জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে প্রক্টোরিয়াল টিমের অভিযানে ৯ শিক্ষার্থীকে মদ্যপ অবস্থায় আটক করার পর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরবন নামক স্থান থেকে অভিযান চালিয়ে ৯ শিক্ষার্থীকে আটক করেন প্রক্টোরিয়াল টিম। এর মধ্যে ৫ জন মেয়ে এবং ৪ জন ছেলে শিক্ষার্থী। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা এবং নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গভীর জঙ্গলে বারবিকিউ পার্টি করতে দেখা যায়।আটকরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের প্রিয়ন্তি নাগ, পরিসংখ্যান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উপজাতি শিক্ষার্থী থোয়াইনু প্রু এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের খেংচেং ফু মারমা। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছেন- উত্তরা ইউনিভার্সিটির আফরিন আশা এবং প্রাইম নার্সিং কলেজের মাসুই মারমা।
এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী হ্রুই মুইং স্যাং ও কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন, তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের ৫১ ব্যাচের মো. শিপন হোসেন ও সতীর্থ বিশ্বাস বাঁধনকে আটক করা হয়। আটকক শিক্ষার্থীদের জাবির শিপন থাকেন কামালউদ্দিন হলের ২৪৪ নম্বর কক্ষে, সতীর্থ বিশ্বাস আল-বেরুনী হলে, প্রিয়ন্তি ঢাবির রোকেয়া হলে এবং আফরিন নবীনগরে নিজ বাড়িতে। এদিকে থোয়াইনুপ্রু ঢাবির জগন্নাথ হলে ও খেংচেংফ্রু মারমা রোকেয়া হলে থাকেন।মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি টিভি ফুটেজে তাদের গতিবিধি অনুসরণ করে সুন্দরবন নামক স্থান থেকে দেশি, বিদেশি দুই বোতল মদসহ তাদের আটক করেন প্রক্টোরিয়াল টিম। এসময় তারা দুইটি জায়গায় গোল হয়ে বসে মদ্যপ অবস্থায় পায় প্রক্টোরিয়াল টিম। তবে এদের মধ্যে একটি গ্রুপ মদ পানের কথা স্বীকার করলেও অপর গ্রুপ শুধু মদ বাহনের কথা স্বীকার করেন। এসময় প্রক্টোরিয়াল টিমের নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম।
আটকরা জানান, জাবি শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণে বহিরাগত শিক্ষার্থীরা মদ নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এরপর নিরিবিলি জায়গায় (সুন্দরবন) আড্ডা জমিয়ে মদ পান করেন তারা। আটকদের মধ্যে তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের মো. শিপন হোসেন বলেন, ‘আমি ও আমার ফ্রেন্ডরা মিলে নতুন বছর উপলক্ষ্যে আগুন জ্বালিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম। প্রক্টরিয়াল বডি আমাদের ধরে নিয়ে আসে। যখন ধরা হয় তখন আমাদের সাথে অ্যালকোহল ছিল। আমাদের সঙ্গে যাদের আটক করা হয়েছে তারা আমাদের গেস্ট। তাদের বাসা নবীনগর।’ এসময় মদ পানের কথা স্বীকার করেন তারা।প্রক্টোরিয়াল টিম জানায়, ‘তদারকি করতেই আজকে রাতে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করি এবং শিক্ষার্থীদের বাইরে কোথাও পেলে তাদের হলে ফিরে যেতে বলি। আমরা সুন্দরবন এরিয়ায় গেলে সেখানে শিক্ষার্থীদের দুটি গ্রুপকে আমরা মাদক সেবনরত অবস্থায় ধরতে সক্ষম হই।’
এর আগে গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সকল প্রকারের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৩১ ডিসেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব হলে রাত ১০টার মাঝেই ফেরার নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং বহিরাগত সকল অতিথিদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।