Image description

কুড়িগ্রাম রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মন্ডলের বিরুদ্ধে ঘুস নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা নেওয়ার সময় গোপনে ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে আলোচনা চলছে স্থানীয়দের মধ্যে।

দুই মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে ভুক্তভোগী ও কর্মকর্তার কথোপকথন এবং ১১ হাজার টাকা গুণে নেওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বন্দবেড় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মন্ডল পরিষদের একটি কক্ষে বিছানার ওপরে বসে সিগারেট খাচ্ছেন। এ সময় হাস্যোজ্জল অবস্থায় এক ব্যক্তির কাছ জমির কাগজপত্র দেখেন তিনি। কথোপকথনের একপর্যায়ে তাকে ৫০০ টাকার নোট গুণে মোট ১১ হাজার টাকা দেন ওই ব্যক্তি। টাকা গুণে নেওয়ার সময় আব্দুস ছালাম বলেন, ‘বেশি করে দেন। বড় স্যারের কাছে গেছেন যহন। কাল না কইলেন ১৫ দিমু।’ জবাবে টাকা দেওয়া ব্যক্তি বলেন, ‘না, আপনি শুনতে ভুল করেছেন।’

ভাইরাল হওয়া ভিডিওর সূত্র ধরে যাওয়া হয় বন্দবেড় ইউনিয়নের চর বন্দবেড় গ্রামের আব্দুল্লাহেল কাফীর কাছে।  ঘুসের টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। বলেন, ‘আমার তিন একর সাড়ে চার শতক জমির খাজনা দিতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাই। সেখানে ভূমি কর্মকর্তা আমার কাছে সরকারি হিসেব অনুযায়ী, এক লাখ ১২ হাজার টাকা খাজনার হিসাব দেন। এ সময় আমি বলি ২০২৪ সাল পর্যন্ত খাজনা দেওয়া আছে। এতো টাকা কীভাবে হয়? পরে আব্দুস ছালাম আমাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে এক লাখ টাকায় নিষ্পত্তি করে দিতে চান। পরে দরকষাকষি করে ৭১ হাজারে রফাদফা হয়। গত মাসে আমি তাকে ৬০ হাজার টাকা দেয়। গত সপ্তাহে বাকি ১১ হাজার টাকা তার খাস কামরায় দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কে বা কারা ভিডিও করেছে আমি জানি না। ভূমি কর্মকর্তার কাছে যখন খাজনার দাখিলা নেয় তখন দেখতে পাই ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মাত্র এক হাজার ৫০৫ টাকা পরিশোধ দেখিয়েছেন তিনি।’

অভিযোগের বিষয়ে বন্দবেড় ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম মন্ডল বলেন, ‘আব্দুল্লাহেল কাফীর সঙ্গে আমার নানা-নাতির সম্পর্ক। তার সঙ্গে আমার আর্থিক লেনদেন হয়। গত বছর সে আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছিল। দুই কিস্তিতে ১০ হাজার করে সেই টাকা আমাকে পরিশোধ করেছে।’ ভিডিওতে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করলেও কি জন্য নিয়েছেন তা মনে নেই বলে জানান। তবে তিনি খাজনার ৭১ হাজার টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।

 

এ বিষয়ে মন্তব্য নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জল কুমার হালদারকে একাধিবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। রৌমারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেল দিও বলেন, ‘ভুক্তভোগী আমার কাছে কিংবা ইউএনওর কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। তবে ভিডিওর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’