Image description
 

মামলার “ভিত্তি” নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, প্রশ্ন উঠেছে গ্রেপ্তার ও জামিনের অধিকার নিয়েও। প্রশ্নগুলো আবার সামনে এনেছে অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার সোমবার গ্রেপ্তার ও মঙ্গলবার জামিন প্রাপ্তির ঘটনা।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী অবশ্য ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেছেন, “গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে তদন্তে নিশ্চিত হওয়ার আগে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। এই কারণে কিন্তু জুলাই-আগস্টে যে মামলা হয়েছে তার ১০% আসামিকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “আর জামিনের ক্ষেত্রে আদালত অনেকগুলো বিষয় বিবেচনায় নেন। সেখানে পুলিশ রিপোর্টে কী বলা হয়েছে সেটা দেখা যায়। কোনো আসামি যদি দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, তখন তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মামলার এজাহারে যেসব পদ-পদবি দেওয়া হয়েছে সেটা ঠিক না, অভিযুক্ত ব্যক্তি তখন দেশের বাইরে ছিলেন, সেক্ষেত্রে আদালত ওই আসামিকে জামিন দেন।”

তবে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সাইদ আহমেদ রাজা বলেন, “গ্রেপ্তার বা জামিনের ক্ষেত্রে পিক অ্যান্ড চুজ করা হচ্ছে- তা বলাই যায়। সর্বশেষ উদাহরণ দেখেন, অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার জামিনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল ২২ মে। কিন্তু সারাদেশে আলোচনার কারণে তার আবেদন দুই দিন এগিয়ে মঙ্গলবার শুনানি করা হলো এবং তাকে জামিন দেওয়া হলো।”

তিনি বলেন, “এতে কি সাধারণ মানুষের কাছে ভালো বার্তা গেল? আবার দেখেন, আরেকজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী শমী কায়সার কয়েকমাস ধরে কারাগারে আছেন। হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়েছেন। আপিল বিভাগে তার জামিনের শুনানি হওয়ার আগ মুহূর্তে তাকে চারটি পেন্ডিং মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো। তাহলে কি দু’জনের ক্ষেত্রে সমান আচরণ করা হলো?”

সাইদ আহমেদ রাজা আরও বলেন, “রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, এমপি, নেতা, সাবেক বিচারপতি ও সরকারী উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা মিলিয়ে ৮৪ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও আব্দুল মান্নান জামিন পেয়েছেন। সাবের হোসেন চৌধুরীকে তো রিমান্ডে থাকার মধ্যে রিমান্ড শর্ট করে আদালতে হাজির করে জামিন দেওয়া হয়েছে। ফলে এই ঘটনাগুলো তো প্রমাণ করে জামিনের ক্ষেত্রে ‘পিক অ্যান্ড চুজ’ হচ্ছে। আদালতের আদেশগুলো কিন্তু পরিবর্তন করা যায় না। এগুলো রেফারেন্স হিসেবে থেকে যাচ্ছে, যা পরবর্তীতে দৃষ্টান্ত হয়ে যাবে।”

উপদেষ্টাও বিব্রত বলে...

অনেকের মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘনিষ্ঠ দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে লিখেছেন, “সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনিকে দেশ থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, শিরীন শারমিনকে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে বাসায় গিয়ে পাসপোর্ট করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল জানুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও মে মাসে এসেও শুরু হয়নি। ইন্টেরিম, ৬২৬ জনের লিস্ট কোথায়? ৬২৬ জনকে নিরাপদে বের করে দিয়ে এখন নুসরাত ফারিয়াকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে বোঝাতে চাচ্ছেন আপনারা খুব বিচার করছেন? এগুলো বিচার নয়, এগুলো হাসিনা স্টাইলে মনোযোগ ডাইভারশন।”

সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও ফেসবুকে লিখেছেন, “আমি সাধারণত চেষ্টা করি আমার মন্ত্রণালয়ের কাজের বাইরে কথা না বলতে। কিন্তু আমার তো একটা পরিচয় আছে, আমি এই ইন্ডাস্ট্রিরই মানুষ ছিলাম এবং দুইদিন পর সেখানেই ফিরে যাবো। নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর একটা ঘটনা হয়ে থাকলো আমাদের জন্য। আমাদের সরকারের কাজ জুলাইয়ের প্রকৃত অপরাধীদের বিচার করা। ঢালাও মামলার ক্ষেত্রে আমাদের পরিষ্কার অবস্থান প্রাথমিক তদন্তে সংশ্লিষ্টতা না থাকলে কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। এবং সেই নীতিই অনুসরণ করা হচ্ছিল। ফারিয়ার বিরুদ্ধে এই মামলা তো অনেকদিন ধরেই ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে গ্রেপ্তারের কোনো উদ্যোগ নেওয়ার বিষয় আমার নজরে আসেনি। কিন্তু এয়ারপোর্টে যাওয়ার পরেই এই ঘটনাটা ঘটে। আওয়ামী লীগের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনকে কেন্দ্র করে ক্ষোভের পর ওভার নার্ভাসনেস থেকেই হয়তোবা এইসব ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কয়দিন আগে ব্যারিস্টার আন্দালিব পার্থের স্ত্রীর সঙ্গেও এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে। এইসব ঘটনা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য না। আমি বিশ্বাস করি, ফারিয়া আইনি প্রতিকার পাবে এবং এই ধরনের ঢালাও মামলাকে আমরা আরও সংবেদনশীলভাবে হ্যান্ডেল করতে পারবো-এই আশা। আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের প্রধান কাজ জুলাইয়ের প্রকৃত অপরাধীদের বিচার করা।”

মামলার বহর

পুলিশ সদর দপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ৫ আগস্টের পর থেকে সারাদেশে এ পর্যন্ত ১,৪৯৯টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, হামলা ভাঙচুর, মারধর, অগ্নিসংযোগ, ভয়-ভীতি প্রদর্শন, লুটপাট, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অভিযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলা হয়েছে ৫৯৯টি আর অন্যান্য মামলা হয়েছে ৯০০টি। এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ সারাদেশের থানা ও নিম্ন আদালত মিলিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে মোট ৩২৪টি।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার তালেবুর রহমান বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ৫৮৮টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলা ৪৪২টি। এসব মামলায় ১,৪৭৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত একটি মামলারও অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়নি। গুরুত্ব দিয়ে এসব মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, খুব শিগগিরই কয়েকটি মামলার চার্জশিট দাখিল করা যাবে।”

মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেন, “আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলোর তদন্ত দ্রুত এবং স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এজন্য নানাভাবে আমরা মামলাগুলোর তদন্ত তদারকি করছি। ইতোমধ্যে বেশকিছু হত্যা মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তদন্তের আগে কাউকে গ্রেপ্তার না করতে বলা হয়েছে। যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, শুধুমাত্র তাদেরই গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে।”

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, হত্যা মামলার মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) থানাগুলোয় সর্বাধিক ৪৪২টি মামলা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা রেঞ্জে ১৪৮টি, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ২০টি, রাজশাহী রেঞ্জে ২২টি, সিলেট রেঞ্জে ১৫টি, জিএমপিতে ১৬টি, সিএমপিতে ১০টি, এসএমপিতে ৩টি, খুলনা রেঞ্জে ১০টি, রংপুর রেঞ্জে ৮টি, আরএমপিতে ৫টি এবং ময়মনসিংহ রেঞ্জে ৭টি মামলা রুজু হয়েছে। এসবের মধ্যে অধিকাংশ মামলায় প্রধান আসামি শেখ হাসিনা।

মামলা করে কে, আসামি ‘বানায়’ কে?

যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গত ৫ আগস্ট নিহত হন পিকআপ চালক মো. শাহীন। ওই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম। মামলায় ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলে স্বপ্না বেগম বলেন, “আমি মামলায় মাত্র ৪ জনকে আসামি করেছিলাম। কিন্তু এত মানুষের নাম কিভাবে মামলায় যুক্ত হলো সেটা আমি জানি না। এখন পর্যন্ত পুলিশ আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। মামলাটির সর্বশেষ অবস্থাও আমি জানি না।”

গত জুলাইয়ে “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন” চলার সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার যে জায়গায় নাদিমুল হাসান নিহত হন, তার একটু দূরে ছিলেন আরেক আন্দোনরত শিক্ষার্থী সুলতানা আক্তার। অথচ তার বাবাকেও আসামি করা হয়েছে নাদিমুল হত্যা মামলায়।

মামলা থেকে নাম বাদ দিতে তাদের কাছে টাকা দাবি করা হয়েছে বলেও দাবি করলেন সুলতানা আক্তার। তিনি বলেন, “যে ছেলেটা আমার সামনে মারা যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে, তার মামলায় আমার বাবাকে (আসামি) দিছে। আমি খুব অবাক হয়ে গেলাম- এটা কীভাবে সম্ভব? এটা তো সম্ভব হতে পারে না। ওইদিন ওর থেকে এক হাত দূরে, যদি ওই গুলিটা ওর গায়ে না লাগতো, আমার গায়েও তো লাগতে পারতো। অথচ আমার বাবার নাম হত্যা মামলা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে।”

আর কত মামলা-বাণিজ্য?

আসামি করে, আসামি করার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি, কিংবা মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নামে বাণিজ্যের অভিযোগ দিন দিন বাড়ছে। জানা গেছে, মামলা বাণিজ্য বন্ধে কঠোর হতে চলেছে পুলিশ। কারণ, পুলিশের বিরুদ্ধেও এমন “বাণিজ্যে” যুক্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগে শাহিন পারভেজ নামে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর বাইরে অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানা গেছে।

জুলাই অভ্যুত্থান-সংক্রান্ত মামলায় আসামি গ্রেপ্তারের আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে বলেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি যে ঘটনায় যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ, সে বিষয়ে উপযুক্ত প্রমাণ হাজির করার কথাও বলেছে পুলিশ।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ফারুক হোসেন বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সংক্রান্তে রুজু করা মামলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা অধিক। এসব মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তারের জন্য উপযুক্ত প্রমাণসহ (ভিকটিম, বাদী, প্রত্যক্ষদর্শী, সাক্ষী, ঘটনা সংশ্লিষ্ট ভিডিও, অডিও, স্থির চিত্র ও মোবাইলের কল লিস্ট বা সিডিআর ইত্যাদি) অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গ্রেপ্তার করতে হবে।”

শুধু সাধারণ মানুষ নয়, গণহত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে খোদ সহকর্মীর কাছ থেকেও ঘুস দাবির অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

পদবি বুঝে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকাও ঘুস দাবির অভিযোগ আছে। ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রামপুরা থানার এসআই অনুপ বিশ্বাস ইটের আঘাত পেয়ে আহত হন। পরে তিনি কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।

একসময় তিনি জানতে পারেন, ১৯ই জুলাই খিলগাঁও এলাকায় বিক্ষোভ চলার সময় একজনের আহত হওয়ার ঘটনায় ১৭ অক্টোবরে করা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অথচ ঘটনার সময় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পরে ওই মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অনুপের কাছে লাখ টাকা ঘুষ চান তারই এক সহকর্মী। কিন্তু তিনি ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে তাকে বলা হয় ঘুষ না দিলে একাধিক হত্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হবে।

অনুপকে যে হত্যা চেষ্টা মামলায় আসামি করা হয়েছে, ওই মামলার আসামির তালিকায় পুলিশের ৩৬ জন সদস্যের নাম রয়েছে। অন্য আরেকটি মামলায় আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগে রামপুরা থানার এসআই রাশেদুর রহমানকে আসামি করা হয়। কিন্তু ঘটনার ১১ দিন আগেই তাকে ভাষানটেক থানায় বদলি করা হয়েছিল। তাই তিনি ভাষানটেক থানায় ডিউটি করছিলেন। কিন্তু যে ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে, সেটি রামপুরা এলাকার।

রাশেদের প্রশ্ন- ভাষানটেক থেকে রামপুরায় গুলি চালানো কিভাবে সম্ভব? এই মামলার কারণে তার কাছে তারই এক সহকর্মী  টাকা দাবি করেছেন বলেও দাবি রাশেদের।