
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, মূল্যস্ফীতি কমতে একটু সময় লাগছে। তবে আস্তে আস্তে সেটি কমে আসবে। সরকারের প্রচেষ্টা ও নীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে মূল্যস্ফীতি ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত ব্যাংকার-এসএমই নারী উদ্যোক্তা সমাবেশ, পণ্য প্রদর্শনী ও মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, নির্বাহী পরিচালক মো. খসরু পারভেজ, সিটি ব্যাংকের এমডি ও সিইও মাসরুর আরেফিন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের পরিচালক নওশাদ মোস্তফা।
তিনি বলেন, নারীদের ঋণের ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। নারীদের কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সে বিষয়ে আমাদের চেষ্টা করতে হবে। সেই জায়গা থেকে আমরা কাজ করছি।
দেশের আর্থিক খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়লেও এখনো ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে তারা বৈষম্যের মুখে পড়ছে বলে মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, ‘নারীদের সাংবিধানিক যে অধিকার রয়েছে, বাস্তবে তারা সেই অধিকার পাচ্ছেন না। নারীদের ঋণের ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। নারীদের কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সে বিষয়ে আমাদের চেষ্টা করতে হবে।’
গভর্নর জানান, বর্তমানে ব্যাংক খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ নারীরা পাচ্ছেন, যা বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ অবস্থার পরিবর্তনে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংকিং সেবাকে আরও সহজলভ্য করতে হবে। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, আমরা নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেব, তবে সেটা শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের কেন্দ্রীয় তহবিল বাড়িয়ে নয়। ব্যাংকগুলোকে নিজেদের তহবিল থেকেই নারীদের জন্য ঋণ বরাদ্দ দিতে হবে, অধিকার বিবেচনায় রেখেই।
দেশের সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১৪ শতাংশ থেকে সাড়ে ৮ শতাংশে নেমেছে, আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশ থেকে কমে ৯ শতাংশের একটু বেশি হয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সরকারের প্রচেষ্টা ও নীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে মূল্যস্ফীতি ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, সার্বিকভাবে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই কার্যক্রমকে বাড়ানো প্রয়োজন। এ জন্য ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নারী উদ্যোক্তাদের জন্য চার দিনব্যাপী মেলা
নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ ও বাজার সম্প্রসারণে সহায়তার লক্ষ্যে আয়োজিত এ পণ্য প্রদর্শনী মেলা চলবে ১১ মে পর্যন্ত। ৬৮ জন নারী উদ্যোক্তা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অংশ নিয়েছেন, যেখানে তারা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন। মেলার শেষ দিনে ৬ জন সফল নারী উদ্যোক্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হবে বলে জানায় আয়োজক সংস্থা।
২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক এই মেলার আয়োজন করলেও করোনাভাইরাস মহামারিসহ অন্যান্য কারণে গত চার বছর এটি বন্ধ ছিল। চার বছর পর নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আবারও এমন একটি আয়োজন করায় ইতিবাচক সাড়া মিলছে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে।