্রচ্ছন্ন, কখনো প্রকট। সাম্প্রতিককালে এই প্রভাব প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে।’
পুরো ৭০ ও ৮০ এর দশকেই অর্থনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল বৈদেশিক সাহায্য। বৈদেশিক সাহায্য ছাড়া বাজেট প্রস্তুত করার সাধ্য কোনো অর্থমন্ত্রীরই ছিল না। এম সাইফুর রহমান এ নিয়ে দীর্ঘ বক্তব্য রেখেছিলেন বাজেটে।
১২. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ১৯৮২-৮৩ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ১৯৮২
রাজস্ব আয় ২,৭৬৭. ৮২ কোটি টাকা, ব্যয় ২,০৩৭. ৬৩ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৭৩০.১৯ কোটি কোটি, এডিপি ২৭০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৪,৭৩৭. ৬৩ কোটি টাকা, মোট আয় ২,৬৬৭. ৮২ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১,৯৬৯. ৮১ কোটি টাকা।
আবার সরকার পরিবর্তন। এবার ক্ষমতায় সামরিক শাসক লে. জেনারেল এইচ এম এরশাদ। নতুন বাজেট দেওয়া হয় তাঁরই সচিবালয়ে। অর্থমন্ত্রী হিসাবে এটাই আবুল মাল আব্দুল মুহিতের দেওয়া প্রথম বাজেট। সে সময় পর্যন্ত এ বাজেটটিই ছিল সবচেয়ে সুলিখিত। আর যেহেতু নতুন সরকার, তাই অর্থমন্ত্রীও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সব ধরনের সংকটের কথা খোলামনে বর্ণনা করেছিলেন। জেনারেল এরশাদও আগের সরকারের নানা অব্যবস্থার কথা বলেই সামরিক শাসন জারি করেছিলেন। বাজেটেও এর প্রতিফলন ছিল। সরকার পরিবর্তন হলেই সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বেদন বাড়ানোর একটি প্রবণতা দেখা যায়। এ বাজেটেও অর্থমন্ত্রী মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
১৩. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছর, শনিবার ৩০ জুন, ১৯৮৩
রাজস্ব আয় ৩,৩৯৬. ৭৬ কোটি টাকা, ব্যয় ২,৪১৩. ৫৪ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৯৮৩.২২ কোটি, উন্নয়ন বাজেট ৩৪৮৩.৮৬ কোটি।
মোট বাজেট ৫,৮৯৭. ৪০ কোটি টাকা, মোট আয় ৩,৩৯৬. ৭৬ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ২,৫০০. ৬৪ কোটি টাকা।
তখনো সামরিক শাসন চলছে। গুরুত্ব বাড়ছে বেসরকারি খাতের। চলছে বেসরকারি খাতে ব্যাংক দেওয়ার প্রক্রিয়া। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের জন্য নেওয়া হয় বিশেষ এক স্কিম। আবুল মাল আবদুল মুহিতের এই বাজেট বক্তৃতাই ছিল তখনকার সময় পর্যন্ত সবচেয়ে দীর্ঘ বাজেট বক্তৃতা। এ জন্য বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে অর্থমন্ত্রী ক্ষমাও চেয়েছিলেন।’
বক্তৃতার শুরুতেই অর্থমন্ত্রী অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বর্ণনা দেন। তিনি বলেছিলেন, ‘বছরটি যখন শুরু হয়েছিল তখন আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার শূন্যের কোঠায়, বিনিয়োগের হার দ্রুত গতিতে নিম্নগামী, বৈদেশিক মুদ্রার সংস্থান বিপজ্জনক অবস্থায় এবং আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্য অস্বাভাবিকভাবে বিঘ্নিত। তবুও সামগ্রিক জাতির প্রচেষ্টার ফলে এই বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৩.৮ ভাগে এসে দাঁড়াবে বলে আমরা আশা করছি।’

১৪. এম সাইদুজ্জামান, ১৯৮৪-৮৫, বুধবার, ২৭ জুন, ১৯৮৪
রাজস্ব আয় ৩,৪৬৫ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ২,৮০২. ৮০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৬৬২.২০ কোটি টাকা, এডিপি ৩৮৯৬ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৬,৬৯৮. ৮০ কোটি টাকা, মোট আয় ৩,৪৬৫ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৩,২৩৩. ৮০ কোটি টাকা।
আবুল মাল আব্দুল মুহিত অর্থমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়ে বিদেশ চলে গেছেন। নতুন অর্থ উপদেষ্টা হয়েছেন এম সাইদুজ্জামান। তাঁর দেওয়া বাজেটের উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে নতুন আয়কর আইন চালুর ঘোষণা। তবে বাজেট বক্তৃতার বড় অংশ জুড়েই ছিল ব্যাংক খাত। বিশেষ করে বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক, শিল্প ঋণ সংস্থা এবং ঋণের অর্থ ফেরত না দেওয়া নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছিলেন এম সাইদুজ্জামান।
১৫. এম সাইদুজ্জামান, ১৯৮৫-৮৬ অর্থবছর, রোববার, ৩০ জুন, ১৯৮৫
রাজস্ব আয় ৩,৭৫৪ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৩,৩১৩ কোটি টাকা, রাজস্ব উদ্বৃত্ত ৪৪১ কোটি টাকা, এডিপি ৩৮২৫.৭২ কোটি।
