Image description

নামে বিমানবন্দর হলেও ভিতরের সবুজ ঘাস আর গরুর আনাগোনা দেখে মনে হতে পারে এটা কোনো ডেইরি ফার্ম। এ ছাড়া রানওয়ে দেখলেই চোখে ভেসে উঠবে গ্রামের কোনো ভাঙা সড়কের দৃশ্য। যদিও একটি সাইনবোর্ড দেখে মানতে বাধ্য যে এটা কুমিল্লা বিমানবন্দর।

এ বিমানবন্দরে বিমান ওঠা-নামা বন্ধ রয়েছে প্রায় ৪৯ বছর। তবে সচল রয়েছে এর সিগন্যালিংয়ের কাজ। প্রতি মাসে সেখান থেকে আয় হচ্ছে ৩০-৪০ লাখ টাকা। রানওয়ে কার্পেটিং, ফায়ার সার্ভিস চালু ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারের জনবল নিয়োগ দিলে বিমানবন্দরটি সম্পূর্ণরূপে সচল হতে পারে। আর এই দাবি ব্যবসায়ী ও সচেতন সমাজসহ সবার। জেলা কর্মসংস্থান কার্যালয়ের তথ্যমতে, ১৫ লাখের বেশি বৈধ প্রবাসী কুমিল্লার। বিমানবন্দরের পাশে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ইপিজেড। রয়েছে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করা বিসিক। বিমানবন্দর চালু থাকলে সহজেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যাতায়াত করতে পারবেন। এতে খুলবে সমৃদ্ধির দ্বার। সবমিলিয়ে দ্রুত লাভের মুখ দেখবে বিমানবন্দরটি।

জানা গেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪০ সালে জেলার নেউরা-ঢুলিপাড়ার পাশে স্থাপিত হয় বিমানবন্দরটি। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে সেনাবাহিনী এ বিমানবন্দর ব্যবহার করত। সে বছর বিমানবন্দরটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হলেও ১৯৭৬ সালেই বন্ধ হয়ে যায় বিমান ওঠা-নামা। বিমানবন্দরের ২১০ একর জমি ছিল। ১৯৯৯ সালে এ জমিতেই ১০৩ একর নিয়ে গড়ে ওঠে ইপিজেড। বাকি ৭৭ একরের একটি অংশে এখন একটি সংস্থার গরুর খামার গড়ে তুলেছে। রানওয়ে আগে গাড়ি প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার হলেও এখন ভেঙে পড়ে আছে। বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, মাত্র ৩০ কোটি টাকার সংস্কারে বিমানবন্দরটি সচল হতে পারে। এটি এখন আন্তর্জাতিক রুটের সিগন্যালিংয়ের কাজ করে। প্রতিদিনই ২৫-৩০টি বিমান এই সিগন্যাল ব্যবহার করে। বেশি চলাচল করে ভারতের অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান। এ ছাড়া ব্যাংকক, সিঙ্গাপুরের বিমানও রয়েছে। বর্তমানে দুই কর্মকর্তাসহ ২২ জন লোকবল রয়েছে এ বিমানবন্দরে। কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি জামাল আহমেদ বলেন, বিমানবন্দর চালু হলে কুমিল্লা ইপিজেডে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী আসবে। কর্মসংস্থান হবে বিপুলসংখ্যক মানুষের। বিসিকের খন্দকার ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফিরোজ খন্দকার বলেন, আমাদের বিভিন্ন পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। বিমানবন্দর চালু থাকলে আমাদের জন্য ভালো হতো। কুমিল্লা বিমানবন্দরের সিএনএস প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, অল্প খরচ করলে এ বন্দরে বিমান ওঠা-নামার কাজ শুরু করা যাবে। বন্দরটি চালুর বিষয়ে সরকার আন্তরিক হলে তা আলোর মুখ দেখতে বেশি সময় লাগবে না।