Image description
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কার্যক্রম সচল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। নিরবচ্ছিন্ন জনসেবা দিতে অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থার দপ্তরে অস্থায়ী অফিস কার্যক্রম চালু করবে মন্ত্রণালয়গুলো। আগামী রবিবার থেকেই সেবা পাবে প্রত্যাশীরা।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ গুলিস্তানের জিপিওতে অফিস করবে। শ্রম মন্ত্রণালয় কাকরাইলের শ্রম ভবনে এবং সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে কার্যক্রম শুরু করবে। একইভাবে সেতু বিভাগ মহাখালী সেতু ভবনে যাবে, এবং যুব মন্ত্রণালয় জাতীয় ক্রীড়া ভবনে তাদের অফিস পরিচালনা করবে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম তারিকুল আলম জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের কার্যক্রম ঢাকার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনে পরিচালনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এর বাইরে রেল ভবন এবং প্রবাসী কল্যাণ ভবনে অফিস করা যায় কি না সেটি নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে রেল ভবনে মাত্র চারটি কক্ষ পাওয়া যাচ্ছে, যা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনে যে জায়গা আছে, তা দিয়ে কার্যক্রম চালানো সম্ভব হতে পারে। উপদেষ্টা চান স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ একই জায়গায় অফিস করুক। রবিবার থেকেই কয়েকটি চেয়ার-টেবিল নিয়ে হলেও কার্যক্রম শুরু করা হবে। জনগণের সেবা যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) জানে আলম জানান, অস্থায়ীভাবে মেইলিং অপারেটর এবং কুরিয়ার সার্ভিস লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের অফিসে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এটি ঢাকার গুলিস্তানের জিপিওতে অবস্থিত। বিভাগের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আপাতত তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে অফিস করবেন।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বলেন, রবিবার সকাল ৯টায় কাকরাইলের শ্রম ভবনের সম্মেলন কক্ষে কার্যক্রম শুরু করা হবে। সেখানে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে অস্থায়ীভাবে কোথায় অফিস স্থাপন করা হবে। বর্তমানে শ্রম ভবনেই শ্রম মন্ত্রণালয়ের সব দপ্তর স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. গোলাম মো. ফারুক বলেন, রবিবার থেকে আমরা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে কার্যক্রম শুরু করব। আগে থেকেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা এবং সচিবদের অফিস রয়েছে। ফলে আমাদের জন্য নতুন করে অফিস সাজানোর প্রয়োজন নেই। তবে

 

এদিকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোথায় অফিস করবেন, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আছির উদ্দীন সরদার বলেন, শনিবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কেউ কেউ বলছেন তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে অথবা মহাখালীর সেতু ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে এক ভয়াবহ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয়। আগুনে পুড়ে গেছে ৫টি মন্ত্রণালয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের টানা ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে ৭ নম্বর ভবনে লাগা ওই আগুন। ভবনটিতে অবস্থিত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু; ডাক ও টেলিযোগাযোগ; যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র, কম্পিউটার ও আসবাব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।