Image description

উড়োজাহাজের জেট ফুয়েলের দাম কমায় ভাড়া হ্রাসের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া। বৃহস্পতিবার বেবিচক এর সদরদপ্তরে এক সভায় এই আহ্বান জানানো হয়েছে। বেবিচক চেয়ারম্যান এই সভায় সভাপতিত্ব করেন।

উড়োজাহাজ চলাচলে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল জেট ফুয়েল এর দাম কমানো হয়েছে। দেশীয় সরকারি ও বেসরকারি এয়ারলাইন্সের অভ্যন্তরীণ রুটের জন্য শতকরা ১৫ ভাগ এবং আন্তর্জাতিক রুটের এয়ারলাইন্সের জন্য শতকরা ১২ ভাগ হ্রাস করা হয়েছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, জেট ফুয়েলের মূল্য হ্রাসের সুফল যেন সাধারণ যাত্রীরা ভাড়া কমার মাধ্যমে পায়। এজন্য অতি দ্রুততার সাথে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। সভায় উপস্থিত সকল এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিরা ঐকমত্য পোষণ করেন এবং জানান, তারা খুব শিগগিরই বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

আগামী ২১ মে ২০২৫ থেকে নভোএয়ার পুনরায় তাদের ফ্লাইট অপারেশন চালু করার জন্য বেবিচক চেয়ারম্যান এবং উপস্থিত অন্যান্য এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিরা নভোএয়ারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। ২১ তারিখ থেকে নভোএয়ার পুনরায় তাদের অপারেশন চালু করছে, এইজন্য তাদেরকে সবাই অভিনন্দন জানান।

বেবিচক চেয়ারম্যান আরও জানান তৃতীয় টার্মিনালের সকল কাজ আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী হবে। তিনি বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত তৃতীয় টার্মিনালের কার্যক্রম আগামী ডিসেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। টার্মিনালের সকল নির্মাণকাজ ও সেবামূলক কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে পরিচালিত হবে, যাতে দেশি-বিদেশি যাত্রীরা সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন ও আধুনিক সেবা পেতে পারেন।

বৈঠকে বেবিচক চেয়ারম্যান আরও জানান, সরকার ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সমন্বিত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরের কার্যক্রম ইতোমধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক মান অনুসারে নিরাপত্তা, কাস্টমস, ইমিগ্রেশনসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুন মাসের শেষভাগ বা জুলাই মাসের প্রথম দিক থেকেই কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে অধিক সংখ্যক কার্গো অপারেশন চালু করা জরুরি। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স ও কার্গো অপারেটরদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

বেবিচক চেয়ারম্যান সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা এসব বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে নতুন আন্তর্জাতিক রুট চালু করতে আগ্রহী হন এবং নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনায় উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, এ উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, লজিস্টিক সহায়তা এবং প্রশাসনিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া এয়ারলাইন্স প্রতিনিধিগণ গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন। তিনি এ সময় আশ্বস্ত করেন যে, এসব সমস্যা নিরসনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “বিমান চলাচলকে আরও সহজ, সাশ্রয়ী ও কার্যকর করতে এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বেবিচক এর সদস্য (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস), পরিচালক (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস)সহ দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলোর উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি ও কর্মকর্তাবৃন্দ, যারা উক্ত আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর মতামত প্রদান করেন।