Image description

কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না’ বাংলা ভাষার বিখ্যাত আর বহুল প্রচলিত এই প্রবাদের মতই যেনো এখন ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবস্থা। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগকে লেলিয়ে দেওয়া কাউয়া কাদের খ্যাত ওবায়দুল কাদের এবার প্রকাশ্যে এসেছেন। সম্প্রতি তিনি ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। আর সেখানেই তুলে ধরেছেন একের পর এক বানোয়াট সব কল্পকাহিনী। নেটিজেনদের ভাষায় মিথ্যার পসরা সাজিয়ে বসেছেন কাউয়া কাদের। আবার কারো কারো মতে হলিউড কিংবা দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার হুবহু স্ক্রিপ্ট এটি।

জুলাই অভ্যুত্থানে প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়ালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন, ৫ আগস্ট হাসিনা পালানোর পর তার সংসদ ভবনের বাসা ছেড়ে পাশের বাসায় আশ্রয় নেওয়ার কথা। এমনকি তিনি এটিও বলেছেন সেই বাসাতেও নাকি তার ওপর আক্রমণ করেছিলো গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা। এক পর্যায়ে ভয়ে স্ত্রীসহ ৫ ঘন্টা বাথরুমেই লুকিয়ে ছিলেন তিনি। এরপর নাকি কাউয়া কাদেরের সাথে তারা আক্রমণাত্মক ভঙ্গি থেকে শান্ত হয়ে সেল্ফি তোলেন এবং নিজেদের শার্ট পড়িয়ে কাদেরকে কোথাও একটা নিয়ে যান। তার এই কথাটি নিয়ে রীতিমতো হাস্যরসে ফেটে পড়ছে নেটদুনিয়া। কারণ, জনশ্রুতি রয়েছে হাসিনা পালানোর পর ওবায়দুল কাদেরকে বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টিত এলাকায় আশ্রয় দেওয়া হয়। এমনকি সেখানে নিরাপদে থাকার পর তাদের নিরাপত্তাতেই সেইফ এক্সিটের ব্যবস্থা করা হয় কাদেরের জন্য।

নেটিজেনরা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাদের মতে ওবায়দুল কাদের ছিলো সব কিছুর নিয়ন্ত্রক। ২৪ এর ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র জনতার ওপর নিপীড়নকারী কাউয়া কাদের সবকিছ্ইু জানতো, অবগত ছিলো। সুতরাং তার অন্য বাসায় লুকিয়ে থাকার বিষয়টি হাস্যকর। তাহমিনা তন্বী নামের একজন ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে হলিউড মুভির সাদৃশ্য গল্প আখ্যা দিয়ে ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘বাহ কাদের কাকু। লজ্জা লাগে না? এভাবে মুভির গল্প শোনাতে? আপনি ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের অন্যতম নীতি নির্ধারক ছিলেন আর এখন আপনি বলছেন অন্য বাসায় পালিয়ে ছিলেন? জনতা জেনে গেছে আপনি কোথায় ছিলেন। আপনার ওপর আক্রমণ করলো আর এরপরই তারা শান্ত হয়ে আবার সেল্ফি উঠালো? এগুলো চরম হাস্যকর কথাবার্তা।’

ফারজানা কবির নামের আরেকজন ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে সাউথ ইন্ডিয়ান কোন মুভির গল্প এটি। আপনার ওপর যারা আক্রমণ করলো এক নিমিষেই তারা আবার আপনার আপন হয়ে গেলো? তো এতদিন তাদের নিয়ে কোন প্রশংসা করেননি কেন? এতদিন কেন আত্মগোপনে ছিলেন আপনি? সামনে কেন আসেননি?’এদিকে হঠাৎ করে ওবায়দুল কাদেরের আত্মগোপন থেকে বেরিয়ে মিডিয়ার সামনে কথা বলাকে নতুন ষড়যন্ত্রের বীজ হিসেবেই আখ্যায়িত করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে কাদের এতদিন চেষ্টা করেছে বিভিন্নভাবে নিজেকে মৃত প্রমাণ করার। একের পর এক গুজব ছড়িয়েছে তার মৃত্যু নিয়ে। সেই ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে এবার মিডিয়ার সামনে এসে নতুন কল্পকাহিনী তুলে ধরলেন।

অন্যদিকে মিডিয়ার সামনে এসেও ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে প্রায় দেড় হাজার ছাত্র জনতা হত্যার মাষ্টারমাইন্ড কাদের একবারও ক্ষমা চাইলেন না জাতির কাছে। তার নেত্রী ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদাঙ্কু অনুসরণ করেই নির্লজ্জ বেহায়ার মতো উল্টো উদ্ভট বানোয়াট সব কাহিনী শোনালেন জনতাকে। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের হাসিনা-কাদেররা ভাবে বাংলার সাধারণ মানুষ বোধহয় অন্ধ, তারা যা করবে তা দেখেও চোখ বুজে থাকবে। দিন পাল্টেছে সময়ও বদলেছে এখন, ওদের বোঝা উচিত। বিগত ১৬ বছর আর ২৪ এ শেষ বেলায় করা তাদের কৃতকর্মের জন্য আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়েছে। এরপরও কাদেরের বক্তব্যে স্পষ্ট যে কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্যা হয়েছে নেতাকর্মীরা তারপরও পরিবর্তন হয়নি তাদের আচরণে।