মোট বাজেট ৭,১৩৮. ৭২ কোটি টাকা, মোট আয় ৩,৭৫৪ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৩,৩৮৪. ৭২ কোটি টাকা।
এম সাইদুজ্জামান তখনো অর্থ উপদেষ্টা। লে. জেনারেল এইচ এম এরশাদ একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। বাজেট দেওয়া হয় তাঁরই কার্যালয়ে, অর্থবছরের একদম শেষ দিন। বাজেটে নতুন আয়করদাতাদের ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মূলধন বিনা প্রশ্নে মেনে নেওয়া ও নতুন শিল্প স্থাপনে করছাড় দেওয়া হয়। ১৯৮৫ সালের ২৪ সে নোয়াখালির চরাঞ্চলে ও সন্দ্বীপের উড়িরচরে ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে ১১ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল। বিশ্ববাসীর নজর ছিল উড়িরচড়ে। এর ৩৫ দিন পরে নতুন বাজেট দিয়েছিলেন অর্থ উপদেষ্টা।
১৬. এম সাইদুজ্জামান, ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছর, শুক্রবার, ২৭ জুন, ১৯৮৬
রাজস্ব আয় ৪,৪৬৮ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৩,৭৪০ কোটি টাকা, রাজস্ব উদ্বৃত্ত ৭২৮ কোটি টাকা, এডিপি ৪,৭৬৪ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৮,৫০৪ কোটি টাকা, মোট আয় ৪,৪৬৮ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৪,০৩৬ কোটি টাকা।
সামরিক শাসন তখনো বহাল। যদিও ১৯৮৬ সালের প্রথম দিনেই নতুন দল জাতীয় পার্টি আত্মপ্রকাশ করেছে এবং ৭ মে অনুষ্ঠিত হয়েছে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক লে. জেনারেল এইচ এম এরশাদের দল জাতীয় পার্টি। বাজেট দেওয়া হয় নতুন সংসদ অধিবেশন শুরুর আগেই। এম সাইদুজ্জামান তখনো অর্থ উপদেষ্টা এবং মুখ্য অর্থ সচিব।
সরকার অর্থ, ব্যাংকিং ও ঋণদান সংক্রান্ত বিষয়ে একটি জাতীয় কমিশন করেছিল ১৯৮৪ সালে। সেই কমিটি বেশ কিছু সুপারিশও করে। সে সব সুপারিশ অনুযায়ী সুদের হারে পরিবর্তন আনা হয়। সে সময় সরকারই সুদ হার নির্ধারণ করে দিত। অর্থ উপদেষ্টা জানান, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগকে আরও সহায়তা দিতেই দীর্ঘমেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আরেকটি উদ্দেশ্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের নিজস্ব সম্পদ ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া এবং ব্যাংক ঋণ অপব্যবহারের প্রবণতা কমানো।
১৭. এম সাইদুজ্জামান, ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন, ১৯৮৭
রাজস্ব আয় ৪,৯১৫ কোটি টাকা, ব্যয় ৪,৪৮১ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৪৩৪ কোটি, এডিপি ৫০৪৬ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৯,৫২৭ কোটি টাকা, মোট আয় ৪,৯১৫ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৪,৬১২ কোটি টাকা।
এম সাইদুজ্জামান এ বাজেটেও দেশের ব্যাংক খাত নিয়ে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন। ইতিমধ্যে স্বাধীনতার পর ১৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এ সময়ে দেশের ব্যাংক খাত নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই কয় বৎসরের ইতিহাস একদিকে অনেক সাফল্য, অন্যদিকে অনেক ব্যর্থতা ও হারিয়ে যাওয়া সুযোগের ইতিহাস।’
বাজেটে আবারও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়। বলা হয়, যেকোনো আয়কে অন্যান্য সূত্র হিসেবে দেখিয়ে ২০ শতাংশ কর দিলেই বিনা প্রশ্নে মেনে নেওয়া হবে।
১৮. মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মুনএম, বৃহস্পতিবার, ১৯৮৮-৮৯ অর্থবছর, ১৬ জুন, ১৯৮৮
রাজস্ব আয় ৫,৫৬৯ কোটি টাকা, ব্যয় ৫,২৫০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৩১৯ কোটি, এডিপি ৫৩১৫ কোটি।
মোট বাজেট ১০,৫৬৫ কোটি টাকা, মোট আয় ৫,৫৬৯ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৪,৯৯৬ কোটি টাকা।
আবারও অর্থমন্ত্রী বদল। মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছেন এম সাইদুজ্জামান। নতুন অর্থমন্ত্রী হন একজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, মেজর জেনারেল (অব) এম এ মুনএম।
চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বাজেটে উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল। কারণ হিসাবে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন যে দুর্যোগজনিত অস্বাভাবিক পরিস্থিতির প্রভাব কাটিয়ে উঠে নতুন বছর প্রবৃদ্ধির হারে প্রয়োজনীয় উন্নতির লক্ষণ ও পূর্বশর্ত দুটোই বিদ্যমান। কৃষি উৎপাদনের পুনরুজ্জীবনের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে ক্রয়ক্ষমতা ও কার্যকর চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্ধিত হারে শিল্প উৎপাদন ও আমদানি দুইই বাড়ার প্রয়োজন ও সম্ভাবনা স্পষ্ট। এর পর বাজেটে মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) ৬.১ শতাংশ বাড়বে বলে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
