
হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)-এর কথিত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ড. হামিদা হোসেন গং কর্তৃক একটি জাতীয় দৈনিকে ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে দেওয়া বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ।
তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দেশের রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে সেই সরকারের সুবিধাভোগী একটি মহল। এই মহল বিভিন্ন অনৈতিক দাবি তুলে বর্তমান সরকারকে অকার্যকর করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা ‘রাষ্ট্র সংস্কার’-এর নামে ইসলাম ও দেশের মূল ধর্মীয় মূল্যবোধবিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, যা দেশের তাওহিদি জনতা কখনোই বরদাশত করবে না।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী ও মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্কানী এক বিবৃতিতে বলেন, ইসলাম নারী অধিকার ও মানবাধিকারের বিরুদ্ধে নয়। তবে ‘নারী সংস্কার কমিশন’ যে সব সুপারিশ উত্থাপন করেছে, তার অনেক কিছুই কোরআন-সুন্নাহ ও সংবিধানবিরোধী। এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হলে দেশজুড়ে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে উঠবে। তারা বলেন, ‘নারী স্বাধীনতা’ ও ‘সমান অধিকারের’ নামে যদি যিনা-ব্যভিচারকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হয়, তবে তা দেশের ৯২ শতাংশ মুসলমান কখনো মেনে নেবে না।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি
নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালাকে ‘ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক’ আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই কমিশন বাতিলের জন্য শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক আন্দোলনকে যারা ‘অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক’ বলছেন, তারা আসলে পশ্চিমা আধিপত্যবাদী শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী। বিবৃতিতে বলা হয়, হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ নামক সংগঠনের মাধ্যমে ইসলামবিরোধী বক্তব্য দিয়ে এই গোষ্ঠী তৌহিদি জনতার ধৈর্য পরীক্ষা করছে।
পার্টির আমীর আল্লামা সরোয়ার কামাল আজিজী ও মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার বলেন, সংস্কারের নামে বেহায়াপনা ও অবক্ষয়ের দিকে দেশকে ঠেলে দেওয়া যাবে না। ওলামায়ে কেরামের ন্যায্য আন্দোলন ও যৌক্তিক দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে বিতর্কিত কমিশন ও তাদের সুপারিশ বাতিল করতে হবে। যারা আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ জনতার আন্দোলনকে কটাক্ষ করেছেন, তাদের উপযুক্ত জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (আরেকটি বিবৃতি)
পার্টির মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম বলেন, সুলতানা কামালসহ কিছু নারীবাদী নেত্রী দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টের ষড়যন্ত্র করছে। আল্লাহ যেখানে নারী-পুরুষকে স্বতন্ত্রভাবে সৃষ্টি করেছেন, সেখানে নারীবাদীরা সমানাধিকারের নামে ধর্মবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। তাদের এজেন্ডা দেশের উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে সরাসরি চ্যালেঞ্জ। নারী সংস্কার কমিশন ও এর সুপারিশ বাতিল করে ইসলামবিরোধী নারীবাদী গোষ্ঠীকে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।
ইসলামিক মুভমেন্ট বাংলাদেশ
দলটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খায়রুল আহসান বলেন, নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দেশের জনগণ ও ওলামায়ে কেরাম কখনো মেনে নেবে না। বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নে লিপ্ত এই নেত্রীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তা না হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠবে এবং নারীবাদী নেত্রীরা তসলিমা নাসরিনের পরিণতির দিকে ধাবিত হবেন।