Image description
সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা » আরএসটিপির খসড়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে অ্যাডভাইজরি কমিটির সভা আজ । মেট্রোরেলের ৬ টি লাইন নিয়ে নতুন প্রস্তাব থাকছে আরএসটিপিতে । নতুন মেট্রো লাইন না করারও প্রস্তাব আসতে পারে আরএসটিপিতে ।
সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা ( আরএসটিপি ) ২০২৫ - এর কাজ চলছে । মেট্রোর ৬ টি লাইন নিয়ে নতুন প্রস্তাব থাকছে আরএসটিপিতে । নতুন এলাকা যুক্ত করতে সব মেট্রো লাইনের এক্সটেনশনের পরিকল্পনা করা হয়েছে । তবে নতুন মেট্রো লাইন না করারও প্রস্তাব আসতে পারে আরএসটিপিতে ।
 
জানতে চাইলে সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা ( আরএসটিপি ) প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ রবিউল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন , ' মেট্রোরেলের সবগুলো লাইনেরই অলটারনেটিভ চিন্তা করছি । এমআরটি লাইন - ৫ - এর নর্থ ও সাউথ যেগুলো হচ্ছে , সেগুলোর এক্সটেনশন ( সম্প্রসারণ ) হতে পারে । যেগুলো এখনো হয় নাই , সেগুলোর মডিফিকেশন ( পরিবর্ধন ) হবে । মেট্রোতে নতুন এলাকা যুক্ত করার জন্য রুট বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে । এমআরটি লাইন -২ এবং লাইন -৪ এখনো হয়নি । সেগুলো নতুন এবং ভালো কোনো অ্যালাইনমেন্টে করা যায় কি না , যাতে বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে । 
 
এসব পরিকল্পনা সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় ( আরএসটিপি ) থাকবে ।' ‘মিড টার্ম রিভিউ অব দ্য রিভাইজড স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান ( এমটিআর - আরএসটিপি ) ফর ঢাকা ’ শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্প চলছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ডিটিসিএতে । এই প্রকল্পের অধীনে মেট্রোরেল পর্যালোচনা ও হালনাগাদ করা হচ্ছে । বর্তমানে আরএসটিপির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে । এই প্রতিবেদন- সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে , এমআরটি লাইন -৬ উত্তরা থেকে মতিঝিল কাজ অনেক আগেই শেষ । বর্তমানে ট্রেন চলছে । এটি কমলাপুর পর্যন্ত বাড়ানোর কাজ চলমান আছে । 
 
তবে নতুন করে উত্তরা থেকে টঙ্গী এবং টঙ্গীর পরে গাজীপুর পর্যন্ত লাইন- ৬ - এর রুট বাড়ানোর প্রস্তাব করা হতে পারে আরএসটিপিতে । এমআরটি লাইন -৫ নর্দান রুট হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত । ২০২৩ সালে ৪ নভেম্বর এর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে । এদিকে আরএসটিপিতে এমআরটি লাইন -৫ নর্দান রুট হেমায়েতপুর থেকে এক্সটেনশন করে নবীনগর বা বাইপাইল পর্যন্ত এবং ভাটারা থেকে জলসিঁড়ি বা ভুলতা পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব থাকতে পারে ।

এমআরটি লাইন -৫ সাউদার্ন রুট গাবতলী থেকে আফতাবনগর পশ্চিম পর্যন্ত ১৩.১০ কিলোমিটার পাতাল এবং আফতাবনগর সেন্টার থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত ৪.১০ কিলোমিটার উড়াল মোট ১৭.২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৫ টি স্টেশন ( পাতাল ১১ টি এবং উড়াল ৪ টি ) বিশিষ্ট মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং নকশা সম্পন্ন হয়েছে । বিনিয়োগ প্রকল্পের ডিপিপি ( খসড়া ) অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়াধীন । বর্তমানে প্রকল্পের ক্রয় নথি প্রস্তুতির কাজ চলছে ।

এদিকে আরএসটিপিতে এমআরটি লাইন -৫ সাউদান রুটের কোনো পরিবর্তন নাও হতে পারে । তবে এটার ফেজিং এবং প্রায়োরিটি কী হবে , সেটা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিষয় । নারায়ণগঞ্জ জেলার মদনপুর পর্যন্ত উড়াল ও পাতাল সমন্বয়ে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন -৪ নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করার জন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ২০২৪ সালের ১৪ মে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে । বর্তমানে তার সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ চলছে । তবে আরএসটিপিতে লাইন - ৪- এর বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়নি ।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের ইলেকট্রিক ট্রাকশনের সমীক্ষা প্রকল্প চলছে । এই রুটে ইলেকট্রিক ট্র্যাকশন হলে এত টাকা খরচ করে আবার এমআরটি লাইনের প্রয়োজন আছে কি না , সেটা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে । গাবতলী থেকে মোহাম্মদপুর - নিউমার্কেট - গুলিস্তান - কমলাপুর - সাইনবোর্ড হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সদর পর্যন্ত সম্ভাব্য মেইন লাইন এবং গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ব্রাঞ্চ লাইন সমন্বয়ে উড়াল ও পাতাল মিলিয়ে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন -২ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করতে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা খোঁজা হচ্ছে । এদিকে আরএসটিপিতে এমআরটি লাইন - ২ - এর অলটারনেটিভ ( বিকল্প ) অ্যালাইনমেন্ট করা হয়েছে । তাতে এই লাইনটি পুরান ঢাকার দিকে যাবে অর্থাৎ বংশাল , লালবাগ ও বাবুবাজার ব্রিজ এলাকা দিয়ে যেন যায় , সেই প্রস্তাব রাখা হতে পারে আরএসটিপিতে ।

এমআরটি লাইন -১ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৯.৮৭২ কিলোমিটার পাতাল লাইন এবং নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ ডিপো পর্যন্ত ১১.৩৬৯কিলোমিটার উড়াল লাইন । এই লাইনের নির্মাণকাজ ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে । আরএসটিপিতে এমআরটি লাইন- ১ - এর রুট বাড়িয়ে গাজীপুর পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হতে পারে । তবে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত বিআরটি করিডর যদি কোনো কারণে না হয় বা বাদ যায় , তাহলে এমআরটি লাইন -১ বা লাইন -৬ দুটোরই গাজীপুর পর্যন্ত এক্সটেনশনের সুযোগ আছে । এদিকে আরএসটিপি-২০২৫ -এর খসড়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে আজ ২৯ এপ্রিল টাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ডিটিসিএতে অ্যাডভাইজরি কমিটির সভা হবে । সেখানে এই বিষয়সহ আরএসটিপির সব বিষয় তোলা হবে ।

আরএসটিপি অ্যাডভাইজরি কমিটিতে অনুমোদিত হলে এটি যাবে মন্ত্রণালয়ে । সেখান থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অ্যাডভাইজরি কেবিনেটে তোলা হবে । প্রথম এসটিপি ২০০৫ সালে হয় । তখন এটাকে বলা হতো স্ট্র্যাটেজি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান ( এসটিপি ) । ২০১৫ সালে এসে এসটিপি রিভাইজ করা হয় । ২০২৫ সালে এসটিপি আবার রিভাইজ করা হচ্ছে । এটাকে বলা হচ্ছে আরএসটিপি ২০২৫। আরএসটিপির এই সমীক্ষা প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের জুনে ।