
বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর পরও আমদানি এলসি (ঋণপত্র) খোলার জন্য মার্কিন ডলারের দাম ১২২ টাকার আশপাশে স্থির রয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ নিশ্চিত করার জন্য বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থা চালুর ঘোষণা দেয়, যার ফলে ব্যাংকগুলো স্বাধীনভাবে সমঝোতার ভিত্তিতে ডলারের দর নির্ধারণ করতে পারছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ট্রেজারিপ্রধানরা গতকাল একটি অনানুষ্ঠানিক ভার্চুয়াল বৈঠক করেন এবং সিদ্ধান্ত নেন আমদানি এলসি খোলার জন্য প্রতি ডলার ১২২ টাকায় বিক্রি করবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রায় ৫০টি ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধান অংশগ্রহণ করেন এবং তারা আমদানি এলসি খোলার জন্য প্রতি ডলার ১২২ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আরও জানান, রেমিট্যান্সের জন্যও ডলার একই দর ১২২ টাকায় প্রস্তাব করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি থাকায় ব্যাংকগুলোর কাছে পর্যাপ্ত ডলার রয়েছে এবং কোনো কারসাজি লক্ষ করা যায়নি বলেও তিনি জানান।
বাজারভিত্তিক বিনিময় হারের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বুধবার সংবাদ সম্মেলনে আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি বর্তমান হারের আশপাশেই থাকবে, কারণ ডলারের প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে তারল্য বাড়ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো করছে। চলতি হিসাবের ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আমাদের রিজার্ভ কোনো বাহ্যিক সহায়তা ছাড়াই বেড়েছে। আমরা মনে করি, এখন উপযুক্ত সময়। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স থেকে শক্তিশালী প্রবাহ থাকায় আমি আশা করি বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকবে।’ গভর্নর আরও বলেন, ‘এর মানে এই নয় যে ডলার যে কোনো দামে বিক্রি করা যাবে। আমরা আশা করি হারটি বর্তমান স্তরের আশপাশেই থাকবে।’ তিনি জানান, একটি গোপন ব্যান্ড থাকবে যার মধ্যে বিনিময় হার সীমাবদ্ধ থাকবে। গতকাল এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি মনে করে কাঙ্ক্ষিত মাত্রার চেয়ে টাকার বেশি অবমূল্যায়ন হয়েছে, তাহলে হস্তক্ষেপ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সেই হাতিয়ার আছে। ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার পর টাকার বিনিময় হার কিছুটা ওঠানামা করলেও সেভাবে অবমূল্যায়ন হয়নি। আরও দুই-এক দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। তখন বোঝা যাবে, কী হতে যাচ্ছে।