
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত ১০ এপ্রিল থেকে। আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) এ বছরের লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হচ্ছে এই পাবলিক পরীক্ষা। ২০২৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন। গতবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন।
১১টি শিক্ষা বোর্ডে অধীনে এবার সারা দেশে ৩ হাজার ৭১৫টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ছিল ছাত্রী ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৭৩৯ জন এবং ছাত্র ৯ লাখ ৬১ হাজার ২৩১ জন। এবার এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করলেও প্রথম দিন পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ২৬ হাজার ৯২৮ জন শিক্ষার্থী। আর শেষ দিন গত ৮ মে অনুপস্থিত ছিল ৭ হাজার ৭৯ জন।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম, পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতা, ফরম পূরণের পরও বা-মায়ের সন্তানের প্রতি যত্নের অভাব এবং উপকূলীয় অঞ্চলে মৎস্য খাতে জড়িত থাকায় পারিবারিক জীবিকা নির্বাহ বড় কারণ হিসেবে দেখছেন শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা।
তবে বিশেষজ্ঞরা এবারের এসএসসিতে অনুপস্থিতির এই প্রবণতাকে বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম, ঝরে পড়া ও করোনার প্রভাব হিসেবে দেখছেন।
পরীক্ষায় অনুপস্থিতির সংখ্যা
সর্বশেষ গত ৮ মে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন ৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৭৮৭, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ৫ লাখ ৩২ হাজার ৩১৪, অনুপস্থিত ছিল ৩ হাজার ৪৭৩, অনুপস্থিতির হার ০.৬৫।
এদিন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ৪২৬ জন, অংশ নিয়েছিল ৩১ হাজার ৬৯৩ জন, অনুপস্থিত ৭৩৩ জন, অনুপস্থিতির হার ২.২৬। কারিগরি বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬১৪, অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৭২৩ জন, অনুপস্থিত ২ হাজার ৮৯১, অনুপস্থিতির হার ২.৪২।
৭ মে
৯টি সাধারণ বোর্ডে সেদিন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৩২ হাজার ১১৯ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ২৯ হাজার ৬১০ জন, অনুপস্থিত ছিল ২ হাজার ৫০৯ জন, অনুপস্থিতির হার ১.০৮।
এদিন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ২৭ হাজার ৬৩৮ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ১৫৭, অনুপস্থিত ১০ হাজার ৪৫১, অনুপস্থিতির হার ৪.৬০। তবে এদিন কারিগরি বোর্ডে পরীক্ষা ছিল না।
৬ মে
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ২৫৮, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৩৫৪ জন, অনুপস্থিত ছিল ৫ হাজার ৯০৪, অনুপস্থিতির হার ০.৮৭।
এদিন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৩ হাজার ১৮৬ জন, অংশ নিয়েছে ৩২ হাজার ৪০৩, অনুপস্থিত ৭৮৩ জন। অনুপস্থিতির হার ২.৩৬। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১ লাখ ২৯ হাজার ১২৬ জন, অংশ নিয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ৮৭১। অনুপস্থিত ৩ হাজার ২৫৫ জন। অনুপস্থিতির হার ২.৫২।
৪ মে
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৫১৯ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৩ জন, অনুপস্থিত ১৪ হাজার ৪৮৬, অনুপস্থিতির হার ১.২৫।
এদিন মাদ্রাসা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪১, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৪৭ হাজার ২৯১, অনুপস্থিত ১১ হাজার ২৫০ জন, অনুপস্থিতির হার ৪.৩৫। কারিগরিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৪২ জন, অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ২৩ হাজার ৬৬৯, অনুপস্থিত ২ হাজার ৯৭৩ জন, অনুপস্থিতির হার ২.৩৫।
৩০ এপ্রিল
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৭৬ হাজার ০৭৯ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৭১১ জন, অনুপস্থিত ১০ হাজার ৩৬৮ জন, অনুপস্থিতির হার ১.৮০।
এদিন মাদ্রাসা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪২৮ জন, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৩২ হাজার ৭২৯ জন, অনুপস্থিত ১০ হাজার ৬৯৯, অনুপস্থিতির হার ৪.৪০। কারিগরি বোর্ডের পরীক্ষা ছিল না।
