
মুগদা বিশ্বরোড থেকে মান্ডা বটতলা সড়কটি প্রশস্ত করার জন্য ২০২৩ সালে উদ্যোগ নেয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এলাকাবাসীর আপত্তির মুখেও রাতারাতি বুলডোজার দিয়ে সড়কের পাশের সব বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ৬০ ফুট প্রশস্ত করার জন্য সড়কটি লন্ডভন্ড করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ মাসের বেশি সময় সড়কটি এলাকার মানুষের কষ্টের সাক্ষী হয়ে আছে। খানাখন্দ এতই গভীর যে, বৃষ্টির পানি জমলে বোঝার উপায় থাকে না এটি পুকুর না সড়ক। এলাকার মানুষের এই দুর্ভোগ কতদিন থাকবে কিংবা কবে এই সড়ক ঠিক হবে তাও কেউ বলতে পারছেন না। এ ছাড়া গেন্ডারিয়া রেলস্টেশন, মীরহাজিরবাগের সড়কসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটির বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের রাস্তার দশা করুণ। বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকা দক্ষিণ সিটির এসব সড়কের কাজের মান এবং গতি নিয়ে সবার অসন্তোষ থাকলেও কারও যেন কিছুই আসে যায় না। সড়কে ইট, খোয়া বেরিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে গর্তগুলো ভরে যাওয়ায় খানাখন্দে ভরা ভাঙা গর্তের সড়কে চলাচলে নাকাল হচ্ছেন নগরবাসী। ঘটছে দুর্ঘটনা। ঝুঁকি নিয়ে রিকশা, অটোরিকশা এবং ভাড়ায় চালিত মোটরবাইকে চলাচল করতে গিয়ে পথচারী ও যাত্রীদের সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়, কখন দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তারা। শুধু ভাঙাচোরা সড়কই নয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি এলাকায় বাড়ছে উন্মুক্ত স্থানে ময়লা ফেলার প্রবণতা। অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি তো রয়েছেই। একই সঙ্গে জন্ম ও মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদসহ সব ধরনের সেবা কার্যক্রম পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা : রাজধানীতে বাড়ছে খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। হাটবাজার, সড়কের পাশে, অলিগলি থেকে শুরু করে আনাচে-কানাচে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। কোথাও কোথাও ময়লা পচে দুর্গন্ধ তৈরি হয়। এর মধ্যে কাকরাইল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামনের সড়কে ফেলানো হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ময়লা ফেলানোর ফলে রাস্তার এক লেন দখলে চলে যায় বর্জ্যরে। শুধু কাকরাইলে নয়, দয়াগঞ্জ, ইংলিশ রোড, পুরান ঢাকাসহ ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার অনেক স্থানে।
মশায় অতিষ্ঠ মানুষ : মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী। বাসাবাড়ি, দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত সর্বত্রই মশার উপদ্রব। কয়েল জ্বালিয়ে, ওষুধ ছিটিয়ে, মশারি টাঙিয়ে মশার উপদ্রব থেকে নিস্তার পাওয়ার চেষ্টা করছেন নগরবাসীরা। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। দিনে বাচ্চাদের মশারি টাঙিয়ে ঘুম পাড়াতে হয়। যদিও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আসন্ন ডেঙ্গু মোকাবিলায় বিভিন্ন এলাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার ধানমন্ডি লেকসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিষ্কার কার্যক্রম করেছেন সংস্থাটি। এর আগে যাত্রাবাড়ী এলাকায়ও পরিচালানা করেছে। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, আসন্ন ডেঙ্গু মোকাবিলায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে প্রধান্য দিয়ে কাজ করছি। ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় আমাদের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তাপসের (সাবেক মেয়র) দেওয়া কিছু পরিচ্ছন্নতা কর্মী চলে গেছে। সেখানে কিছু সংকট তৈরি হয়েছে। তবে নতুন করে কিছু লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আশা করি সমস্যা থাকবে না।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর রাজস্ব আহরণে সংকট তৈরি হয়। মানুষ ট্যাক্স দিতে চায়নি। তবে এখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। অর্থনৈতিক সংকট থাকায় উন্নয়ন কাজ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই এই সংকট কেটে যাবে।