
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা ও চেতনা ধারণ করে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ জন্য গঠন করা হবে বিশেষ তহবিল। বাজেটে দেওয়া হবে বিশেষ বরাদ্দ। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে প্রণীত প্রথম বাজেট।
শনিবার (১৭ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আগামী বাজেটের সার্বিক দিক নিয়ে যে আলোচনা হয়, তাতে বিষয়টি উঠে আসে।
বাজেট চূড়ান্ত করার আগে এ ধরনের বৈঠক করার রেওয়াজ রয়েছে। গতকালের বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টার পাশাপাশি পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থ মন্ত্রণালয়) আনিসুজ্জামান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া ছিলেন অর্থসচিব মো. খায়েজ্জামান মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, পরিকল্পনাসচিব ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক।
আগামী ২ জুন ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাজেটের আকার ধরা হচ্ছে ৭ লাখ ৯০ লাখ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেটের সার্বিক প্রস্তুতির দিক তুলে ধরলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
সরকার ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, জুলাই অধিদপ্তর গঠন করবে। গঠন করা হবে জুলাই অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরও। জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের দেশে–বিদেশে চিকিৎসা করানো হচ্ছে, আরও হবে। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি উৎস হতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অডিও ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হবে। জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য ঋণ–সুবিধা দেওয়ারও চিন্তা রয়েছে সরকারের। এসব কাজে বিশেষ তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। তবে এ জন্য বাজেটে কত বরাদ্দ রাখা হচ্ছে, তার পরিমাণ গতকাল পর্যন্ত জানা যায়নি।
বর্তমানে দেশে রাজস্ব আয়ের প্রবাহ সন্তোষজনক পর্যায়ে নেই। আছে অর্থের সংকট। উন্নয়ন বাজেটে সরকারের নজর তাই কমই থাকবে। কিন্তু পরিচালন বাজেটে বরাদ্দ না বাড়িয়েও উপায় নেই। তাই সরকার পরিচালন বাজেটে বরাদ্দ বাড়াবে।
এদিকে দেশে এখনো উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। তাই আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। নিম্ন আয়ের মানুষকে সুরক্ষা দিতে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কিছু ভাতা বাড়বে বলে জানা গেছে।
বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ভালো নয়, যে কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি তৈরি হচ্ছে না। ফলে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাভিলাষী করা হচ্ছে না আগামী বাজেটে।