২৯ এপ্রিল
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১১ লাখ ৮৮ হাজার ২১৪ জন, অনুপস্থিত ১৩ হাজার ৫৬২ জন, অনুপস্থিতর হার ১.১৩।
এদিন মাদ্রাসা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৫৮ হাজার ১০৫ জন, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪৩ জন, অনুপস্থিত ছিল ১১ হাজার ২৬২ জন, অনুপস্থিতির হার ৪.৩৬। কারিগরিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ৯৮৪ জন, অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৮ জন, অনুপস্থিত ৩ হাজার ৫৬ জন, অনুপস্থিতির হার ২.৩০।
২৭ এপ্রিল
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৩২ হাজার ২৮৭ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৯৯ জন, অনুপস্থিত ছিল ১৫ হাজার ৩৮৮ জন, অনুপস্থিতর হার ১.১৬।
এদিন মাদ্রাসা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৫৮ হাজার ১২৯ জন, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৭ জন, অনুপস্থিত ছিল ১১ হাজার ১৯২ জন, অনুপস্থিতির হার ৪.৩৪। কারিগরিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৯৭০ জন, অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৮৯, অনুপস্থিত ছিল ২ হাজার ৯৮১, অনুপস্থিতির হার ২.২৬।
২৪ এপ্রিল
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ৬৯ হাজার ১৬ জন, অংশ নিয়েছিল ৯ লাখ ৫৬ হাজার ২২২ জন, অনুপস্থিত ছিল ১২ হাজার ৭৯৪ জন, অনুপস্থিতির হার ১.৩২।
এদিন মাদ্রাসা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৫৪ হাজার ৬২৯ জন, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮ জন, অনুপস্থিত ছিল ১০ হাজার ৫৬১ জন, অনুপস্থিতির হার ৪.১৫। কারিগরিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩০ হাজার ৫২৬ জন, অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৯১ জন, অনুপস্থিত ২ হাজার ৮৩৫ জন, অনুপস্থিতির হার ২.১৭।
২৩ এপ্রিল
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৩০ হাজার ১২৯ জন, অংশ নিয়েছিল ১৩ লাখ ১৫ হাজার ৩৫১ জন, অনুপস্থিত ১৪ হাজার ৭৭৮ জন, অনুপস্থিতির হার ১.১।
মাদ্রাসা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৫৯ জন, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৫০ হাজার ৩৪২ জন, অনুপস্থিত ১১ হাজার ৪১৭ জন, অনুপস্থিতির হার ৪.৩৬। কারিগরিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৭০ জন, অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৩৬ জন, অনুপস্থিত ২ হাজার ৭৩৪ জন, অনুপস্থিতির হার ২.১৫।
২২ এপ্রিল
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ২০ হাজার ৮২৫ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৩ লাখ ৫ হাজার ৯০৬ জন, অনুপস্থিত ১৪ হাজার ৯১৯ জন, অনুপস্থিতির হার ১.১৩।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৫৫ হাজার ৬৬৫ জন, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৪, অনুপস্থিত ১০ হাজার ৭১১ জন, অনুপস্থিতির হার ৪.১৯। কারিগরিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৯৩ জন, অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ১৭৮ জন, অনুপস্থিত ২ হাজার ২১৫ জন, অনুপস্থিতির হার ১.৬৬।
২১ এপ্রিল
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৪ লাখ ৬ হাজার ৪৪০ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৯৫০ জন, অনুপস্থিত ১৭ হাজার ৪৯০ জন, অনুপস্থিতির হার ১.২৪।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৫৫ হাজার ৭০৩ জন, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭৩, অনুপস্থিত ১০ হাজার ৬৩০ জন, অনুপস্থিতির হার ৪.১৬। কারিগরিতে পরীক্ষা ছিল না।
১৭ এপ্রিল
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৩৭৪ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৫৬১ জন, অনুপস্থিত ১৫ হাজার ৮১৩ জন, অনুপস্থিতির হার ১.১৬।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৭৯ হাজার ৩০২ জন, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৫, অনুপস্থিত ১১ হাজার ৯৬৭ জন, অনুপস্থিতির হার ৪.২৮। কারিগরিতে পরীক্ষার্থী ছিল ২ হাজার ৫২৬ জন, অংশ নিয়েছিল ২ হাজার ৪০১ জন, অনুপস্থিত ১২৫ জন, অনুপস্থিতির হার ৪.৯৫।
১৫ এপ্রিল
