
পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় আগাসাদেক রোডে অবস্থিত আই.ই.টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে প্রায় অনুষ্ঠিত হয় বিয়ে ও সামাজিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান না করতে বেশ কয়েকবার পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা থামানো যায়নি।
দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক শাহনাজ আক্তার বলেন, ‘স্কুলে অনুষ্ঠান না করতে স্থানীয় ও উর্ধ্বতনকে জানিয়েছি। স্থানীয়দের বলেও কোন কাজ হয় না। যে যখন ক্ষমতায় থাকে, তাদের নেতারাই এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।’
প্রধান শিক্ষক শাহনাজ আক্তার আরও বলেন, ‘বর্তমানে আব্দুর রহমান নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। আগে যারা ছিল তারাও একইভাবে এ কাজ করত। সরকারি স্কুলের প্রধান হয়েও আমার কথা তারা শুনে না। স্কুলে হওয়া এসব অনুষ্ঠানের বিষয়ে আমি বলতে পারব না। কিভাবে কত টাকা লেনদেন হয় তা আমি জানি না।’
রাজধানীর কতোয়ালী থানাধীন এই প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহের বন্ধের দিন বা স্কুল ছুটির দিনে নিচতলায় বিয়ের ও সামাজিক অনুষ্ঠান করে থাকে। এসব অনুষ্ঠান থেকে স্থানীয় নেতারা টাকা খেয়ে স্কুলের নিচের ফ্লোর ভাড়া দিয়ে থাকে। কত টাকা ভাড়া দেওয়া হয় তা বলতে নারাজ তারা। এতে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হয় বলে জানান তারা।
তারা আরও জানান, স্কুলটি করা হয়েছে সরু এক গলির ভেতরে। এতে স্কুলে যেতে চায় না ছেলে-মেয়েরা। সরু গলিতে স্কুল থাকায় বিশেষ করে মেয়ে বাচ্চারা বেশি ভয় পায়। সরু গলির ভেতরে স্কুলটি হওয়ায় শির্ক্ষার্থীর সংখ্যাও কম। কারণ যেখানে স্কুলটি রয়েছে, সেখানে কোন পরিবেশে নেই। এত সরু গলিতে স্কুল থাকায় বাচ্চারা যেতে চায় না। এ ছাড়াও স্কুলের প্রতি বছরই শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। চলতি বছর প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। ২০২৪ সালে বেশি ভর্তি হয়। সব মিলিয়ে স্কুলটি ২০১ জন শিক্ষার্থী আছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
গত ২৪ এপ্রিল সরেজমিনে গিয়ে স্কুলটি বন্ধ পাওয়া যায় এবং গেটে তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া স্কুলে যেতে হলে মেইন রোড থেকে সরু গলি দিয়ে ৪-৫ মিনিট হাঁটতে হয়। এমনকি দেখে বুঝার উপায় নেই এটি যে একটি স্কুল। মেইন রোডে একটি সাইনবোর্ড টানানো থাকলেও স্কুলের গেটে নেই কোন নেমপ্লেট। তাই জিজ্ঞেস করেই স্কুলে যেতে হয় যে কাউকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, ‘স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। একটা স্কুলে বিয়ের অনুষ্ঠান মেনে নেওয়া যায় না। এসব অনুষ্ঠান থেকে নেতারা টাকা নেয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুহাম্মদ রায়হানুল হারুন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঢাকার কোতয়ালি থানার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার উম্মে তানিয়া তাহমিনাকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।