১৯. ওয়াহিদুল হক, ১৯৮৯-৯০ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন, ১৯৮৯
রাজস্ব আয় ৭,১৮০. ৫৩ কোটি, ব্যয় ৬,৯০০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ২৮০.৫৩ কোটি, এডিপি ৫৮০৩.০২ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ১২,৭০৩. ০২ কোটি টাকা, মোট আয় ৫,৫৬৯ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৫,৫২২. ৪৯ কোটি টাকা।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের একমাত্র পরিপূর্ণ অর্থনীতিবিদ অর্থমন্ত্রী হচ্ছেন ড. ওয়াহিদুল হক। অর্থনীতি তখন চরম সংকটে। পর পর দুই বন্যার কারণে অর্থনীতির সব খাতেই প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। বিশেষ করে ১৯৮৮ সালের বন্যা ছিল ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ বন্যা। এর সঙ্গে খেলাপি ঋণ তো আছেই। আর ছিল তীব্র রাজনৈতিক সংকট। সরকার বিরোধী আন্দোলনও জোরদার হচ্ছে। সব মিলিয়ে কঠিন এক সময়ে বাজেট দিতে হয়েছিল নতুন অর্থমন্ত্রীকে।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলেন, গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় যে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে, আদায়যোগ্য ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং খেলাপি ঋণের অঙ্ক অসহনীয় পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। এই পরিস্থিতি শিল্প ও কৃষি খাতে ঋণের ক্ষেত্রে বিরাজমান। ঋণ আদায়ের পরিমাণ পর্যাপ্ত না হলে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিজস্ব সম্পদ থেকে পুনরায় ঋণ দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।
২০. মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মুনএম, ১৯৯০-৯১ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১৪ জুন, ১৯৯০
রাজস্ব আয় ৭৫৬২.৭৮ কোটি, রাজস্ব ব্যয় ৭,৩০০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ২৬২.৭৮ কোটি, এডিপি ৫৬৬৮ কোটি।
মোট বাজেট ১২,৯৬৮ কোটি টাকা, মোট আয় ৭,৫৬২. ৭৮ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৫,৪০৫. ২২ কোটি টাকা।
এরশাদ আমলের শেষ বাজেট। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ব্যাপক পতনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েই চলে যান অর্থমন্ত্রী ড. ওয়াহিদুল হক। ফলে আবারও অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মুনএম। রাজনৈতিক পরিস্থিতি তখন টালমাটাল। অর্থনৈতিক সংকট চরমে। সরকারের আয় নেই। ফলে রাজস্ব আদায়ের দিকে মনোযোগ বেশি দিতে হয়েছিল।
অর্থমন্ত্রী রাজস্ব আয় কম হওয়ার প্রসঙ্গটি উত্থাপন করে বলেছিলেন, ‘দেশের আহরিত কর ও মোট জাতীয় উৎপাদনের আনুপাতিক হার বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় এখনো খুবই নিম্ন পর্যায়ে। আবার সাধারণভাবে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের অপ্রতুলতার কারণে স্বতপ্রবৃত্ত ব্যাংক বহির্ভূত অর্থলগ্নির সুযোগও এখানে একেবারেই সীমিত।’ এ সব বিবেচনা করেই অর্থমন্ত্রী জানান, সরকার আগামী কয়েক বছরে সরকারি খাতে সঞ্চয় বাড়াতে মোট রাজস্ব ও মোট জাতীয় উৎপাদনের অনুপাত প্রতি বছর অন্ততপক্ষে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

২১. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৯১-৯২ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ১৯৯১
রাজস্ব আয় ৮,৫০৩. ০৯ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৮,০৮৩. ২৫ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৪১০.৮৪ কোটি, এডিপি ৭৫০০ কোটি।
মোট বাজেট ১৫,৫৮৩. ২৫ কোটি টাকা, মোট আয় ৮,৫০৩. ০৯ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৭,০৮০. ১৬ কোটি টাকা।
