
বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে সাড়ে ৩৯ কোটি ইউরো দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি)। এর মধ্যে ঋণ হিসেবে ৩৫ কোটি ইউরো এবং অবশিষ্ট সাড়ে ৪ কোটি ইউরো অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির আওতাধীন গৃহীত এসব প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে- পরিবেশ রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি হ্রাস এবং অভিযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করা।
মিলানে চলমান এশীয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর ৫৮তম বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে রোববার (৪ মে) ইআইবি’র সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের এক উচ্চপর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি ফ্রেমওয়ার্ক ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, রোববার (৪ মে) মিলানে ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (ইআইবি) সভাপতি নাদিয়া কালভিনোর সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বৈঠকে ইআইবি’র চলমান সহায়তা সম্প্রসারণ এবং নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অবকাঠামোতে অধিক বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন, যাতে এলডিসি উত্তরণ এবং মধ্যম আয়ের ফাঁদ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা যায়। একই সঙ্গে ইইউ ও এর প্রতিষ্ঠানসমূহকে কৌশলগত খাতে আরও অনুদানভিত্তিক (ওডিএ) বা সুদ-সুবিধাযুক্ত ঋণ সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২০০০ সাল থেকে ইআইবি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি কাঠামো চুক্তির অধীনে কাজ করে আসছে। এ পর্যন্ত সংস্থাটি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, পানি সরবরাহ, পরিবহন এবং যোগাযোগ খাতে মোট চলমান ৬টি প্রকল্পে প্রায় ৬৩ কোটি ৫০ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, এছাড়া একইদিন জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি)-এর প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন অর্থ উপদেষ্টা। প্রকল্পে অর্থায়ন, কৌশলগত অংশীদারিত্ব ও বিনিয়োগ সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নে জেবিআইসি দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। সংস্থার উল্লেখযোগ্য অর্থায়নের মধ্যে রয়েছে- ডিএপি-২ সার কারখানা (৭১ কোটি ৫৬ লাখ ডলার, সম্পূর্ণ পরিশোধিত), ঘোড়াশাল সার কারখানার যন্ত্রপাতি (মিতসুবিশি সরবরাহকৃত), এবং মেঘনাঘাট বিদ্যুৎ প্রকল্প (২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার, এডিবি’র সঙ্গে যৌথ অর্থায়ন)।
অন্যান্যের মধ্যে এডিবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট (দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া) ইংমিং ইয়াং, ওপেক ফান্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দ্য এগ্রিকালচার ইনোভেশন মেকানিজম ফর স্কেল (এআইএম ফর স্কেল) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর মাইকেল ক্রিমার এর সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। অনুষ্ঠিত এসব বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৫৮তম বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক আর্থিক অংশীদারদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে উন্নয়ন সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করছে বাংলাদেশ। এসব বৈঠক বাংলাদেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করতে বৈশ্বিক আর্থিক অংশীদারদের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক আরও গভীর করবে বলে আশা করছে সরকার।
সারাবাংলা