
নারী সংস্কার কমিশনের সাম্প্রতিক সুপারিশমালাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের বিভিন্ন মহল। এই সুপারিশগুলোকে সমাজ, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থি আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উত্তরবঙ্গ নারী জাগরণ মঞ্চের বিশিষ্ট নাগরিক ও নারী অধিকারকর্মীরা।
এ উপলক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জয়পুরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘উত্তরবঙ্গ নারী জাগরণ মঞ্চ, জয়পুরহাট জেলা’ আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ নারী জাগরণ মঞ্চের সভাপতি নাজনীন নহর, সিনিয়র সহ সভাপতি শাহনাজ পারভীন, সহ সভাপতি তাহরীমা কামরুন,সেক্রেটারি সাবেকুন নহর, সদস্য আকরিমা, রিম্মি খাতুন প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত অন্তত ২০টি সুপারিশ দেশের বিদ্যমান সমাজব্যবস্থা, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। তারা অভিযোগ করেন, এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হলে সমাজে বিশৃঙ্খলা ও বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়নকে বাধাগ্রস্ত করবে।
তারা বলেন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে যদি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করে বিদেশি চিন্তা ও রীতি অনুকরণ করা হয়, তবে তা দেশের নারী সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হবে।” তারা সুপারিশমালার পূঃমূল্যায়নের দাবি জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপট, পারিবারিক কাঠামো এবং মূল্যবোধকে কেন্দ্র করে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
শুধু স্লোগানে নারীর মুক্তি সম্ভব নয়। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কয়েকজন বক্তা দাবি করেন, সুপারিশগুলোর পেছনে ‘বিদেশি প্রভাব’ কাজ করছে এবং সেগুলোর মধ্যে কিছু কিছু সুপারিশ এমন রয়েছে, যা পারিবারিক সম্পর্ক, নারী-পুরুষের পারস্পরিক সহযোগিতার ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় অনুশাসনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
গোলটেবিল আলোচনার শেষে আয়োজক সংগঠন ‘উত্তরবঙ্গ নারী জাগরণ মঞ্চ’ এক বিবৃতির মাধ্যমে জানান, তারা এই সুপারিশ বাতিলের দাবিতে শিগগিরই বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য নারী সংগঠন ও সচেতন নাগরিকদের একত্র হয়ে এই বিষয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তারা।