Image description

ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ায় বন্দিশালায় আটকে ভয়াবহ নির্যাতনের পর মাদারীপুরের তিন যুবক নিখোঁজ রয়েছে বলে স্বজনদের অভিযোগ।

তারা হলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার মধ্য হাউসদী গ্রামের মারুফ হোসেন (২০), মহিউদ্দিন মোড়ল (২০) ও সোলায়মান আকন (২০)।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলার মধ্য হাউসদী এলাকার স্থানীয় দালাল বাবুল মাতুব্বর ও একই এলাকার হাওয়া বেগম যুবকদের লিবিয়া হয়ে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখান। তাদের প্রলোভনে একই এলাকার বাবুল ফকিরের ছেলে মারুফ হোসেন এবং তার ভাগনে মহিউদ্দিন মোড়ল ও একই এলাকার সোলায়মান আকন ছয় মাস আগে ইতালির উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন। প্রথম কিছুদিন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও গত দুই মাস ধরে কোনো যোগাযোগ নেই। লিবিয়ায় নেওয়ার পর তাদের অমানবিক নির্যাতন করা হয়। পরে তাদের পরিবার ভিটেমাটি বিক্রির পাশাপাশি চড়াসুদে টাকা এনে দালালদের হাতে তুলে দেন। এরপরও তারা বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে সেটি জানেন না স্বজনরা।

এ ঘটনায় স্থানীয় দালাল হাওয়া বেগম ও বাবুল মাতুব্বরের নামে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো একাধিক মামলা করেছেন। এরপরও তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। উল্টো দালালরা তাদের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

নিখোঁজ সোলায়মান আকনের মা সালমা আক্তার বলেন, ছেলেকে লিবিয়ায় আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এরপর দফায় দফায় মুক্তিপণের জন্য টাকা আদায় করে। কয়েক দফায় বিভিন্ন ব্যাংক হিসেবে পঁয়ত্রিশ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও আমার ছেলের সন্ধান পাইনি। উল্টো আমাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দিচ্ছেন স্থানীয় দালাল হাওয়া বেগম এবং বাবুল মাতুব্বর।

মারুফ হোসেনের বাবা ও অপর নিখোঁজ মহিউদ্দিন মোড়লে মামা বাবুল ফকির জানান, দালালরা আমাদের সহজে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখায়। এরপর লিবিয়াতে নিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করেন। আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ৬২ লাখ পঞ্চাশ হাজার নিয়েছে ওই দালাল চক্র।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত দালাল হাওয়া বেগম ও বাবুল মাতুব্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তাদের বাড়িতে গেলে পাওয়া যায়নি। বাবুল মাতুব্বর মাদারীপুর শহরের চরমুগরিয়া বন্দর শাখা সোনালী ব্যাংকে দীর্ঘদিন থেকে কর্মরত। তবে মামলা পরে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে অনুপস্থিত।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন বলেন, দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হুমকি দিয়ে থাকলে সেটাও গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হবে।