
দরপত্র প্রতিযোগিতার দৌড়ে এগিয়ে থাকতে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে সওজ অধিদপ্তরের অন্তত ৬১টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পর এগুলোর মধ্যে গত সেপ্টেম্বরে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ৪৭ প্রতিষ্ঠানকে। যদিও এসব নিষিদ্ধ প্রতিষ্ঠানের কোনোটি আবার আইনি লড়াইয়েও আছে। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেই বেশির ভাগ কাজ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান অর্থ উত্তোলন করেও কোথাও কাজ শেষ করেনি। বহু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্তারা আবার মামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কালের কণ্ঠের মাঠ পর্যায়ে প্রতিনিধিরা অনুসন্ধান করে এমন চিত্রই তুলে এনেছেন। সওজ সূত্র জানায়, অভিযুক্ত ৬১ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে তিন হাজার ৭০০ প্রকল্পের কাজ রয়েছে। এসব কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ না করেই বিল তুলে পালিয়েছে।
সওজ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান অবশ্য বারবার বলে আসছেন, অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম থেকে সরঞ্জামসহ পালাল নিষিদ্ধ ঠিকাদার : চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক ফারুক মুনির জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ওয়াই জংশন (পিএবি সড়ক) থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সড়কটি ৮.১ কিলোমিটার দীর্ঘ। ছয় লেনের সড়কে পাঁচটি স্থানে কাজ শেষ না করেই পালিয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১ কোটি টাকা। প্রকল্পের ৪৮১ কোটির মধ্যে ২৪০ কোটি টাকাই উত্তোলন করে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই)। পাঁচটি স্থানে মোট দেড় কিলোমিটারের কাজ শেষ করেনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা এখন প্রকল্প এলাকা থেকে পালিয়েছেন।
সেখান থেকে নির্মাণসামগ্রী ও সরঞ্জামাদিও তাঁরা নিয়ে গেছেন। চট্টগ্রামের এই সড়কটি আনোয়ারা, কর্ণফুলী, বাঁশখালী, চন্দনাইশ ও কক্সবাজারের পেকুয়া, চকরিয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়ার যাত্রীদের পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেল ব্যবহারকারীরা ব্যবহার করে। সড়কের পাশে থাকা কোরিয়ান ইপিজেড, কাফকো, সিইউএফএলসহ অন্যান্য শিল্প-কারখানা অফিস শুরু ও ছুটি শেষে যানজট তীব্র হয়। কলেজ শিক্ষক শহীদুল আলম বলেন, টানেল উদ্বোধনের পর সড়কে ভারী ও হালকা যান চলাচল বেড়েছে। কেইপিজেডের বিভিন্ন কলকারখানায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার চাকরিজীবী আছেন। সকালে ও বিকেলে যানজট তীব্র হয়। টানেল চালুর দুই বছরেও টানেল ব্যবহারের অন্যতম সড়কটির সামান্য কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে। জানা গেছে, সড়কের এই কাজ পায় সওজের কালো তালিকায় থাকা এনডিই।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী সাইদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কাজ শুরুর পর প্রকল্পের বাইরে নতুন করে পাঁচটি কালভার্ট নির্মাণ করতে হয়েছে। পরে প্রকল্প ব্যয় ঠিক করা হয়েছিল ৪৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩৪৮ কোটি টাকা নির্মাণ খরচ হয়। নির্মাণ খরচের ২৪০ কোটি টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উত্তোলন করেছে। প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয়ের কার্যাদেশ পেলে সড়কের অবশিষ্ট কাজ আমরা শেষ করে দেব।’ সওজের দোহাজারীর নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, প্রকল্পে ডিপিপি সংশোধন একনেকে পাস হয়েছে। সংশোধিত কার্যাদেশ পেলে কাজ সম্পন্ন করা হবে।
খুলনায় গল্লামারী সেতুর নির্মাণকাজ করতেই চায় না ঠিকাদার : খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক এইচ এম আলাউদ্দিন জানান, দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ বাড়িয়েও দুই বছরেও শেষ হয়নি খুলনার গল্লামারী জোড়া সেতুর নির্মাণকাজ। আরো এক বছর সময় চাওয়া হয়েছে। কিন্তু দুই বছরে যেখানে একটি সেতুর নির্মাণই সম্ভব হলো না সেখানে মাত্র এক বছরে কিভাবে আরো একটি সেতু নির্মাণ হবে, সেই প্রশ্ন নাগরিকদের। সওজ সূত্র জানায়, সাড়ে ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৮.৭০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৩.৭০ মিটার প্রস্থের স্টিল আর্চ সেতুর নির্মাণ শুরু করা হয় ২০২৩ সালের অক্টোবরে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ৩০ জুন। প্রকল্পের কাজ পায় ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই)। এটি সওজের তালিকায় কালো তালিকাভুক্ত। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে, এ প্রতিষ্ঠানের ‘ধীরে চলো’ নীতিতে পাইলিংয়েই চলে যায় দুই বছর। প্রকল্প পরিচালক ও সওজের খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন গল্লামারী সেতুর অগ্রগতি সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেননি। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ৪৯টি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটির এমন ধীরগতি চলছে, যার মধ্যে ১০টি রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু। গল্লামারীতে পাশাপাশি দুটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে ঝুলন্ত সেতু হিসেবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনডিইএলের প্রকৌশলী সেলিম রেজা বলেন, সেতুর ৩২টি পাইল, দুটি পাইল ক্যাপ এবং কিছু কাজ শেষ হয়েছে।
ভূরুঙ্গামারীতে সড়কে ফাটল, আসামি যুবলীগ নেতা : ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি আমিনুর রহমান বাবু জানান, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী বাসস্ট্যান্ড থেকে শিলখুড়ি ইউনিয়নের ধলডাঙ্গা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার সড়ক পাকা করার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সড়কের কাজ শেষ না হতেই বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে, সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। ঠিকাদার নিম্নমানের উপকরণ দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কুড়িগ্রাম জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মাসুদুজ্জামান, সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী হাসান আলী, উপজেলা প্রকৌশলী ইনছাফুল হক সরকার এবং প্রকল্প পরামর্শক আল আমিন গত মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, এডিবি ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে গত বছর ১৭ কোটি ৭৭ লাখ ৫৫ হাজার ২২৮ টাকা ব্যয়ে ভূরুঙ্গামারী বাসস্ট্যান্ড থেকে শিলখুড়ি ইউনিয়নের ধলডাঙ্গা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার সড়ক পাকা করার কাজ শুরু হয়। আরএবি-আরসি-বিসি-এইচটি জেভি নামের কুড়িগ্রামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়ক পাকা করার কাজ পায়। রাস্তা পাকা করার কাজ করছেন উপজেলা যুবলীগ নেতা বেলাল হোসেন। তিনি এখন মামলার আসামি। নিজেকে রক্ষা করে এলাকায় কৌশলে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। কাজের মানের বিষয়ে তাঁর কাছ থেকে জবাব পাওয়া যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রাম এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুজ্জামান জানান, বিটুমিন জমাট না বাঁধায় বিপত্তি দেখা দিয়েছে। যেখানে যে সমস্যা রয়েছে তা দ্রুত সমাধান করা হবে।
ধামরাইয়ে নিষিদ্ধ ঠিকাদার, মেয়াদ শেষ কিন্তু কাজ বাকি : ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি আবু হাসান জানান, সওজ অধিদপ্তরের অধীনে ধামরাইয়ের কালামপুর-কাওয়ালীপাড়া-সাটুরিয়া-লাউহাটি-দেলদুয়ার-টাঙ্গাইল মহাসড়ক উন্নয়নকাজ করছে কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কের উন্নয়নকাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। তবে গত তিন বছরেও জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। কালামপুর, মহিশাষী, কাওয়ালীপাড়া, সাটুরিয়ায় নতুন সড়কের কাজ হচ্ছে না।
সওজ মানিকগঞ্জ বিভাগ জানায়, আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্ততা ও নতুন সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ, মজবুতকরণ, সারফেসিং ও ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ এবং কিছু স্থানে চার লেনে উন্নীতকরণে এক হাজার চার শ পঁয়ত্রিশ কোটি উননব্বই লাখ ছত্রিশ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্প নেওয়া হয়। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি ১০টি প্যাকেজের মধ্যে এনডিই নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পায়। গত জুনে কাজ শেষ করার শর্ত ছিল। তবে কাজ শেষ হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, ভূমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় তারা কাজ করতে পারেনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের (এনডিই) প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল হান্নান বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ না করায় কিছু অংশে একেবারেই কাজ করতে পারছি না।’
মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ করবে জেলা প্রশাসনের এলএ শাখা। কিন্তু সেখান থেকে এখনো আমাদের কাছে জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে টাকার কোনো চাহিদা দেয়নি।’
ঈশ্বরগঞ্জে ঠিকাদার পলাতক, সড়ক এখন খাল : ময়মনসিংহ প্রতিনিধি আলম ফরাজী জানান, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের কৃষিবাজার থেকে জংলার মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক তৈরির কাজ বন্ধ রয়েছে। কারণ প্রকল্পের কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদার আওয়ামী লীগ মনোনীত ঠিকাদার হওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। কয়েক দিন আগে জেল থেকে বের হয়েও তিনি গাঢাকা দিয়েছেন। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দূর থেকে দেখে মনে হয়েছে, এটি শুকনো খাল। কাছে গেলে বোঝা গেল আসলে এটি সড়ক। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পাওয়ার পর মাটি খুঁড়ে আর কাজ করেনি। এটি এখন মারণফাঁদে রূপ নিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি খালের মতো পানিতে থইথই করে।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক হাজার ৯০০ মিটার এ সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন কোটি পাঁচ লাখ টাকা। ঢাকার ইস্মার্ট লিমিটেড কাজটি পেলেও এই কাজ বাগিয়ে নেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। গত ৫ আগস্টের আগেই কার্যাদেশ পেয়ে তিনি সড়কটি শ্রমিকদের দিয়ে খুঁড়ে রাখেন। একাধিক বিলও উত্তোলন করেন। এখন রাস্তার দুই পাশে মাটির স্তূপ জমেছে। সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘মেঘ-বৃষ্টি অইলে তহন আর সড়ক থাকত না। এইডা দিয়া নৌকা চলানো যাইব। তহন আমরার কপালে যে কী অইব, তা ভাবতেই ডর করে।’
নাজির হোসেন বলেন, এই সড়ক দিয়ে একটি স্কুল ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। বৃষ্টি এলে পানি জমে আর চলাচল করতে পারবে না। আর এখন অতিরিক্ত ধুলাবালুর কারণে সর্দিকাশি লেগেই আছে।
ঠিকাদার আবু হানিফা বলেন, ‘সবাই তো জানে আমি যে বিপদে আছি। তার পরও দ্রুত কাজ ধরার চেষ্টা করছি। কয়েক দিনের মধ্যে বালু ফেলব।’ এলজিইডি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি সড়ক সম্পর্কে অবগত, এরই মধ্যে ঠিকাদারকে তাগাদা দিয়েছেন কাজ শেষ করার জন্য।
টেকনাফে ৬৭ কোটি টাকার কাজে ধস, ঠিকাদার পলাতক : টেকনাফ প্রতিনিধি জাকারিয়া আলফাজ জানান, কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপে সওজ অধিদপ্তরের অধীনে ৬৭ কোটি টাকায় সড়ক সংস্কার করা হয়েছিল। দুই বছর না পেরোতেই তার প্যালাসাইডিং ব্লক ধসে পড়েছে। তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। ব্লকের নিচের মাটি সরে যাওয়ায় এসব ব্লক ধসে পড়ে। ব্লক ধসে যে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে তার আশপাশে বিস্তৃত অংশ অচিরেই ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কাজ করার পর নিয়ম অনুসারে তদারকি করছেন না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার বিশ্বাস কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শাহপরীর দ্বীপ সড়কের একটি অংশে ব্লক ধসে পড়েছে। আমরা খুব শিগগির সেখানে যাব, দেখে বলা যাবে আসলে কী কারণে এত কম সময়ে ব্লক ধসে পড়ল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের অনিয়ম থাকলে সেটা আমরা ধরব। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমে সাগরের ঢেউয়ে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে লোকালয়ে। টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়কের হারিয়াখালী থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। এর ফলে প্রায় চার কিলোমিটার সড়কের ভাঙা অংশ হেঁটে ও নৌকায় যাতায়ত করতে হতো স্থানীয় লোকজনকে। এক দশক সীমাহীন ভোগান্তির পর এ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল।’
২০১৮ সালে একনেক সভায় ৫.১৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে ৬৭.৭৮ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। কাজ পায় মেসার্স জেকে এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানের মালিক আবদুল জব্বার চৌধুরী এখন আত্মগোপনে আছেন বলে জানা গেছে। ২০২০ সালে সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। কাজ যেনতেনভাবে শেষ করা হয় ২০২২ সালের শেষ দিকে। সংস্কার করা সড়কটির দুই পাশে খাল ও বিল থাকায় নকশা মোতাবেক সড়কের উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সুরক্ষার জন্য দুই পাশে প্যালাসাইডিং ব্লক স্থাপন করা হয়। কিন্তু সুরক্ষার এ প্যালাসাইডিং ব্লক ধসে পড়ায় সড়কটির টিকে থাকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।