
লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় একটি মাদ্রাসা থেকে হেফজ বিভাগের ছাত্র সানিম হোসাইনের (১২) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পৌর শহরের আল-মুঈন ইসলামী একাডেমি মাদ্রাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, শিক্ষক মাহমুদুর রহমানের মারধরে সানিম মারা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে তারা হত্যার আলামত পেয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুর রহমানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নিহত সানিম রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের কুচিয়ামারা গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী হুমায়ুন মাতব্বরের ছেলে।
পরিবার জানায়, কয়েক দিন আগে মাদ্রাসা থেকে জানানো হয়, সানিম শিক্ষক মাহমুদুর রহমানের কথা শোনে না এবং তার নামে বদনাম করে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক মাহমুদুর রহমান রেগে ছিলেন। আজ সকালে মাদ্রাসায় গেলে ওই শিক্ষক সানিমকে মারধর করেন। দুপুরে মাদ্রাসা থেকে তাদের খবর দেওয়া হয়, সানিম টয়লেটে ঢুকে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু তারা সানিমের মরদেহ টয়লেটে নয়, মাদ্রাসার নিচতলার একটি কক্ষে বিছানায় পেয়েছেন। এটি পরিকল্পিত হত্যা। মাত্র ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে আত্মহত্যা কী জিনিস, তা বোঝার কথা নয়।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা বশির আহমেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। মাদ্রাসায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘সানিমকে আমি হালকা মারধর করেছি ঠিক; তবে সে টয়লেটে ঢুকে আত্মহত্যা করেছে।’
এর আগে গত সপ্তাহেও আল-মুঈন ইসলামী একাডেমি মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। মোহাম্মদ ফরহাদ (১৩) নামে হিফজ বিভাগের এক ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগে সালিশে অভিযুক্ত শিক্ষক মাওলানা ওমায়েরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল হক বলেন, এক মাদ্রাসাছাত্র আত্মহত্যা করেছে এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। মরদেহের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কালচে দাগ রয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।