Image description
 

ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করতে চাইলে ইসরায়েলের সামনে সবচেয়ে বড় বাধা—ইরানের ভূগর্ভস্থ ঘাঁটিগুলো। কয়েক দশক ধরে গড়ে তোলা এসব বাঙ্কার ও টানেল ইরানের পরমাণু কর্মসূচির মেরুদণ্ড। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ‘ফোর্দো’ পারমাণবিক কেন্দ্রটি কোম শহরের অদূরে, পাহাড়ের ২৬০ থেকে ৩০০ ফুট নিচে অবস্থিত। এখানে উন্নত সেন্ট্রিফিউজ ও ইউরেনিয়াম সংরক্ষিত রয়েছে, যা দিয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে ইরান। এই স্থাপনাগুলো ইরানের পারমাণবিক সংস্থা AEOI পরিচালনা করে এবং সুরক্ষা দেয় রেভল্যুশনারি গার্ড IRGC।

ইসরায়েলের লক্ষ্য—এই কেন্দ্রগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করা। কিন্তু সমস্যার জায়গা হলো, ইসরায়েলের হাতে এমন কোনো অস্ত্র নেই যা এত গভীর ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি ধ্বংস করতে পারে।

যেসব বাঙ্কার বাস্টার বোমা ইসরায়েলের হাতে রয়েছে, সেগুলো এত গভীরে প্রবেশ করতে অক্ষম। এই ধরনের লক্ষ্যে আঘাত হানতে প্রয়োজন মার্কিন নির্মিত GBU-57 বাঙ্কার বাস্টার বোমা—বিশ্বের একমাত্র অস্ত্র যা প্রায় ২০০ ফুট গভীরের সুরক্ষিত কংক্রিট ও পাথরের স্তর ভেদ করে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। ১৩,৬০০ পাউন্ড ওজনের এই বোমা নির্ধারিত স্তরে পৌঁছে বিস্ফোরিত হয় এবং একাধিক বোমা প্রয়োগে আরও গভীরে আঘাত হানতে পারে—একপ্রকার ভূগর্ভস্থ ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে। মনে করা হয়, এই অস্ত্র বিশেষভাবে ইরানের বাঙ্কার ধ্বংসের লক্ষ্যেই তৈরি।

 

তাই প্রশ্ন উঠছে—যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ইরানকে আদৌ ঠেকাতে পারবে কি ইসরায়েল?

 

যদি ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য হয় শুধু ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা, তবে স্পষ্টভাবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া তা সম্ভব নয়। মার্কিন সামরিক সহায়তা ও প্রযুক্তি ছাড়া ইরানকে পুরোপুরি স্তব্ধ করা ইসরায়েলের একার পক্ষে অসম্ভব।

আর যদি দীর্ঘমেয়াদে ইরানে সরকার পরিবর্তন করে একটি পশ্চিমমুখী প্রশাসন বসানোই লক্ষ্য হয়, তবে কেবল বিমান হামলা নয়, প্রয়োজন হতে পারে সরাসরি স্থল অভিযান—যার জন্য আরও গভীর সামরিক ও কূটনৈতিক জোট প্রয়োজন হবে।

সুতরাং, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চাইলে ইসরায়েল একা নয়, তাকে যুক্তরাষ্ট্রকেও আনতে হবে সম্মুখ যুদ্ধে।