এরশাদের পতনের পরে নির্বাচন জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসীন বিএনপির অর্থমন্ত্রী হন এম সাইফুর রহমান। এ সময় তিনি আবগারি শুল্কের বিকল্প হিসেবে ১৯৯১ সালের ১ জুলাই থেকে মূল্য সংযোজন করব্যবস্থা প্রবর্তন করার কথা জানান।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ঋণ ব্যবস্থাপনা বা অর্থ খাতে দীর্ঘদিন থেকে নৈরাজ্য বিরাজমান। বিপুল পরিমাণ ঋণ অনাদায়যোগ্য হয়ে পড়েছে। ঋণ ব্যবস্থাপনায় এই নৈরাজ্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে। ঋণ আদায় না হওয়ার ফলে অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানে সম্পদের অভাব দেখা দিয়েছে এবং তাঁরা নতুন ঋণ দিতে প্রায় অক্ষম। এর ফলে নতুন শিল্প উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীরা ঋণ নিয়ে তাঁদের কর্মক্ষমতা যথাযথ ব্যবহার করতে পারছেন না। সরকার এই ব্যবস্থা প্রতিকারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
২২. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৯২-৯৩ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন ১৯৯২
রাজস্ব আয় ১০,৫৫৪ কোটি টাকা, ব্যয় ৮,৫৫০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ২০০৪ কোটি টাকা, এডিপি ৮৬৫০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ১৭,২০০ কোটি টাকা, মোট আয় ১০,৫৫৪ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৬,৬৪৬ কোটি টাকা।
কাঠামোগত সংস্কারের ওপর গুরুত্ব। বাণিজ্য উদার করার দিকেই ছিল বেশি মনোযোগ। নেওয়া হয় নমনীয় বিনিময় হার নীতি।
২৩. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ১৯৯৩
রাজস্ব আয় ১২,৩৩৫ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৯,৩০০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৩,০৩৫ কোটি, এডিপি ৯,৭৫০ কোটি।
মোট বাজেট ১৯,০৫০ কোটি টাকা, মোট আয় ১২,৩৩৫ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৬,৭১৫ কোটি টাকা।
বাজেটকে ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, যার উদ্দেশ্য মধ্য থেকে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্থায়ী ভিত্তি রচনা।
২৪. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ১৯৯৪
রাজস্ব আয় ১৩,৬৩৭ কোটি টাকা, ব্যয় ৯,৯৪৮ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৩,৬৮৯ কোটি, এডিপি ১১,০০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ২০,৯৪৮ কোটি টাকা, মোট আয় ১৩,৬৩৭ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৭,৩১১ কোটি টাকা।
যমুনা সেতুর জন্য আরোপিত সব সারচার্জ ও লেভি তুলে নেওয়া হয়। ১৯৮৫ সাল থেকে এই কর চালু হলেও আগের সরকার অর্থ অন্য খাতে ব্যয় করেছিল।
২৫. মো. সাইফুর রহমান, ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন, ১৯৯৫
রাজস্ব আয় ১৫,৪৫০ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ১১,০৭০ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৪,৩৮০ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ১২,১০০ কোটি।
মোট বাজেট ২৪,৭০৭ কোটি টাকা, মোট আয় ১৫,৪৫০ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৯,২৫৭ কোটি টাকা।
কয়েক বছর ধরেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যয় ছাড়াও এডিপিবহির্ভূত প্রকল্প, কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচিসহ নানা ধরনের ব্যয় উন্নয়ন বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করে মোট বাজেট দেখানো শুরু হয়। তবে এই অর্থবছরে হিসাবটি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়। যেমন এডিপির বাইরে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি হিসেবে বরাদ্দ রাখা হয় আরও ৭০৫ কোটি টাকা। ফলে মোট বাজেট ব্যয়ও বেড়ে যায়।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে প্রবৃদ্ধি অর্জনের চাবিকাঠি উল্লেখ করা হয়। কেননা, বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম।

২৬. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ১৯৯৬-৯৭, রোববার, ২৮ জুলাই, ১৯৯৬
রাজস্ব আয় ১৭,১২০ কোটি টাকা, ব্যয় ১২,১০৩ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৫,০১৭ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ১২,৫০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ২৫,২৫৮ কোটি টাকা, মোট আয় ১৭,১২০ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৮,১৩৮ কোটি টাকা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ২০ জুন, বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দিয়েছিলেন। বাজেটের মূল আকার তিনি যা ঠিক করেছিলেন, পরে তা আর বদল করেননি পরবর্তী অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। বাজেটে বাজেটে পাঁচ বছরের মধ্যে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং ১০ বছরের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের জাতীয় লক্ষ্য নির্ধারণ।