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৩ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৯৬৫ জন, অনুপস্থিত ১৫ হাজার ৬২৮ জন, অনুপস্থিতির হার ১.১৫।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৭৯ জন, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৮৯, অনুপস্থিত ১০ হাজার ৪৯০ জন, অনুপস্থিতির হার ৪.০৬। কারিগরিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪ জন, অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ২৩৯ জন, অনুপস্থিত ২ হাজার ৮২৫ জন, অনুপস্থিতির হার ২.০৬।
১০ এপ্রিল
৯টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৩৪ হাজার ৬৩০ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৯২ জন, অনুপস্থিত ১৪ হাজার ৭৩৮ জন, অনুপস্থিতির হার ১.১০।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২ জন, অংশ নিয়েছিল ২ লাখ ৫২ হাজার ২৮৯, অনুপস্থিত ৯ হাজার ৬২৩ জন, অনুপস্থিতির হার ৩.৬৭। কারিগরিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ২৩৬ জন, অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ২৮ হাজার ৬৬৯ জন, অনুপস্থিত ২ হাজার ৫৬৭ জন, অনুপস্থিতির হার ১.৯৬।
একদিকে পরীক্ষার্থী কম, অন্যদিকে বিপুলসংখ্যক পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিতি নিয়ে এবার নানা আলোচনা চলছে। এর সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো অস্পষ্ট।
যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষকদের ভাষ্য, গতবার পাসের হার তুলনামূলক বেশি ছিল (৮৩ শতাংশ)। আর পাসের হার বেশি হওয়ায় এ বছর অনিয়মিত পরীক্ষার্থী কমে গেছে। এ জন্যই মূলত এবার মোট পরীক্ষার্থী কম। তবে শিক্ষকদের ভাষ্য, এর অন্যতম একটি কারণ হলো করোনা সংক্রমণের প্রভাব। করোনার সময় হয়তো তেমন পড়াশোনা না করেই ওপরের শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা উঠে গেছে। কিন্তু এখন যখন পাবলিক পরীক্ষা এসেছে, তখন হয়তো অনেকেই পরীক্ষা দিতে সাহস পাচ্ছে না।
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা ২০২০ সালে ছিল ষষ্ঠ শ্রেণিতে। দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হয় সে বছরই। এর প্রভাবে একবার টানা দেড় বছর এবং পরে আবারও কয়েক মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। দীর্ঘমেয়াদি এই প্রভাবের কারণে অনেকেই বিভিন্ন স্তরে ঝরে পড়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এসবের পাশাপাশি বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রমসহ একাধিক কারণ থাকতে পারে। এ জন্য এ বিষয়ে একটি গবেষণা করে প্রকৃত কারণ বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এবারের এসএসসিতে অনুপস্থিতির সংখ্যাটা গত কয়েক বছরের চেয়ে বেশি। এটা আমরা লক্ষ করেছি। আসলে একটা রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পাশাপাশি অভিবাবকের আয়, বাজার দর, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সংগতি, এসব কিছু নিম্নমধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারে প্রভাব পড়ে। আার যারা ড্রপআউট হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখা যায় এসব সংখ্যা বেশি।
তিনি আরও বলেন, আবার ফরম পূরণ করার পরও যারা পরীক্ষায় বসেনি, তাদের পরিবারে নানা ধরনের যত্নের অভাব, আর্থিক অসচ্ছলতা, কারও বাবা নেই, কারও বাবা-মা থেকেও উদসীন, কেউ কেউ পরিবারের হাল ধরার জন্য কর্মসংস্থানে যোগ দেয়। এটাও এটা বড় কারণ। এ ছাড়া আমরা একটি গবেষণায় দেখেছি, উপকূলে অনেকে মৎস্য খাতে জড়িত থাকার কারণে তাকে টানা পরীক্ষায় থাকা সম্ভব হয় না। একটা সময় সে ফরম পূরণ করলেও আর সেই আগ্রহ ধরে রাখতে পারে না। তবে বাল্যবিবাহ, ঝরে পড়ার চেয়েও অন্য কারণগুলোর প্রভাব বেশি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা প্রতিদিনের অনুপস্থিতির সংখ্যা ও হার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করি। এই সংখ্যা দেখলে বোঝা যায় কতজন পরীক্ষার্থী উপস্থিত হচ্ছে, কতজন হচ্ছে না।
তিনি জানান, গতবার বেশি পাস করার কারণেই মূলত এবার মোট পরীক্ষার্থী কম। কারণ, আগেরবার বেশি পাস করলে পরের বছর অনিয়মিত পরীক্ষার্থী কমে। এর পাশাপাশি অন্যান্য কিছু কারণও থাকতে পারে। এবার কড়াকড়িভাবে পরীক্ষা গ্রহণের কারণে অনুপস্থিতির সংখ্যা তুলনামূলক কিছু বেশি হয়ে থাকতে পারে।