Image description
 

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নিয়ে যাওয়া কথা বলে সিমেন্ট-বালু ভর্তি একটি ট্রলারসহ তিন মাঝিমাল্লার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টেকনাফ থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রলারটি দ্বীপে পৌঁছেনি। অভিযোগ উঠেছে, বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সেন্টমার্টিনের আশিকুর রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য আক্তার কামাল, নুরুল ইসলাম আবদুল মুনাফসহ একটি চোরাকারবারী চক্র মিলে সরকারি কাজের কথা বলে মিয়ানমারে সিমেন্ট পাচার করেছে।

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘সেন্টমার্টিন পর্যটন তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্র’ সংস্কারের জন্য বিএমসিএফের সদস্য আশিকুর রহমানকে ২০ বস্তা সিমেন্টসহ কিছু মালামালের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই অনুমতি পত্রকে ভুয়া বানিয়ে ৪০০ বস্তা সিমেন্ট মিয়ানমারে পাচারের খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 
 

উপজেলা প্রশাসন জানায়, ‘সেন্টমার্টিন পর্যটন তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্র’ সংস্কারে টিআর প্রকল্পে অধীনে বিএমসিএম সদস্য আশিকুর রহমানের নামে সোমবার টেকনাফ থেকে ৯ বান্ডিল টিন, ৭০ ফুট কাঠ, ৩০ কার্টুন টাইলস, ৩০০ ফুট বালি ও ২০ ব্যাগ সিমেন্ট সেন্টমার্টিন নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু অনুমতি পত্র ভুয়া বানিয়ে ২০ ব্যাগ সিমেন্টের মধ্য ৪০০ ব্যাগ সিমেন্ট উল্লেখ করে যা প্রতারণা।  

 

অভিযোগের বিষয়ে সেন্টমার্টিন বিচ কর্মী আশিকুর রহমান বলেন, ‘দ্বীপে সরকারি কাজে সংস্কার করতে সিমেন্ট যেতে আমার নামে অনুমতি পত্রটি দ্বীপের ইউপি সদস্য মাহাফুজা আক্তার রিসিভ করেন। পরে শুনেছি এ অনুমতি পত্র নিয়ে মিয়ানমারে সিমেন্ট পাচার করা হয়েছে। বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ঘটনায় আমি জড়িত না। একটি চক্র ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার টেকনাফ পৌরসভা খায়ুককালী বিজিবির ক্যাম্পের পাশে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি পত্র দেখিয়ে মো. সরোয়ারসহ তিনজন মাঝিমাল্লা সেন্টমার্টিনের জন্য ৪০০ বস্তা সিমেন্ট, ৯ বান্ডিল টিনসহ বেশ কিছু মালামাল ট্রলারে তোলে। এসব মালামালের দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় যুবক কেফায়েত উল্লাহ। কেফায়েত সেন্টমার্টিনে চোরকারবারী আক্তার কামালের প্রতিনিধি।

কেফায়েত উল্লাহ বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের সাবেক ইউপি সদস্য আক্তার কামাল আমাকে একটি অনুমতি পত্র দিয়েছে। সেটি স্থানীয় বিজিবির অনুমতি পাওয়ার পর ট্রলারে ৪০০ ব্যাগ সিমেন্ট তুলি। পরদিন জানতে পারি, সিমেন্টগুলো মিয়ানমারে পাচার করা হয়েছে। বিষয়টি খুব দুঃখজনক।’

এ ব্যাপারে টেকনাফ পৌরসভা খায়ুককালী ঘাটের মাঝি আবদুল আলীম ওরফে আলম বলেন, ‘আক্তার কামালের নামে একটি অনুমতি দেখিয়ে ৪০০ ব্যাগ সিমেন্ট আর ৯ বান্ডিল টিন নিয়ে একটি ট্রলার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। পরে জানতে পারি ট্রলারটি ভুয়া কাগজ দেখিয়ে মিয়ানমারে সিমেন্ট পাচার করেছে। একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার চোরাচালান চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের আইনের আওতায় আনলে এটি বন্ধ হবে।’

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে বোট মালিক সমিটির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, ‘টেকনাফে থেকে সিমেন্ট, বালি-টিনসহ একটি বোট সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা করলে সেটি এখনও দ্বীপে পৌঁছেনি। ট্রলারটি দ্বীপে আসার মাঝপথে মিয়ানমারে ঢুকে গেছে বলে জেনেছি।’