২৭. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ১৯৯৭-৯৮, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ১৯৯৭
রাজস্ব আয় ১৯,৬২৪ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ১৪,৫৪৪ কোটি টাকা, উদ্বৃত্ত ৫,০৮০ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ১২,৮০০ কোটি।
মোট বাজেট ২৭,৭৮৬ কোটি টাকা, মোট আয় ১৯,৬২৪ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৮,১৬২ কোটি টাকা।
দেশে প্রথমবারের মতো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু করা হয়, বয়স্ক ভাতা দিতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
২৮. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ১৯৯৮
রাজস্ব আয় ২০,৭৭৬ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ১৫,৯৩৭ কোটি টাকা, রাজস্ব উদ্বৃত্ত ৪,৮৩৯ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ১৩,৬০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৩০,০৯৬ কোটি টাকা, মোট আয় ২০,৭৭৬ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৯,৩২০ কোটি টাকা।
শিল্প খাতে ও শেয়ারবাজারে কালোটাকা বিনিয়োগের সুবিধা দিয়েছিলেন। এ জন্য কর দিতে হবে সাড়ে ৭ শতাংশ।
২৯. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ১৯৯৯
রাজস্ব আয় ২৪,১৫১ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ১৭,৮০০ কোটি টাকা, রাজস্ব উদ্বৃত্ত ৬,৩৫১ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ১৫,৫০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৩৬,১৭৮ কোটি টাকা, মোট আয় ২৪,১৫১ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১২,০২৭ কোটি টাকা।
অভিনব কিছু উপায়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ। বিলাসবহুল গাড়ি কিনে ৫ শতাংশ কর দিলেই কোনো প্রশ্ন করা হবে না।
৩০. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ২০০০-০১ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০০০
রাজস্ব আয় ২৪,১৯৮ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ১৯,৬৩৩ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ১৭,৫০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৪২,৮৫৯ কোটি টাকা, মোট আয় ২৪,১৯৮ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১৮,৬৬১ কোটি টাকা।
সফটওয়্যার শিল্প, কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য ১০০ কোটি টাকার সম মূলধনি উন্নয়ন তহবিল গঠন, আবারও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ।
৩১. শাহ এ এম এস কিবরিয়া, ২০০১-০২ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০০১
রাজস্ব আয় ২৭,২৩৯ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ২২,০৩৮ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ১৯,০০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৪৪,৭৬৫ কোটি টাকা, মোট আয় ২৭,২৩৯ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১৭,৫২৬ কোটি টাকা।
শুল্কায়নে প্রাক-জাহাজিকরণ পরিদর্শন (পিএসআই) তিন বছরের জন্য বাধ্যতামূলক রাখা হয় এবং লাভ বা লোকসান যা-ই হোক, কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়।
৩২. এম সাইফুর রহমান, ২০০২-০৩ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৬ জুন, ২০০২
রাজস্ব আয় ৩৩,০৮৪ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ২৩,৯৭২ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ১৯,২০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৪৪,৮৫৪ কোটি টাকা, মোট আয় ৩৩,০৮৪ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১১,৭৭০ কোটি টাকা।
আগের মেয়াদে কালোটাকা সাদা করা সুযোগকে ‘গণতান্ত্রিক ও গোষ্ঠী স্বার্থপ্রসূত বৈষম্যমূলক করনীতি’ বলা হলেও এবার শুরু থেকেই কালোটাকা সাদার সুযোগ।
৩৩. এম সাইফুর রহমান, ২০০৩-০৪ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০০৩
রাজস্ব আয় ৩৬,১৭১ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ২৮,৯৬৯ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ২০,৩০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৫১,৯৮০ কোটি টাকা, মোট আয় ৩৬,১৭১ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১৫,৮০৯ কোটি টাকা।
