
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক এম শহীদুজ্জামান বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার সামরিক বাহিনীর ভূমিকা সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় করতে সংবিধানে ভয়ঙ্কর সংশোধনী এনেছিল।
এক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, "যখন সুপ্রিম কোর্ট ব্যর্থ হয়, যখন তাকে কিনে নেওয়া হয়, তখন জনগণের শেষ ভরসা থাকে সামরিক বাহিনী। কারণ, সামরিক বাহিনীই ফায়ার পাওয়ার নিয়ন্ত্রণ করে।"
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে এমন সংশোধনী আনা হয়েছিল যাতে দেশের পরিস্থিতি যতই অগণতান্ত্রিক হোক, সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের অধিকার না থাকে। এমনকি, সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করলে মৃত্যুদণ্ডের বিধানও সংযোজন করা হয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক শহীদুজ্জামান বলেন, "এই সংশোধনীগুলো কখনোই গ্রহণযোগ্য ছিল না। এর মাধ্যমে আমাদের সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিককালে যে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে, তা মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার নামে মূল প্রশ্নগুলো পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে।
"সংবিধানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সামরিক বাহিনীর জনগণের পক্ষে ইন্টারভিন করার অধিকার নিশ্চিত রাখা। অথচ সেই অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে," বলেন তিনি।
ভারতের বর্তমান শাসকদল বিজেপির ভূমিকাও সমালোচনা করেন অধ্যাপক শহীদুজ্জামান। তিনি বলেন, "বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার বাংলাদেশের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আওয়ামী লীগ সরকার তাদের এই সুযোগ করে দিয়েছে। আরেকটু সময় পেলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ডিভিশন হয়তো বাংলাদেশে ঢুকেই পড়ত।"
অধ্যাপক শহীদুজ্জামান মনে করেন, ভবিষ্যতে সংবিধানে সংশোধন এনে সামরিক বাহিনীর জনগণের পক্ষে হস্তক্ষেপের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, "যদি কোনো সরকার ফ্যাসিজমে পরিণত হয় এবং রাষ্ট্রকে বিক্রি করে দেয়, তখন জনগণের হয়ে সামরিক বাহিনীর ইন্টারভেনশনের অধিকার থাকতে হবে। এটা ফায়ার পাওয়ারের নৈতিক দায়িত্ব।"
তিনি বলেন, "আমরা যেন কখনও এমন সংবিধান না রাখি, যেখানে আমাদের সেনাবাহিনীকে অপমানজনকভাবে দুর্বল করে রাখা হয়। সামরিক বাহিনীর সম্মান এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি।"
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/4-WTCcb38kM?si=HBXdApLvJxD57t5s