Image description

Saeed Sohaib( সাইদ সোহাইব)


 
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাবির এক ছাত্রকে খুন করা হইসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যারা থাকে তারা জানে উদ্যান হইল গাঞ্জাখোর, নেশাখোরদের আড্ডা খানা। রাতের বেলা একা হেটে যেতেই গা ছমছম করবে। এটি একটি নগর উদ্যান যার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব না। এইটা সিটি কর্পোরেশনের, সরকারের দায়িত্ব। তারপরেও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় কিছুদিন আগে নিয়াজ স্যারের নেতৃত্বে ঢাবির নতুন প্রশাসন উদ্যানের ঢাবি সংলগ্ন গেইট বন্ধ করে দেয়। এতে সামিনা লুৎফার দল ভিসিকে এক হাত নেয়। শুধু তাই শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্যাম্পাসে বহিরাগত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করলে সেটা নিয়ে সামিনা লুৎফার দল ভিসিকে একেবারে ধুয়ে ফেলে। অথচ, এই দলের লোকেরাই উদ্যানে এই খুনের দায় ক্যাম্পাসে টেনে এনে শুধু ভিসি আর প্রক্টরের উপরে চাপায় দিচ্ছে। গুড জব!
 
বিএনপিপন্থী শিক্ষক ভিসি না হওয়াতে বিএনপি ও ছাত্রদলের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। তারা মুখে দাড়ি আর নামাজ পড়াকে ইস্যু করে নিয়াজ স্যারকে জামাত প্রমাণে উঠে পড়ে লাগে। অথচ তারা ভালোমত জানার ট্রাইও করেনি নিয়াজ স্যার আসলে জামাত করে নাকি আর কি করে। তিনি অরাজনৈতিক হওয়াতে সহজেই কোন দলীয় এজেন্ডা তাকে দিয়ে বাস্তবায়ন করা যাবেনা। টেন্ডারবাজি চলবেনা, যা ইচ্ছা তা করা যাচ্ছেনা। তার উপর আরেক ঝামেলা- ডাকসু ইলেকশন নিয়ে আগাচ্ছেন। তাই হাবিজাবি নানান নন একাডেমিক ইস্যুতে স্যারকে টেনে এনে ৩৬ পৃষ্ঠার ভিসি, বহিরাগত ভিসি, ইত্যাদি বলে টিটকারি মারা হয়। সুযোগ পেলে পদত্যাগের দাবি উঠানো হয়। ক্যাম্পাসের আশেপাশে একটা লাশ পড়লেই সোনায় সোহাগা। উদ্যানে একটা খুন, তাও ছাত্রদলের নেতা, এ যেন মেঘ না চাইতে বৃষ্টি। ঢাবির নিয়ন্ত্রণের বাইরে উদ্যানের ঘটনা হলেও, লাগা ভিসি-প্রক্টরের পদত্যাগ আন্দোলন। খুনের বিচারে ফোকাস নাই। ফোকাস এখন চেয়ারের দিকে। তৎক্ষনাৎ খুনীদের ধরলেও, নানান ধাপ্পাবাজি কথা বলে এড়িয়ে না গিয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নিলেও, ভিসি-প্রক্টরের পদত্যাগ চাইতে হবে। খুনের মত অপরাধ পরিণত হইল লাশের রাজনীতিতে। গুড জব!
 
তর্কের খাতিরে আমি ধরে নিলাম ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় প্রশাসনের ব্যর্থতা আছে। থাকলে সেই ব্যর্থতা পুরো প্রশাসনের। প্রোভিসি মামুন আর বিদিশারও আছে।
আমরা ইতোমধ্যে জানি ভিসি নিয়াজ প্রশাসনের সবাইকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ও কাজ করার জন্য সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম গঠন করছে। উনি নিজেই বলেছেন ভিসির ক্ষমতা কমানো এবং টিম হিসেবে চলার জন্য এটা করেছেন। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ব্যর্থতার দায় ভিসির পাশাপাশি প্রোভিসহ অন্যান্যরা নিবেনা কেন? যারা ভিসি প্রক্টরের দাবি করছেন, তারা সাথে মামুন আর বিদিশার পদত্যাগও দাবি করেন। নাইলে আমরা ধরে নেব আপনারা সেই পুরানো লাশের রাজনীতিই করছেন। আপনাদের উদ্দেশ্য সাম্যের বিচার নিশ্চিত নয়, আপনাদের উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়, আপনাদের উদ্দেশ্য চেয়ার।
 
এবার বলি আসল সমস্যা কি-
আসল সমস্যা হলো ভিসি নিয়াজ কোন রাজনৈতিক দলের দাস না। নিয়াজকে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা, টেন্ডারবাজি, দলবাজি, চাটামি ইত্যাদি হবেনা। ভিসি নিয়াজ নামাজ দোয়া করেন, মুখে দাড়ি আছে।
নিয়াজ স্যার কিছুদিন আগেই বলেছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হইসে। নিয়াজ স্যারের উচিত এসব নোংরামিতে নিজের পরিবার আর জিবন ধ্বংস না করে চলে আসা। তার উচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আরো পচতে দেওয়া। ৮-১০ লাখ টাকা আর বিতর্কহীন সম্মানে পরিপূর্ণ জীবন ছেড়ে এসব পচাগলা জায়গায় নিজেরে শেষ করার কোন লজিক আমি দেখিনা।
 
এই দেশের মানুষের মুক্তি আসবেনা। আমরা নিজেরাই মুক্তি চাইনা, মুক্তি চিনিনা। আমাদের জিবন জিল্লতির জিবন, এক অভিশপ্ত জাতি আমরা।
আমি এই খুনের প্রপার তদন্ত ও বিচার চাই। এই খুনের পিছনে সব ইতিহাস বেরিয়ে আসুক। খুনিদের উদাহরণ সৃষ্টিকারী বিচার চাই। কোন নোংরা রাজনীতি না হোক।