কয়েকটি ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। নির্বাচনে প্রার্থী হলে বা সরকারি দরপত্রে অংশ নিলে রিটার্ন দিতেই হবে।
৩৪. এম সাইফুর রহমান, ২০০৪-০৫ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০০৪
রাজস্ব আয় ৪১,৩০০ কোটি টাকা, ব্যয় ৩৪,৫৬৫ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ২২,০০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৫৭,২৪৮ কোটি টাকা, মোট আয় ৪১,৩০০ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১৫,৯৪৮ কোটি টাকা।
টিআইএন থাকলেই যথাসময়ে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান সম্পর্কিত তথ্য দেওয়াও বাধ্যতামূলক করা হয়।
৩৫. এম সাইফুর রহমান, ২০০৫-০৬ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০০৫
আয় ৪৫,৭২২ কোটি টাকা, ব্যয় ৩৫,৫২৩ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ২৪,৫০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৬৪,৩৮৩ কোটি টাকা, মোট আয় ৪৫,৭২২ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১৮,৬৬১ কোটি টাকা।
কালোটাকা সাদা করার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা আবার অব্যাহত রাখা হয়। এ জন্য দিতে হবে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে কর।
৩৬. এম সাইফুর রহমান, ২০০৬-০৭ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০০৬
আয় ৫২,৫৪২ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৪২,২৮৬ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ২৬,০০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৬৯,৭৪০ কোটি টাকা, মোট আয় ৫২,৫৪২ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ১৭,১৯৮ কোটি টাকা।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে ‘বিশৃঙ্খল অর্থনীতিকে সুশৃঙ্খল অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে’ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচির কথা উল্লেখ।
৩৭. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম, ২০০৭-০৮, বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০০৭
রাজস্ব আয় ৫৭,৩০১ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৫২,৯০০ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ২৬,৫০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৮৭,১৩৭ কোটি টাকা, মোট আয় ৫৭,৩০১ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ২৯,৮৩৬ কোটি টাকা।
বাজেটে ভ্যাটের আওতা বাড়ানো হয়, করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকা করা হয়। বাতিল করা হয় ৪ শতাংশ হারের অবকাঠামো উন্নয়ন সারচার্জ।
৩৮. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম, ২০০৮-০৯ অর্থবছর, সোমবার, ৯ জুন, ২০০৮
রাজস্ব আয় ৬৯,৩৮২ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৬০,৭৫৮ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ২৫,৬০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৯৯,৯৬২ কোটি টাকা, মোট আয় ৭৫,৭২৮ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ২৪,২৩৪ কোটি টাকা।
স্থানীয় শিল্প সংরক্ষণে শুল্ককাঠামোয় পরিবর্তন আনা হয়, নতুন পদ্ধতির কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়, কমানো হয় করপোরেট কর হার।
৩৯. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০০৯-২০ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০০৯
রাজস্ব আয় ৭৯,৪৬১ কোটি টাকা, ব্যয় ৬৯,৫০৪ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ৩০,৫০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ১,১৩৮. ১৯ কোটি টাকা, মোট আয় ৭৯,৪৬১ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ২৯,২২৮ কোটি টাকা।
১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে পুঁজিবাজার, বেশ কিছু শিল্প ও ভৌত অবকাঠামো খাতে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ এবং ফ্ল্যাট ক্রয় ও নিজের বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে আয়ের উৎস বিনা প্রশ্নে মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়।
৪০. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১০-১১ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০১০
রাজস্ব আয় ৯২,৮৪৭ কোটি টাকা, রাজস্ব ব্যয় ৭৫,২৩০ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ৩৮,৫০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ১,৩২, ১৭০ কোটি টাকা, মোট আয় ৯২,৮৪৭ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৩৪,৫১৪ কোটি টাকা।
বহুল আলোচিত সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) শুরু করা আশা, নতুন করে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপরও কর বসানো হয়।
৪১. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১১-১২ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০১১
আয় ১,১৮, ৩৭৫ কোটি টাকা, ব্যয় ৮৭,৮৫১ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ৪৬,০০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ১,৬৩, ৫৮৯ কোটি টাকা, মোট আয় ১,১৮, ৩৭৫ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৪৫,২০৪ কোটি টাকা।
নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও আয়কর আইনের খসড়া অনুমোদন এবং সড়ক, সেতু ইত্যাদি অবকাঠামোর ক্ষেত্রে কর অবকাশ সুবিধা ১০ বছর করার প্রস্তাব।

৪২. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১২-১৩ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১২
আয় ১,৩৯, ৬৭০ কোটি, ব্যয় ৯৯,৪৯৬ কোটি, উন্নয়ন ব্যয় ৫৫,০০০ কোটি টাকা
মোট বাজেট ১,৯১, ৭৩৮ কোটি টাকা, মোট আয় ১,১৮, ৩৭৫ কোটি টাকা, মোট ঘাটতি ৫২,০৬৮ কোটি টাকা।
কথা বলার ওপর কর আরোপ। নতুন অর্থবছর থেকে মুঠোফোনের বিলের ওপর ২ শতাংশ হারে সারচার্জ দেওয়ার প্রস্তাব।
৪৩. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৩-১৪ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৬ জুন, ২০১৩
আয় ১,৬৭, ৪৫৯ কোটি টাকা, ব্যয় ১,১৩, ৪৭১, উন্নয়ন ব্যয় ৬৫,৮৭০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ২,২২, ৪৯১ কোটি টাকা, মোট আয় ১,৭৪, ১২৯ কোটি টাকা, সামগ্রিক ঘাটতি ৪৮,৩৬২ কোটি।
করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় উন্নীত, কর অবকাশ সুবিধাও দুই বছর বৃদ্ধি।
৪৪. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৪-১৫ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০১৪
রাজস্ব আয় ১,৮২, ৯৫৪ কোটি, ব্যয় ১,২৮, ২৩১ কোটি, উন্নয়ন ব্যয় ৮০,৩১৫ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ২,৫০, ৫০৬ কোটি টাকা, মোট আয় ১,৮৯, ১৬০, সামগ্রিক ঘাটতি ৬১,৩৪১ কোটি টাকা।
৪৪ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি আয় থাকলে আয়কর দিতে হবে ৩০ শতাংশ, আগে ছিল ২৫ শতাংশ, ২৫ হাজার টাকার বেশি বাড়িভাড়া দিতে হবে ব্যাংকের মাধ্যমে।
৪৫. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৫-১৬, বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০১৫
রাজস্ব আয় ২,০৮, ৪৪৩ কোটি, ব্যয় ১,৬৪, ৫৭১ কোটি, উন্নয়ন ব্যয় ৯৭,০০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ২,৯৫, ১০০ কোটি টাকা, মোট আয় ২,১৪, ২৪৩, সামগ্রিক ঘাটতি ৮০,৮৫৭ কোটি টাকা।
করমুক্ত আয়ের সীমা ৩০ হাজার টাকা বাড়িয়ে আড়াই লাখ টাকা, ধনীদের সারচার্জ দিতে হবে সোয়া ২ কোটি টাকার সম্পদ থাকলে, পোশাক খাতে ১ শতাংশ হারে উৎসে কর আরোপ।
৪৬. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৬-১৭ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০১৬
রাজস্ব আয় ২,৪২, ৭৫২ কোটি, ব্যয় ১,৮৮, ৯৬৬ কোটি, উন্নয়ন ব্যয় ১,১০, ০২৭ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৩,৪০, ৬০৫ কোটি টাকা, মোট আয় ২,৪৮, ২৬৮ কোটি টাকা, সামগ্রিক ঘাটতি ৯২,৩৩৭ কোটি টাকা।
আয়কর দাখিলের জন্য একটি অপরিবর্তনীয় সময়সীমা ঠিক করা হয় ৩০ অক্টোবর। এই দিন কর দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়
৪৭. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৭-১৮ অর্থবছর, ১ জুন, বৃহস্পতিবার, ২০১৭
রাজস্ব আয় ২,৮৭, ৯৯১ কোটি, ব্যয় ২,০৭, ১৩৮ কোটি, উন্নয়ন ব্যয় ১,৫৩, ৩৩১ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৪,০০, ২৬৬ কোটি টাকা, মোট আয় ২,৯৩, ৪৯৪ কোটি টাকা, সামগ্রিক ঘাটতি ১,০৬, ৭৭০ কোটি টাকা।
নতুন মূল্য সংযোজন কর আইন দুই বছরের জন্য স্থগিত, এক লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক আমানতের ওপরে আবগারি শুল্ক ছাড় বহাল রাখা হয়েছে।
৪৮. আবুল মাল আবদুল মুহিত, ২০১৮-১৯ অর্থবছর, বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১৮
আয় ৩,৩৯, ২৮০ কোটি, ব্যয় ২,৫১, ৬৬৮ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ১,৭৩, ০০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৪,৬৪, ৫৭৩ কোটি টাকা, মোট আয় ৩,৪৩, ৩৩১ কোটি টাকা, সামগ্রিক ঘাটতি ১,২১, ২৪২ কোটি টাকা।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ৩৭ শতাংশে নির্ধারণ, দুটি গাড়ি ও ৮ হাজার বর্গফুট আয়তনের গৃহসম্পত্তি থাকলে দিতে হবে সারচার্জ।

৪৯. আ হ ম মুস্তফা কামাল, ২০১৯, ২০১৯-২০,১৩ জুন, বৃহস্পতিবার, ২০১৯
রাজস্ব আয় ৩,৭৭, ৮১০, ব্যয় ২,৭৭, ৯৩৪, উন্নয়ন কর্মসূচি ২,০২, ৭২১ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৫,২৩, ১৯০ কোটি টাকা, মোট আয় ৩,৮১, ৯৭৮ কোটি টাকা, সামগ্রিক ঘাটতি ১,৪১, ২১২ কোটি টাকা।
তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য স্টার্টআপ তহবিলে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ, প্রবাসী আয়ে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিতে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
৫০. আ হ ম মুস্তফা কামাল, ২০২০, ২০২০-২১, বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০২০
রাজস্ব আয় ৩,৭৮, ০০০ কোটি, ব্যয় ৩,০২, ৫৪৭ কোটি, উন্নয়ন কর্মসূচি ২,০৫, ১৪৫ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৫,৬৮০০০ কোটি টাকা, মোট আয় ৩,৭৮, ০০০ কোটি টাকা, সামগ্রিক ঘাটতি ১,৯০, ০০০ কোটি টাকা।
করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে জরুরি স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের উল্লেখ।
৫১. আ হ ম মুস্তফা কামাল, ২০২১-২২ অর্থবছর, ৩ জুন, বৃহস্পতিবার, ২০২১
রাজস্ব আয় ৩,৮৯, ০০০ কোটি টাকা, ব্যয় ৩,২৮, ৮৪০ কোটি, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২,২৫, ৩২৪ কোটি টাকা।
মোট ব্যয় ৬,০৩, ৬৮১ কোটি টাকা, মোট আয় ৩,৮৯, ০০০ কোটি টাকা, সামগ্রিক ঘাটতি ২,১৪, ৬৮১ কোটি টাকা।
২ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনলে টিআইএন বাধ্যতামূলক, বাড়ির নকশা অনুমোদন করতেও লাগবে টিআইএন, ন্যূনতম সারচার্জ প্রথাও বিলোপ।
৫২. আ হ ম মুস্তফা কামাল, ২০২২-২৩ অর্থবছর, ৯ জুন, বৃহস্পতিবার, ২০২২
রাজস্ব আয় ৪,৩৩, ০০০ কোটি টাকা, ব্যয় ৪,৩১, ৯৯৮ কোটি, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২,৪৬, ০৬৬ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৬,৭৮, ০৬৪ কোটি টাকা, মোট আয় ৪,৩৩, ০০০ কোটি টাকা, সামগ্রিক ঘাটতি ২,৪৫, ০৬৪ কোটি টাকা।
ইতিহাসে প্রথম পাচার করা অর্থ বা সম্পদের ঘোষণা দিয়ে তা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, কেউ যদি বিদেশ থেকে অর্থ আনেন, তাহলে ৭ শতাংশ কর দিলেই হবে। আর বিদেশে অবস্থিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে না আনলে ওই সম্পদের মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ এবং বিদেশে অবস্থিত অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে না আনলে এর ওপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।
৫৩. আ হ ম মুস্তফা কামাল, ২০২৩-২৪ অর্থবছর, ১ জুন, বৃহস্পতিবার, ২০২৩
রাজস্ব আয় ৫,০৩, ৯০০ কোটি টাকা, ব্যয় ৪,৭৫, ২৮১ কোটি, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২,৬৩, ০০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৭,৬১, ৭৮৫ কোটি টাকা, মোট আয় ৫,০৩, ৯০০ কোটি টাকা, সামগ্রিক ঘাটতি ২,৬১, ৭৮৫ কোটি টাকা।
মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় ব্যক্তিশ্রেণির ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ ন্যূনতম করসীমা হবে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। আবার সরকারি সেবা নিতে হলে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা কর দিতেই হবে, করযোগ্য আয় না থাকলেও।
৫৪. আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ২০২৪-২৫ অর্থবছর, ৬ জুন, বৃহস্পতিবার, ২০২৪
রাজস্ব আয় ৫,৪৫, ৪০০ কোটি টাকা, ব্যয় ৫,০৬, ৯৭১ কোটি, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২,৬৫, ০০০ কোটি টাকা।
মোট বাজেট ৭,৯৭, ০০০ কোটি টাকা, মোট আয় ৫,৪৫, ৪০০ কোটি টাকা, সামগ্রিক ঘাটতি ২,৫৬, ০০০ কোটি টাকা।
বাজেট পেশের দুই মাসের মধ্যে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ফলে বাজেট বাস্তবায়নের দায়িত্ব পড়ে অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে। বাজেটে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে উন্নয়ন ব্যয় সংযত করা হয়। অনেক প্রকল্পের বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেওয়া হয়।